ঢাকা, ২১ আগস্ট বৃহস্পতিবার, ২০২৫ || ৬ ভাদ্র ১৪৩২
good-food
৪৬০

রাস্তাঘাটে ছিনতাই এড়াতে যা যা করবেন

লাইফ টিভি 24

প্রকাশিত: ১৩:১৭ ৫ সেপ্টেম্বর ২০২২  

সম্প্রতি শাকিল আহম্মেদ নামে এক ব্যক্তিকে গ্রেফতার করেছে পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগ। তিনি ১৫০০টি ছিনতাই করেছেন। তার সঙ্গে আরও ৩ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।

 

অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ বলেন, এ ছিনতাইকারী চক্রের মূল টার্গেট ছিল নারীরা।ঢাকার মধ্যে এলাকাভিত্তিক হিসেবে ছিনতাই বেশি হয় বাড্ডা, ভাটারা, মিরপুর ও পল্লবী এলাকায়। শাহবাগ, মগবাজার, রমনা, মালিবাগ রেলগেট, চানখাঁরপুল, ঢাকা মেডিকেল কলেজ এলাকা, গুলিস্তান, ধানমন্ডি, জিগাতলা বাসস্ট্যান্ড, নিউমার্কেট, পান্থপথ মোড় ও সায়েন্স ল্যাবরেটরি এলাকায়ও ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটছে।

 

তিনি বলেন, এসব ছিনতাইকারীদের হাতে অনেক সময় অস্ত্র থাকে। অনেক সময় ছিনতাইকারীর কবলে পড়ে প্রাণহানির ঘটনা ঘটে। ছিনতাই ঠেকাতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী তৎপর। কিন্তু তবুও নির্মূল করা যায়নি এ অপরাধ।

 

সমাজ বিজ্ঞানীরা বলছেন, যারা চুরি এবং ছিনতাইয়ের মতো কাজ করে, তাদের কাছে এটা একটা নেশা ও পেশা।কারণ, এদের বেশিরভাগ মাদকদ্রব্য গ্রহণ করে। ফলে কোনটা অপরাধ আর কোনটা নয়, সেই পার্থক্য করতে পারে না তারা।

 

আবার ছিনতাইকারীদের ওপরে প্রভাবশালী একটা মহল থাকে বলে মনে করেন সমাজবিজ্ঞানী ও অপরাধ বিশ্লেষকরা। সমাজবিজ্ঞানী সামিনা লুৎফা বলেন, নেশাদ্রব্য কেনার জন্য তারা ছিনতাই করে। দিনে ঘুমায়। সন্ধ্যার পর ছিনতাইয়ের জন্য বের হয়। নেশার দ্রব্য কেনার জন্য একে পেশা করে নেয়। আস্তে আস্তে আরো বড় অপরাধে জড়িয়ে পড়ে। তাই ছিনতাই এড়াতে সজাগ থাকতে হবে।

 

রাস্তায় বের হলে যে দিকে খেয়াল রাখতে হবে

ছিনতাইয়ের শিকার হওয়া এড়াতে কয়েকটি পরামর্শ দিয়েছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অপরাধ বিজ্ঞান বিভাগের চেয়ারম্যান ফারজানা রহমান খন্দকার। তিনি মনে করেন, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী কাজ করলেও ব্যক্তি পর্যায়ে সচেতনতার প্রয়োজন রয়েছে।

 

১. হেল্পলাইনগুলো জানা থাকা জরুরি
ফারজানা রহমান খন্দকার বলেন, সচেতন নাগরিক হিসেবে পুলিশের হেল্পলাইনগুলো সবার জানা দরকার। তিনি বলেন, এই নম্বর গুলো মোবাইলে ডায়াল লিস্টে রাখা উচিত। যদি আপনার সঙ্গে কোনো ঘটনা ঘটে যায়, তাহলে দ্রুত যাতে পুলিশকে জানাতে পারেন। এক্ষেত্রে পুলিশ ঘটনাস্থলে দ্রুত চলে আসতে পারবে। আরো কোনো দুর্ঘটনা হওয়ার আশঙ্কা থাকলে সেটাও থামানো সম্ভব।

