ঢাকা, ২৮ মার্চ বৃহস্পতিবার, ২০২৪ || ১৪ চৈত্র ১৪৩০
good-food
৪৯৮

দেশে প্রথম ‘যুদ্ধশিশু’র রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি পাচ্ছেন মেরিনা

লাইফ টিভি 24

প্রকাশিত: ১৮:০৫ ১৯ জানুয়ারি ২০২৩  

দেশের প্রথম যুদ্ধশিশু হিসেবে স্বীকৃতি পেতে যাচ্ছে সিরাজগঞ্জের তাড়াশ উপজেলার মেরিনা খাতুন। মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয় থেকে এ বিষয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করতে উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। ইতোমধ্যে সেই সিদ্ধান্তের চিঠি হাতে পেয়েছেন যুদ্ধশিশু মেরিনা। বীরাঙ্গনা মায়ের বীর মুক্তিযোদ্ধা স্বীকৃতির পর নিজেও যুদ্ধশিশুর স্বীকৃতি পাবার খবরে সন্তোশ প্রকাশ করেন তিনি।

 

১৯৭১ সালে স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় পাক বাহিনী এবং এদেশে তাদের দোসর রাজাকারদের নির্যাতনের শিকার হন তাড়াশ সদরের উত্তপাড়ার পচি বেওয়া। সেদিন অস্ত্রের মুখে তাকে বাড়ি থেকে পাক বাহিনীর সামরিক ক্যাম্পে তুলে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে তার ওপর পাক বাহিনী ও তার দোসররা নির্যাতন চালায়। সেই নির্যাতনের পর পচি বেওয়ার গর্ভে জন্মনেয় যুদ্ধশিশু মেরিনা খাতুন।

 

সন্তান জন্ম দেবার পর নানা সামাজিক ঘাত প্রতিঘাত সহ্য করতে না পেরে নিজে এবং সন্তানকে হত্যার চেষ্টা চালান তিনি। কিন্তু স্বজনদের আশ্বাসে পচি বেওয়া অন্যের বাড়িতে কাজ করে মেয়েকে বড় করেন। ২০০৫ সালে মারা যান সংগ্রামী নারী পচি বেওয়া। তাড়াশের স্থানীয় মুক্তিযোদ্ধাদের পরামর্শে মেরিনা খাতুন বীরাঙ্গনা মায়ের মুক্তিযোদ্ধার স্বীকৃতি চেয়ে আবেদন করেন। ২০১৮ সালে বীর মুক্তিযোদ্ধার রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি পেয়ে গেজেটভুক্ত হন পচি বেওয়া।

 

তিনি মারা যাবার পর তার মেয়ে মেরিনা খাতুন পিতৃত্বের পরিচয় না পেয়ে যুদ্ধশিশু হিসেবে রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতির জন্য গত বছর ৮ সেপ্টেম্বর মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ে আবেদন করেন। এরই পরিপ্রেক্ষিতে জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিল (জামুকা) ৮২তম সভায় যুদ্ধশিশু হিসেবে মেরিনা খাতুনকে স্বীকৃতি প্রদানের জন্য সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।

 

ইতোমধ্যে তাকে যুদ্ধশিশুর স্বীকৃতি দিতে ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিবকে ৯ জানুয়ারি চিঠি দিয়েছেন জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিলের মহাপরিচালক জহুরুল ইসলাম রোহেল। মেরিনা খাতুন জানান, চিঠি হাতে পেয়েছি। এখন সরকারি প্রজ্ঞাপনের অপেক্ষায় আছি। সরকার আমার শাশুড়িকে মুক্তিযোদ্ধা এবং স্ত্রীকে যুদ্ধশিশুর স্বীকৃতি দান করায় এখন মনে শান্তি পাচ্ছি। আর কোনও কষ্ট নেই।

জীবনের গল্প বিভাগের পাঠকপ্রিয় খবর