ঢাকা, ১৯ এপ্রিল শুক্রবার, ২০২৪ || ৬ বৈশাখ ১৪৩১
good-food
৭৮২

শর্তপূরণে ব্যর্থ হলেই বাতিল

২৭৩০ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্ত

লাইফ টিভি 24

প্রকাশিত: ১৯:০০ ২৩ অক্টোবর ২০১৯  

নতুন এমপিওভুক্ত ২ হাজার ৭৩০টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের তালিকা প্রকাশ করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। আজ বুধবার দুপুরে গণভবনে এ তালিকা প্রকাশ করেন তিনি।


 এ সময় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, এমপিও প্রতিষ্ঠানগুলোকে নীতিমালার শর্তপূরণ করতে হবে। শর্তপূরণে ব্যর্থ হলে এমপিওভুক্ত বাতিল করা হবে।

যে ২ হাজার ৭৩০টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্ত হয়েছে এর মধ্যে স্কুল ও কলেজের সংখ্যা ১ হাজার ৬৫১টি, মাদরাসা ৫৫৭টি এবং কারিগরি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ৫২২টি।

সম্পূর্ণ নতুন স্কুল-কলেজ এমপিওভুক্ত হচ্ছে ৬৮০টি এবং প্রতিষ্ঠানের নতুন স্তর এমপিওভুক্ত হচ্ছে এমন প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা ৯৭১টি।

নতুন এমপিওভুক্তির মধ্যে নিম্নমাধ্যমিক বিদ্যালয় ৪৩৯টি, মাধ্যমিক বিদ্যালয় ১৪৬টি, স্কুল অ্যান্ড কলেজ দুটি এবং কলেজ ৯৩টি। আর স্তর এমপিওভুক্ত হয়েছে এমন প্রতিষ্ঠানের মধ্যে মাধ্যমিক বিদ্যালয় ৮৪৯টি, স্কুল অ্যান্ড কলেজ ৬৬টি এবং কলেজ ৫৬টি।  

নতুন এমপিওভুক্ত দাখিল মাদরাসার সংখ্যা ৩৫৯টি, প্রতিষ্ঠানের নতুন স্তর এমপিওভুক্ত হচ্ছে এমন প্রতিষ্ঠানের মধ্যে আলিম ১২৭টি, ফাজিল ৪২টি ও কামিল ২৯টি। কারিগরির সব প্রতিষ্ঠানই নতুন এমপিওভুক্ত হচ্ছে। এর মধ্যে কৃষি ৬২টি, ভোকেশনাল স্বতন্ত্র ৪৮টি, ভোকেশনাল সংযুক্ত ১২৯টি, বিএম স্বতন্ত্র ১৭৫টি ও বিএম সংযুক্ত ১০৮টি।

দীর্ঘ ৯ বছর এমপিওভুক্তি বন্ধ ছিল। এজন্য শিক্ষকরা দীর্ঘদিন ধরে আন্দোলন করে আসছিলেন।

অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, “নীতিমালা করে সেটা যাচাই বাছাই করে তালিকাটা প্রণয়ন করা হয়েছে।… ২৭৩০টি প্রতিষ্ঠানকে আমরা এমপিভুক্ত করেছি।”

শিক্ষা মন্ত্রী দীপু মনি এবং শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেলও উপস্থিত ছিলেন এ অনুষ্ঠানে ।

সবশেষ ২০১০ সালে এক হাজার ৬২৪টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্ত করেছিল সরকার। এরপর দীর্ঘদিন এমপিওভুক্তি বন্ধ থাকায় আন্দোলন করে আসছিলেন শিক্ষক-কর্মচারীরা।

এমপিও বা মান্থলি পেমেন্ট অর্ডারের তালিকাভুক্ত বেসরকারি স্কুল-কলেজের শিক্ষক-কর্মচারীরা তাদের বেতনের একটি অংশ সরকার থেকে পান।

