ঢাকা, ০১ মে বুধবার, ২০২৪ || ১৮ বৈশাখ ১৪৩১
good-food
৩৪৪

‘বাইডেনের কথিত উপদেষ্টাকে সবকিছু শিখিয়ে দেন সারওয়ার্দী’

লাইফ টিভি 24

প্রকাশিত: ২৩:১৯ ৩১ অক্টোবর ২০২৩  

মিথ্যা পরিচয় দিয়ে অপরাধমূলক বিশ্বাস ভঙ্গের অভিযোগে পল্টন থানার মামলায় সেনাবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত লেফটেন্যান্ট জেনারেল চৌধুরী হাসান সারওয়ার্দীকে গ্রেপ্তার করেছে। মঙ্গলবার (৩১ অক্টোবর) সাভার থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।

 

তার গ্রেপ্তারের বিষয়ে মঙ্গলবার (৩১ অক্টোবর) সন্ধ্যায় রাজধানীর মিন্টু রোডে ডিবি কার্যালয়ের সামনে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে ডিবিপ্রধান মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ বলেন, শনিবার (২৮ অক্টোবর) বিএনপির একটি শান্তিপূর্ণ সমাবেশ হওয়ার কথা ছিল। সেজন্য তারা অনুমতিও নিয়েছিল। কিন্তু আমরা লক্স্য করেছি সেদিন দুপুরের পর বিএনপির নেতাকর্মীরা পুলিশকে লক্ষ্য করে ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে, প্রধান বিচারপতির বাসভবনে হামলা করে। এমনকি তারা রাজারবাগ পুলিশ হাসপাতালে হামলা করে। এতে পুলিশের ৪১ সদস্য আহত ও এক সদস্য নিহত হন। 

 

তিনি আরও বলেন, দিনব্যাপী সহিংসতার পর সন্ধ্যায় হাসান সারওয়ার্দী এবং বিএনপি নেতা ইশরাক হোসেনের নেতৃত্বে সংবাদমাধ্যমের সামনে মিয়ান আরেফী নামে একজনকে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের উপদেষ্টা পরিচয় দেয়া হয়। পুলিশ, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এবং আইন ও বিচার বিভাগের ওপর নিষেধাজ্ঞার বিষয়ে তার সরকারের কাছে সুপারিশ করেছেন বলে বক্তব্য দেন মিয়ান আরেফী।

 

ডিবিপ্রধান বলেন, এ ঘটনায় মিয়ান আরেফীকে গ্রেপ্তারের পর জিজ্ঞাসাবাদ করা হলে তিনি জানান, আরেফী এসব বলতে চাননি। তাকে বাসা থেকে নিয়ে আসার সময় সারওয়ার্দী তাকে এসব কথা বলার জন্য শিখিয়ে দিয়েছিলেন। আর তাকে সহায়তা করেছেন ইশরাক ও অ্যাডভোকেট বেলাল নামে একজন। আরেফীর এমন বক্তব্যে বিএনপির নেতাকর্মীরা এতে উৎসাহ পায় এবং রাতের বেলা বাসে আগুন লাগায়।

 

তিনি বলেন, মিয়ান আরেফী আরও বলেন, উনি যে কথাগুলো বলেছেন যে, বাংলাদেশ হিন্দুস্থান হয়ে যাবে, বাংলাদেশ শ্রীলঙ্কা হয়ে যাবে এসব কথা নাকি উনি বলতে চান নাই। উনাকে এসব কথা হাসান সারওয়ার্দী শিখিয়ে দিয়েছেন। উনি শিখিয়ে দিয়ে এসব কথা বলিয়েছেন। এতে আরও সহযোগিতা করেছেন বিএনপি নেতা ইশরাক এবং অ্যাডভোকেট বেলাল। 

 

আরেফীর এমন বক্তব্যের পর রাজধানীজুড়ে বাসে অগ্নিসংযোগসহ আরও বেশ কয়েকটি সহিংসতার ঘটনা ঘটে। আজকে দুইদিন ধরে দেশে অস্থিতিশীল পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে, তার এই বক্তব্যের মাধ্যমে যে রাষ্ট্রদ্রোহিতার কারণে পল্টন থানায় একটি মামলা (নং-৫৬) দায়ের করা হয়েছে। আমরা এ মামলার দুই নম্বর আসামি সারওয়ার্দীকে গ্রেপ্তার করেছি।

ডিবিপ্রধান হারুন বলেন, আমরা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলে প্রয়োজনে তাকে রিমান্ডে আনব। রিমান্ডে এনে তারা কী ষড়যন্ত্র করেছিলেন জানার চেষ্টা করব। তারা মিয়ান আরেফীকে বিএনপি কার্যালয়ে এনে দেশের বিরুদ্ধে, সরকারের বিরুদ্ধে, পুলিশ-আনসার-র‍্যাব বিরুদ্ধে মিথ্যাচার করে যে একটা অস্থিতিশীল পরিস্থিতি সৃষ্টি করেছেন, সবকিছু আমরা জিজ্ঞাসাবাদ করে বিস্তারিত জানাব।

 

উল্লেখ্য, আমেরিকার পাসপোর্টধারী মিয়ান আরেফীর প্রকৃত নাম মিয়া জাহিদুল ইসলাম আরেফী। তার জন্ম ও বেড়ে ওঠা সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়ায়। শনিবার বিএনপির কার্যালয়ে মিথ্যা পরিচয়ে উসকানিমূলক বক্তব্য দেয়ার পর রোববার (২৯ অক্টোবর) বিকেলে তিনি দেশছাড়ার চেষ্টা করেন। তবে বিমানবন্দরে ইমিগ্রেশন কর্তৃপক্ষ তাকে আটক করে ডিবি পুলিশের কাছে হস্তান্তর করে। তিনি বর্তমানে কারাগারে আছেন।