ঢাকা, ২৫ এপ্রিল বৃহস্পতিবার, ২০২৪ || ১২ বৈশাখ ১৪৩১
good-food
৭০৮

করোনাকালে রমজান: রোজা পালনে মানবেন যেসব নিয়ম

লাইফ টিভি 24

প্রকাশিত: ১১:৪৯ ২০ এপ্রিল ২০২০  

করোনাভাইরাসের আতঙ্কের মধ্যেই সমাগত পবিত্র রমজান। সাহরি, ইফতার, দিন-রাত মহান সন্তষ্টির উৎসব গোটা মাস। পবিত্র রোজার সিয়াম সাধনার এ আয়োজনেও পড়েছে করোনার করাল ছায়া। তবু ভয়, ত্রাসকে দূরে সরিয়ে রেখেই উৎসবে শামিল হওয়ার পরামর্শ দিচ্ছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা। তবে কিছু নিয়ম অবশ্যই মেনে চলার কথা বলা হচ্ছে হু-র তরফে।

 

বিশ্বজুড়ে মুসলিম ধর্মাবলম্বী মানুষরা পবিত্র রমজান মাসে কীভাবে উৎসব পালন করবেন, তার একটি খসড়া প্রকাশ করেছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা। 

 

হু-র পরামর্শ, জমায়েত এড়িয়ে চলুন। নিজেরাও কোনো জমায়েত ডাকবেন না। সামাজিক বা ধর্মীয়, কোনো ধরনের জমায়েত করা বাঞ্ছনীয় নয়। তার বদলে সোশ্যাল মিডিয়ার সাহায্যে ভার্চুয়াল জমায়েত হোক। কথা চলুক ফোনে, দেখা হোক ভিডিও কলে। ধর্মীয় জমায়েত হোক টেলিভিশনের সামনে নিজের নিজের বাড়িতে, অথবা রেডিওতে ধর্মীয় বক্তব্য শুনে শেষ হোক এবারের রমজান।

 

কারোর বাড়ি ইফতারে যাবেন না, কাউকে নিজের বাড়ি আসতেও দেবেন না। হাত মেলানো বা কোলাকুলি নয়, তার বদলে বুকে হাত রেখে সৌজন্য প্রকাশ করুন। হাত নেড়ে অভিবাদন জানাতে হবে। বয়স্ক ব্যক্তিদের বেশি সাবধানে থাকতে হবে। এসব পরামর্শ দিচ্ছে হু।

 

উচ্চ রক্তচাপ, ডায়াবেটিক রোগীদের অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ মেনে চলতে হবে। সবাইকে নজর রাখতে হবে খাওয়া-দাওয়ার দিকে। সারা দিন রোজা থেকে এমন খাওয়া-দাওয়া করা উচিত হবে না যাতে কেউ অসুস্থ হন। কারণ এখন কোনো রোগের ক্ষেত্রেই হাসপাতালে যাওয়া ঠিক নয়।

 

মসজিদে বেশি মানুষের মাঝে যাওয়াটা ঝুঁকিপূর্ণ। তাই নামাজ ও তারাবি বাসাতেই পড়া উচিত। এতেই নিজের ও প্রিয়জনের ভবিষ্যৎ সুরক্ষিত করা সম্ভব। জাকাত বা দান করার সময় সোশ্যাল ডিসট্যান্স বজায় রাখতে হবে। ইফতার পার্টি না ডেকে, খাবারের প্যাকেটের ব্যবস্থা করা যেতে পারে। এতে সংক্রমণের আশঙ্কা ততটা নেই। কোনো সমস্যা হলেই চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।

 

এদিকে, ঠিক কবে থেকে শুরু হবে রমজান মাস, এবার তা জানাল ‘ইন্টারন্যাশনাল অ্যাস্ট্রোনমি সেন্টার।’ ‘খলিজ টাইমস’-এ প্রকাশিত রিপোর্ট অনুযায়ী, ২৪ এপ্রিল থেকেই মধ্যপাচ্যে রমজান শুরু হবে বলে জানানো হয়েছে। ফলে তার এক দিন পর শুরু হবে এ উপমহাদেশে।

 

সৌদি আরব থেকে শুরু করে বিশ্বের অনেক দেশে ইতিমধ্যেই নির্দেশ দেওয়া হয়েছে যাতে রমজান মাসে কেউ মসজিদে না যান। তবে এর মধ্যে ভিন্ন মাত্রার দেশ পাকিস্তান। সেখানে মসজিদে তারাবির নামাজের অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।

 

রমজানে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার পরামর্শ :
 

১. মসজিদে নামাজ আদায় করার সময় কমপক্ষে ১ মিটার বা ৩ ফুট দূরত্ব বজায় রাখতে হবে।

২. কোলাকুলি করা, গায়ের ওপর হাত দিয়ে ডাকা, শরীরের ওপর হাত রাখা - এসব অভ্যাস ত্যাগ করুন।

৩. রমজানে দোকানে বা বাজারে একসঙ্গে অনেক মানুষ জমায়েত বন্ধ করুন।


৪. অসুস্থ মানুষ এবং করোনার সামান্যতম লক্ষণ আছে তাদের বাসায় থাকতে বলুন। সরকারি নির্দেশনা মেনে চলুন।

৫. প্রবীণ এবং অসুস্থদের সমাবেশে অংশ নিতে নিষেধ করুন।

 

রমজানে সমাবেশের বিষয়ে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার পরামর্শ :

 

১. বাইরের যেকোনো সমাবেশ পরিত্যাগ করতে হবে এবং একান্ত প্রয়োজন হলে বাড়ির ভেতর খোলামেলা জায়গায় ব্যবস্থা করতে হবে।

২. সমাবেশের সময়সীমা যতটা সম্ভব কম করুন।

৩. বড় বড় সমাবেশে যোগ দেয়ার চেয়ে কম অংশগ্রহণকারীদের সঙ্গে ছোট সমাবেশের আয়োজন করুন।

৪. দাঁড়িয়ে থাকার সময়, নামাজ পড়ার সময়, ওযু করার সময় এবং জুতা সংরক্ষণের স্থানেও সামাজিক দূরত্ব মেনে চলুন।

৫. মসজিদে প্রবেশ এবং বের হওয়ার মুহূর্তে সব সময় নিরাপদ দূরত্ব বজায় রাখতে হবে।

৬. সমাবেশের মধ্যে যদি কোনো অসুস্থ ব্যক্তিকে চিহ্নিত করা যায় তবে তার ঠিকানায় যোগাযোগ করতে হবে।

৭. মসজিদের প্রবেশদ্বারে এবং ভিতরে হ্যান্ড ওয়াশ ও পর্যাপ্ত পরিমাণে পানির ব্যবস্থা থাকতে হবে। সেইসঙ্গে অ্যালকোহল সমৃদ্ধ স্যানিটাইজারের ব্যবস্থা থাকতে হবে।

৮. পর্যাপ্ত পরিমাণে টিস্যু থাকতে হবে ও বর্জ্য ব্যবস্থাপনা নিশ্চিত করতে হবে।

৯. মসজিদে কার্পেটের ওপরে ব্যবহারের জন্য ব্যক্তিগত জায়নামাজ ব্যবহারের বিষয়ে সবাইকে উৎসাহিত করতে হবে।

১০. জীবাণুনাশক এবং ডিটারজেন্ট ব্যবহার করে নামাজের আগে পরে মসজিদ পরিষ্কার রাখতে হবে।

১১. মসজিদের প্রাঙ্গণ, ওযুখানা পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখতে হবে। সেসঙ্গে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে হবে।