 

২. অনিরাপদ স্থান এড়িয়ে চলা
যেসব এলাকা ‌অনিরাপদ সেসব পথ এড়িয়ে চলা যেতে পারে। সন্ধ্যার পর অন্ধকার রাস্তা দিয়ে না গিয়ে আলো এবং মানুষের চলাচল আছে এমন রাস্তা ব্যবহার করতে হবে। ফারজানা খন্দকার বলেন, পরিবেশটা খেয়াল করতে হবে। কোনো অস্বাভাবিক কিছু নজরে পড়লে বা আঁচ করতে পারলে সে রাস্তা দিয়ে না গিয়ে অন্য রাস্তা ব্যবহার করতে হবে। যদি তাতে একটু সময় বেশি লাগে সেটা লাগুক। কিন্তু জীবনের নিরাপত্তা সবার আগে।

 

৩. যে এলাকায় যেতে হবে সে এলাকা সম্পর্কে জ্ঞান রাখা

যদি অপরিচিত কোনো এলাকায় যেতে হয়, এর আগেই ওই এলাকা সম্পর্কে ভালো করে খোঁজ-খবর নিতে হবে।সেখানে পরিচিত কেউ থাকলে আগে থেকেই তাকে জানাতে হবে সেখানে যাওয়ার বিষয়টা। এতে করে একজনকে সঙ্গী হিসেবে পাওয়া যেতে পারে। আর যদি নিরাপত্তার ইস্যু থাকে, তাহলে সেটা আগেই জেনে যাওয়া যাবে। তাই কোন রাস্তায়, কোন পরিবহন ব্যবহার করতে হবে, সেটা আগে থেকেই ঠিক করে ফেলতে হবে।

 

৪. সেলফ ডিফেন্স বা আত্মরক্ষার মূল কৌশলটা জানা উচিত
সবার সেলফ ডিফেন্স বা আত্মরক্ষার মূল কৌশলটা জানা উচিত বলে মনে করেন অপরাধ বিশ্লেষকরা। অনেক দেশে স্কুল পর্যায়ে আত্মরক্ষার বিভিন্ন কৌশল শিখানো হয়। সেটা বাংলাদেশে যদি করা হয়, তাহলে এই ধরনের পরিস্থিতিতে ঘাবড়ে না গিয়ে কি করতে হবে সেটা করা সম্ভব। অনেকেই আতঙ্কিত হয়ে পড়েন। ফলে কিছু কৌশল অবলম্বন করলে হয়তো ওই বিপদ থেকে রক্ষা পাওয়া যেতো। কিন্তু সেটা হয়ে উঠে না।

 

৫. পুলিশের সহায়তা নিতে হবে কিভাবে তাৎক্ষণিকভাবে
ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের উপ-কমিশনার ফারুক হোসেন বলেন, ছিনতাইয়ের ঘটনা হলেই পুলিশের কাছে রির্পোট করতে হবে। কারণ, একটা অপরাধমূলক ঘটনা ঘটলে সেটা যদি পুলিশের কাছে রিপোর্ট করা না হয়, তাহলে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারীর কাছে এর কোনো রেকর্ড থাকে না।

 

তিনি বলেন, অনেকেই আছে মনে করেন, ছিনতাই হয়ে গেছে এখন আর কি হবে। কিন্তু যদি তেমন মূল্যবান কিছু না হারায়, তবুও একজন নাগরিক হিসেবে কর্তব্য পুলিশের কাছে জানানো যে কোন এলাকায় ঘটনা ঘটেছে। তাহলে পুলিশ সে অনুযায়ী পরে ব্যবস্থা নিতে পারে। ছিনতাই প্রতিরোধে পুলিশ সব সময় সজাগ আছে। তাদের রাতের বেলা যে টহল সেটাও বাড়ানো হয়েছে।

লাইফস্টাইল বিভাগের পাঠকপ্রিয় খবর