ঢাকা, ১৮ এপ্রিল বৃহস্পতিবার, ২০২৪ || ৫ বৈশাখ ১৪৩১
good-food
৯৯৭

নুসরাতের ভিডিও ছড়িয়ে দেয়া সেই ওসির বিরুদ্ধে মামলা

লাইফ টিভি 24

প্রকাশিত: ২০:০০ ১৫ এপ্রিল ২০১৯  

যৌন হয়রানির প্রতিবাদ করায় আগুনে পুড়িয়ে হত্যা করা হয়েছে মাদ্রাসাছাত্রী নুসরাত জাহান রাফিকে। সেই তারই জবানবন্দির ভিডিও ধারণ এবং তা ফেসবুকে ছড়িয়ে দেন সোনাগাজী থানার সাবেক ওসি মোয়াজ্জেম হোসেন। সবশেষ খবর তার বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা হয়েছে।

এক আইনজীবী মামলাটি করেছেন। এর আবেদনের শুনানি নিয়ে সোমবার ঢাকার সাইবার আদালতের বিচারক মোহাম্মাদ আস্ সামছ জগলুল হোসেন পিবিআইকে সেটি তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন।

সংশ্লিষ্ট আদালতের পেশকার শামীম আহম্মেদ জানিয়েছেন, পিবিআইয়ের ডিআইজি পদমর্যাদার একজন কর্মকর্তাকে অভিযোগ তদন্ত করে ৩০ এপ্রিলের মধ্যে আদালতে প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দেয়া হয়েছে।

ফেনীর সোনাগাজীর ইসলামিয়া সিনিয়র ফাজিল মাদ্রাসার অধ্যক্ষ সিরাজ-উদ-দৌলার বিরুদ্ধে যৌন হয়রানির মামলা তুলে নিতে নুসরাতকে জোর করেন ওই ওসি। তা তুলে না নেয়ায় গেল ৬ এপ্রিল আলিম পরীক্ষা দিতে গেলে তার গায়ে কেরোসিন ঢেলে আগুন ধরিয়ে দেন অধ্যক্ষের গুন্ডাবাহিনী।

এ ঘটনায় করা মামলার আসামিদের ধরতে গড়িমসি করেন মোয়াজ্জেম হোসেন। এই অভিযোগ ওঠার পর ১০ এপ্রিল তাকে সোনাগাজী থানার দায়িত্ব থেকে সরিয়ে আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়নে বদলি করা হয়। 

ওই দিন রাতেই ঢাকা মেডিকেলে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান নুসরাত। পরদিন ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়া ভিডিওতে দেখা যায়, থানায় ওসির সামনে অধ্যক্ষ সিরাজের বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলে ধরতে গিয়ে অঝোরে কাঁদছিলেন শিক্ষার্থী। মুখ দুই হাতে ঢেকে রেখেছিলেন।  

ওই সময় ওসি তাকে ‘মুখ থেকে হাত সরাও, কান্না থামাও’ বলেন। পাশাপাশি এও বলেন, এমন কিছু হয়নি যে এখনও তোমাকে কাঁদতে হবে।

ওই ভিডিও ধারণের জন্য মোয়াজ্জেমের বিরুদ্ধে সকালে মামলার আবেদন করেন আইনজীবী সৈয়দ সায়েদুল হক। আর্জিতে বলা হয়, গেল ২৭ মার্চ ওই ছাত্রীকে অধ্যক্ষ তার কক্ষে নিয়ে যৌন নিপীড়ন করেন। অভিযোগ উঠলে দুজনকে থানায় নিয়ে যান ওসি। নিয়ম ভেঙে জেরা করতে নুসরাতের বক্তব্য ভিডিও করেন। মৌখিক অভিযোগ নেয়ার সময় দুই পুরুষের কণ্ঠ শোনা গেলেও সেখানে তাকে ছাড়া অন্য কোনো নারী বা তার আইনজীবী ছিলেন না।

এই আইনজীবী বলেন, ওসি নিয়ম বহির্ভূতভাবে অনুমতি ব্যতিরেকে ভিডিও ধারণ করে ডিজিটাল মাধ্যমে প্রকাশ ও প্রচার করেন। অপমানজনক ও আপত্তিকর ভাষা প্রয়োগ করেন। তাই তা ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন ২০১৮ অনুযায়ী দণ্ডনীয় অপরাধ।

ফেসবুকে ভাইরাল হওয়া ভিডিওটি নিয়ে প্রতিবাদ জানিয়েছেন আইনজীবী ও মানবাধিকারকর্মীরা। তাদের মতে, ভিকটিমের এই ধরনের ভিডিও ধারণ অপরাধের মধ্যে পড়ে।

পুলিশের একাধিক কর্মকর্তা বলেন, কেউ আইন না মেনে অভিযোগকারীর বক্তব্য ভিডিও করলে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার সুযোগ আছে। তবে ভিডিওটি ধারণ ও তা ফেসবুকে ছড়িয়ে দেয়ার বিষয়ে ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার বক্তব্য পাওয়া যায়নি।