ঢাকা, ২৬ এপ্রিল শুক্রবার, ২০২৪ || ১৩ বৈশাখ ১৪৩১
good-food
৭৩৮

খুন্তির ছ্যাঁকায় দগ্ধ শিশু, সৎ মা-ভাই আটক

লাইফ টিভি 24

প্রকাশিত: ২১:২৩ ১ এপ্রিল ২০১৯  

মাদারীপুরের রাজৈর উপজেলায় ১০ বছরের এক শিশুকে গরম খুন্তির ছ্যাঁকা দেয়া হয়েছে। এ অভিযোগে সৎ মা-ভাইকে আটক করেছে পুলিশ। আটকরা হলেন সাবিনা বেগম (৪০) ও ১৪ বছর বয়সী ভাই।

নির্যাতনের শিকার শিশুর নাম সেতু আক্তার (১০)। সে রাজৈরের কবিরাজপুর ইউনিয়নের পান্থাপাড়া গ্রামের রিয়াজ শিকদারের মেয়ে। কালামৃধা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ৪র্থ শ্রেণির ছাত্রী। তার বাবা ঢাকায় ভাঙ্গারির ব্যবসা করেন।

পুলিশ ও এলাকাবাসী জানায়, প্রায় নয় বছর আগে সেতুর মা রেহানা বেগম মারা যান। মা জীবিত থাকতেই তার বাবা সাবিনাকে বিয়ে করেন। সাবিনা অনেকবার সেতুকে বাড়ি থেকে তাড়িয়ে দিতে চেয়েছেন। গেল এক বছর ধরে শিশুর ওপর নির্যাতনের মাত্রা বেড়ে যায়।

সেতু বলে, সৎ নানির প্ররোচনায় সৎ মা কারণে-অকারণে গরম খুন্তি দিয়ে শরীরের বিভিন্ন স্থানে ছ্যাঁকা দিত। যন্ত্রনায় চিৎকার করলে আরও বেশি কষ্ট দিত। বাড়ি থেকে তাড়িয়ে দেয়ার ভয়ে কাউকে কিছু বলিনি। বাবাকেও বলিনি।

সম্প্রতি নির্যাতনের বিষয়টি জানতে পারেন স্থানীয় মানবাধিকার কর্মী মমতা খাতুন। তিনি বলেন, আমি লোকজনের মুখে একথা শুনে তাদের বাড়ি গিয়ে সেতুর সৎ মাকে বোঝানোর চেষ্টা করি। কিন্তু উনি শোনেননি। পরে আমি শিশুর তাৎক্ষণিক চিকিৎসার ব্যবস্থা করি এবং পুলিশকে বিষয়টি অবহিত করি।

উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা প্রদীপ কুমার মন্ডল বলেন, শিশুটির শরীরের পাঁচটি স্থানে গরম লোহা দিয়ে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। তার ঘাড়, হাত ও পায়ে ক্ষত রয়েছে। আমরা শিশুটির যথাযথ চিকিৎসা নিশ্চিত করেছি। আশা করছি, দ্রুত সুস্থ হয়ে উঠবে।

রাজৈর থানার এসআই খান মো. জোবায়ের বলেন, গেল ২৪ মার্চ মর্মান্তিক ঘটনাটি ঘটে। ওইদিন রাতে শিশুটিকে  শারীরিক নির্যাতন করে সৎ মা ও সৎ নানি। তবে তখন আমরা খবর পাইনি। শনিবার রাতে জানতে পারি। পরে রোববার সকালে শিশুটিকে বাড়ি থেকে উদ্ধার করি। একইসঙ্গে তার সৎ মা ও সৎ ভাইকে আটক করি। তবে সৎ নানিকে পাওয়া যায়নি।

রাজৈর উপজেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা মোমেনা খাতুন বাদী হয়ে একটি মামলা দায়ের করেছেন বলে তিনি জানান।

রাজৈর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সোহানা নাসরিন বলেন, মেয়েটিকে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে। সে চাইলে  আমরা তার পুনর্বাসনের যাবতীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করব।

শিশু বিভাগের পাঠকপ্রিয় খবর