ঢাকা, ১৯ এপ্রিল শুক্রবার, ২০২৪ || ৬ বৈশাখ ১৪৩১
good-food
৬১৬

শিশুদের সঙ্গে আনন্দমুখর অন্যরকম দিন শেখ হাসিনার

লাইফ টিভি 24

প্রকাশিত: ১১:২২ ১ জানুয়ারি ২০২০  

শীতের সকালে নরম আলোয় গণভবনের সবুজ মাঠে খেলাধুলায় মেতেছিল স্কুল-মাদ্রাসার ছোট্ট শিশুরা। পরম মমতায় যেন ‘সহপাঠী’দের মতো তাদের সঙ্গে খেলায় মেতেছিলেন টানা তিনবারের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও। কখনো শিশুদের দোলনায় বসিয়ে দোল খাওয়াচ্ছিলেন, আবার কখনো বুকে টেনে নিয়ে স্নেহের পরশ বুলিয়ে দিচ্ছিলেন বঙ্গবন্ধুকন্যা। সরকারপ্রধানের এমন স্নেহভরা সঙ্গ দেখে আনন্দে আত্মহারা শিশুরাও। স্বভাবসুলভ ভালোবাসা থেকেই শত ব্যস্ততা পেছনে ফেলে গতকাল সকালে স্কুল-মাদ্রাসার ছোট্ট শিশুদের মুখে হাসি ফোটাতে তাদের নিয়ে খেলায় মেতে উঠেছিলেন বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা। হতে পারেন সরকারপ্রধান, হতে পারেন দেশের শীর্ষ রাজনৈতিক দলের প্রধান, কিন্তু কঠিন সব কাজের ভিড়ে তার কোমল মনটা তো আর তাতে আড়াল হয় না! শিশুদের প্রতি তার আলাদা মমত্ববোধ কাজ করে সব সময়। গতকাল তা দেখা গেল আরেকবার। এর আগে গণভবনের বাঙ্কোয়েট হলে প্রাথমিক শিক্ষা সমাপনী, ইবতেদায়ি, জুনিয়র স্কুল সার্টিফিকেট (জেএসসি) ও জুনিয়র দাখিল সার্টিফিকেট (জেডিসি) পরীক্ষার ফল প্রকাশ এবং দেশব্যাপী বই উৎসবের উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

ফল প্রকাশ ও বই উৎসবের এই অনুষ্ঠানে প্রাথমিক বিদ্যালয় ও নিম্নমাধ্যমিক পর্যায়ের স্কুলশিশুরাও অংশ নেয়। ফল প্রকাশের পর বই উৎসবে শিশুদের হাতে নতুন বই তুলে দেন প্রধানমন্ত্রী। এ অনুষ্ঠানে গণভবনে উপস্থিত সবার উদ্দেশে প্রধানমন্ত্রী বললেন, ‘আমি কিন্তু বাচ্চাদের সঙ্গে ফটোসেশন করব।’ এরপর বাচ্চাদের সঙ্গে বাইরে এসে কনফারেন্স রুমের গেটে ফটোসেশন করলেন তিনি। তারপর কোমলমতি শিশুশিক্ষার্থীরা দৌড়ে গেল গণভবনের খেলার মাঠে। প্রধানমন্ত্রীও ছুটলেন শিশুদের সঙ্গে। সুযোগ পেয়ে শীতের সকালের সূর্যের নরম আলোয় দৌড়াদৌড়ি, ছুটোছুটি, হই-হুল্লোড়, খেলাধুলায় মেতে ওঠে শিশুরা। পাখির কিচিরমিচির ধ্বনির মতো তারাও গণভবন চত্বরের সবুজ মাঠকে বেশ কিছু সময়ের জন্য সরব করে তোলে। ভিতরের সবুজ মাঠের নির্মিত বেশ কয়েকটি দৃষ্টিনন্দন কুঁড়েঘর, স্লাইডে পিছলে পড়া, দোলনায় দোল খাওয়া, ট্রেম্পলিনে লম্ফঝম্ফসহ বিভিন্ন ধরনের খেলায় মেতে ওঠে শিশুরা। শিশুদের প্রতি স্বভাবসুলভ মমতায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও তাদের সঙ্গে খেলায় মেতে ওঠেন। শিশুদের দোলনায় বসিয়ে নিজে দোল দেন প্রধানমন্ত্রী। তাদের কাছে টেনে আদরও করেন তিনি। সেখানে থাকা কয়েকটি প্রতিবন্ধী শিশুকেও বুকে টেনে নেন প্রধানমন্ত্রী। তাদের সঙ্গে কুশল বিনিময় করেন তিনি। পরে শিশুদের প্রধানমন্ত্রীর পক্ষ থেকে চকলেট, মিষ্টি, ফলসহ হালকা নাস্তা দিয়ে গণভবনে আপ্যায়িত করা হয়। নতুন বইয়ের সঙ্গে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গ গণভবনের সবুজ মাঠে খেলাধুলায় শিশুদের আনন্দ বাড়িয়ে তোলে কয়েক গুণ। এ সময় প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে অন্যান্যের মধ্যে ছিলেন শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি, প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী মো. জাকির হোসেন, শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেলসহ সংশ্লিষ্ট ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।