এ জন্য প্রথমে যোগ্যতার ভিত্তিতে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান তালিকাভুক্ত করা হয় এবং শর্ত পূরণের ভিত্তিতে সেই প্রতিষ্ঠানের যোগ্য শিক্ষকরা এমপিও তালিকায় আসেন।

গণভবনের অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী বলেন, যারা এমপিওভুক্তি চান, তাদের সে নির্দেশনাগুলো মানতে হবে। যাদেরকে এমপিওভুক্ত করলাম, তাদের কাছেও আহ্বান থাকবে- নীতিমালা অনুযায়ী সব নির্দেশনা পূরণ করতে পেরেছেন বলেই এমপিওভুক্ত হয়েছেন। এটা ধরে রাখতে হবে। কেউ তা ধরে রাখতে ব্যর্থ হলে এমপিও বাতিল হবে।

তিনি বলেন, “এমপিওভুক্ত হয়ে গেছে, বেতন তো পাবই, তাহলে আর ক্লাস নেওয়ার দরকার কী, পড়ানোর দরকার কী - এ চিন্তা করলে চলবে না।”

২০১৮-১৯ অর্থবছরের বাজেটে কয়েকটি শর্ত দিয়ে নতুন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্ত করতে আলাদা বরাদ্দ রাখা হবে বলে বাজেটের আগে জানিয়েছিলেন তৎকালীন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত।

কিন্তু বাজেটে এমপিও নিয়ে কোনো ঘোষণা না থাকায় আমরণ অনশনে বসেন নন-এমপিও বেসরকারি শিক্ষক-কর্মচারীরা। তাদের আন্দোলনের মধ্যে গতবছর ৪ জুলাই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এমপিওভুক্তির কার্যক্রম দ্রুত শুরুর কথা সংসদে জানান।

এরপর এ বছর জুন মাসে ২০১৯-২০ সালের বাজেট ঘোষণা করতে গিয়ে অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল জানান, দীর্ঘদিন পর এমপিওভুক্তির কার্যক্রম আবার শুরু হচ্ছে এবং নতুন বাজেটে সেজন্য বরাদ্দও রাখা হচ্ছে।

বুধবারের অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এমপিওভুক্ত যারা, তাদের টাকাটা ওই প্রতিষ্ঠান চলে যেত। তারপরও তাদের থেকে নালিশ আসতো তারা বেতন পান না। তখন আমরা ঠিক করি যার যার বেতন তার তার কাছে পৌঁছে দেব। এটা করে একটা সুবিধা হল, দেখা গেল ৬০ হাজার ভুয়া শিক্ষক ছিল। তাদের নামে আগে টাকা যেত।

কওমি মাদ্রাসার সনদের স্বীকৃতির ব্যবস্থা করার কথা মনে করিয়ে দিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, “প্রাতিষ্ঠানিক অনুমোদন তাদেরও প্রয়োজন ছিল, তাদেরকে অবহেলা করে কেবল দোষ দিলে চলবে না। শিক্ষাজীবন শেষে তারা কোথায় যাবে, কী কাজ করবে, কীভাবে চলবে? তারা তো এ দেশেরই সন্তান “

হাওর-বাওর, পাহাড় ও দুর্গম এলাকায় শিক্ষা বিস্তারের জন্য আবাসিক স্কুল করে দেওয়ার পরিকল্পনার কথাও প্রধানমন্ত্রী বলেন। 

কারিগরি শিক্ষার ওপর গুরুত্ব দিয়ে তিনি বলেন, “স্কুল পর্যায় থেকেই শিশুরা যেন কারিগরি শিক্ষা নিতে পারে। আমাদের ছোট ছোট বাচ্চাদের ভেতর অনেক মেধা লুকিয়ে থাকে, তারা অনেক কিছু তৈরি করতে পারে সেটা বিকাশের জন্য একটা সুযোগ আমাদের করে দেওয়া দরকার।“