ঢাকা, ২৬ এপ্রিল শুক্রবার, ২০২৪ || ১৩ বৈশাখ ১৪৩১
good-food
২০১

ব্রেকফাস্ট না করলে যত ভয়ংকর রোগ হয়

লাইফ টিভি 24

প্রকাশিত: ২১:৪৬ ৩১ জানুয়ারি ২০২১  

সুস্থ ও ফিট থাকতে এবং শরীরে সঠিক পুষ্টি জোগাতে চাইলে কখনই ব্রেকফাস্ট বাদ দেবেন না। সকালের খাবার ঠিকঠাক হলে তবেই আপনি সারাদিন চাঙ্গা থাকবেন। কাজ করার এনার্জি পাবেন। কিন্তু আমরা অনেকেই সকালে উঠে না খেয়ে দিনের অনেকটা সময় কাটিয়ে দিই। সে সকালে অফিসে বেরোনোর তাড়া হোক কিংবা ঘরের কাজের চাপ, ব্রেকফাস্ট করতে করতে বেজে যায় প্রায় ১১-১২ টা। 

 

অনেকের আবার ব্রেকফাস্ট আর লাঞ্চ একসঙ্গেই হয়ে যায়। কেউ কেউ ভাবেন ব্রেকফাস্ট স্কিপ করলে রোগা থাকা যায়। কিন্তু এটা একেবারেই ভুল ধারণা! ব্যাপারটা ঠিক তার উল্টো৷ ব্রেকফাস্ট করলে বরং ওজন নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব হয়৷ কারণ সকালের দিকে আমাদের শরীরের মেটাবলিজমের হার বেশি থাকে৷ ফলে যা খাওয়া হয় তা হজম হয়ে যায়৷ ক্যালোরিও বার্ন হয় তাড়াতাড়ি৷

 

যারা ব্রেকফাস্ট করেন না। স্বাভাবিকভাবেই তারা লাঞ্চে অতিরিক্ত খেয়ে ফেলেন৷ ব্রেকফাস্ট করলে এই অতিরিক্ত খিদে নিয়ন্ত্রণ করা যায়। ব্রেকফাস্ট আমাদের এনার্জি লেভেল বাড়াতেও সাহায্য করে৷ রাতে ঘুমোলে আমাদের এনার্জি লেভেল অনেকটা কমে যায়৷ সকালে এনার্জি না পেলে দিনভর কাজে মন বসবে না। 

এছাড়া নিয়মমতো ব্রেকফাস্ট করলে ডায়াবেটিস, হার্টের রোগ, ব্লাড প্রেসার ইত্যাদিও নিয়ন্ত্রণে থাকে৷ আসুন জেনে নেওয়া যাক ব্রেকফাস্ট না করলে কী কী ক্ষতি হয় শরীরের -


হার্টের ক্ষতি
দিনের পর দিন ব্রেকফাস্ট না করলে হার্ট অ্যাটাক হতে পারে। জামা’য় প্রকাশিত একটি গবেষণায় দেখা গেছে, যেসব পুরুষ ব্রেকফাস্ট স্কিপ করেন, তাদের ২৭ শতাংশ বেশি আশঙ্কা থাকে হার্ট অ্যাটাকের। হেলদি ব্রেকফাস্ট হার্ট অ্যাটাকের সম্ভাবনা কমিয়ে দেয়।


টাইপ-২ ডায়াবেটিসের ঝুঁকি
হার্ভার্ড ইউনিভার্সিটি স্কুল অব পাবলিক হেলথ-এর গবেষণায় দেখা গেছে, খাওয়াদাওয়ার সঙ্গে স্বাস্থ্যের নিবিড় যোগ রয়েছে। প্রায় ছয় বছর ধরে ৪৬ হাজার ২৮৯ জন মহিলার ওপর গবেষণা করে দেখা গেছে, যাদের ব্রেকফাস্ট না করার অভ্যাস রয়েছে; তাদের টাইপ-২ ডায়াবেটিসের ঝুঁকি বেশি।


ওজন বাড়বে
যদি ওজন কমাতে চান তাহলে ভুলেও ব্রেকফাস্ট এড়াবেন না। কারণ ব্রেকফাস্ট না করলে মিষ্টি ও ফ্যাট জাতীয় খাবার খাওয়ার ইচ্ছে বাড়বে। সেইসঙ্গে খিদে পাবে। খিদের সময় সামনে যা পাবেন, তাই খেয়ে নেওয়ার প্রবণতা থাকে সবার মধ্যে। এদিকে ব্রেকফাস্ট করলে খিদে নিয়ন্ত্রণে রাখা যায়। তাই ওজন কমাতে নজর দিন ব্রেকফাস্টের দিকে।


মুড সুইং ও এনার্জির ঘাটতি
ব্রেকফাস্ট স্কিপ করলে মুড ও এনার্জি - দুটোতেই প্রভাব পড়ে। গবেষণায় দেখা গেছে, যারা ব্রেকফাস্ট করেন না, তারা সবচেয়ে বেশি ক্লান্তিবোধ করেন এবং ভুলে যান বেশি। প্রাতঃরাশ এড়ালে আপনার এনার্জি কমে যেতে পারে। নেতিবাচকভাবে আপনার স্মৃতিতে প্রভাব ফেলতে পারে। মেজাজও খারাপ থাকতে পারে।


ক্যান্সারের ঝুঁকি
ব্রেকফাস্ট এড়ালে একেবারে বেশি খাওয়ার প্রবণতা তৈরি হবে, যা আপনার ওজন বাড়িয়ে দেবে। যুক্তরাজ্যের একটি গবেষণায় দেখা গেছে, ওজন বেশি মানুষদের ক্যান্সারের ঝুঁকি থাকে বেশি।


চুলের ক্ষতি
ব্রেকফাস্ট না করলে চুল নষ্ট হয়ে যেতে পারে। ব্রেকফাস্ট স্কিপ করলে প্রোটিনের মাত্রা ভয়ঙ্করভাবে কমে যায় শরীরে, যা কেরাটিনের মাত্রায় প্রভাব ফেলে। কেরাটিন কমে গেলে চুলের বৃদ্ধি কমে যায়, চুল পড়তে শুরু করে।


বিপাকে প্রভাব ফেলে
তেল ছাড়া যেমন গাড়ি চলে না, তেমনি ব্রেকফাস্ট না করলে বিপাক ক্রিয়া শুরু হয় না। ৮-১০ ঘণ্টা ঘুমানোর পর ব্রেকফাস্ট প্রথম খাবার যেটা শরীরে যায়। ঘুমানোর বেশ কিছুক্ষণ আগে আমরা ডিনার করি। প্রায় ১২ ঘণ্টা শরীর খাবার পায় না। আর ব্রেকফাস্ট করলে তা তাড়াতাড়ি হজম হয়ে যাবে।


হ্যাংওভার কাটে না
রাতে যদি মদ্যপান করেন তাহলে পরেরদিন ব্রেকফাস্ট অবশ্যই করুন। ব্রেকফাস্ট করলে আয়রন, ফোলেট, ভিটামিন এবং অন্যান্য খনিজগুলি শরীরে যায়। যা আপনার শরীরকে হারিয়ে যাওয়া পুষ্টির ক্ষতি পূরণ করতে সাহায্য করবে। এনার্জি লেভেলও বাড়ায়। আর ব্রেকফাস্ট না করলে হ্যাংওভারও কাটতে চাইবে না।