যুগের সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলার শিক্ষা দিতে হবে : প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, আগামী প্রজন্মকে এমনভাবে গড়ে তুলতে চাই যেন তারা সব ধরনের শিক্ষায় পারদর্শী হয়। সেই শিক্ষাটা আমরা দিতে চাই, যেন আমাদের ছেলেমেয়েরা যুগের সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলতে পারে। সেটাই আমাদের লক্ষ্য। শিশুদের শুধু পড় পড় বললে তাদের পড়তে ইচ্ছা করে না। খেলাধুলার মধ্য দিয়ে তাদের পড়ালেখা শেখাতে হবে। তবেই তা ফলপ্রসূ হবে। শিক্ষার্থীরা যেন চাপমুক্ত থেকে আনন্দের সঙ্গে লেখাপড়ায় আগ্রহী হয় তার ব্যবস্থা নিতে হবে। গতকাল সকালে গণভবনে প্রাথমিক ও ইবতেদায়ি শিক্ষা সমাপনী পরীক্ষা এবং জুনিয়র স্কুল সার্টিফিকেট (জেএসসি) ও জুনিয়র দাখিল সার্টিফিকেট (জেডিসি) পরীক্ষার ফল হস্তান্তর এবং শিক্ষার্থীদের হাতে নতুন বছরের পাঠ্যপুস্তক তুলে দিয়ে বই বিতরণ কার্যক্রম উদ্বোধন অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী এ কথা বলেন। জেএসসি-জেডিসি-পিইসি পরীক্ষায় কৃতকার্য সব শিক্ষার্থীকে অভিনন্দন জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমি দোয়া করি আজকের এই নতুন প্রজন্ম, এরা আগামী দিনে দেশের কর্ণধার হবে। এদের মধ্য থেকে কেউ আামদের মতো প্রধানমন্ত্রী হবে, মন্ত্রীও হবে। শিক্ষক, চিকিৎসক, প্রকৌশলী অনেক কিছু হতে পারবে। অনেক বড় বড় পদে যেতে পারবে। তার জন্য মনোযোগ দিয়ে পড়াশোনা করতে হবে। আর পড়াশোনার সঙ্গে খেলাধুলা বা অন্যান্য আনুষঙ্গিক সব করতে হবে।’ তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে, বাংলাদেশ এগিয়ে যাবে। বিশ্বসভায় আমরা যে মর্যাদা পেয়েছি; আমরা আরও মর্যাদা অর্জন করে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবের যে স্বপ্ন ছিল ক্ষুধামুক্ত, দারিদ্র্যমুক্ত উন্নত সমৃদ্ধ বাংলা গড়ে তোলা, সেই সোনার বাংলা আমরা গড়ে তুলব।’

এ সময় শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি, প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী মো. জাকির হোসেন, শিক্ষা উপমন্ত্রী ব্যারিস্টার মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল, শিক্ষাসচিব সোহরাব হোসাইনসহ অন্যরা উপস্থিত ছিলেন।

শিশু বিভাগের পাঠকপ্রিয় খবর