ঢাকা, ০৭ জুলাই সোমবার, ২০২৫ || ২২ আষাঢ় ১৪৩২
good-food
১৮

সীমান্তে হত্যা বন্ধ না হলে লংমার্চ: চাঁপাইনবাবগঞ্জে নাহিদ ইসলাম

লাইফ টিভি 24

প্রকাশিত: ২২:৩৮ ৬ জুলাই ২০২৫  

সীমান্ত হত্যাকাণ্ডের কড়া সমালোচনা ও হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম বলেছেন, সীমান্তে আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘন করে বোমা মারা হয়, গ্রেনেড মারা হয়। সীমান্তে অনেক বাহাদুরি হয়েছে ‘দাদা’দের। সেই বাহাদুরির দিন শেষ হয়েছে। যদি সীমান্তে আর কোনো পাঁয়তারা করা হয়, যদি সীমান্তে আগ্রাসন চালানো হয়, সীমান্তে আমাদের ভাইদের ওপর হত্যাচেষ্টা চালানো হয়, তাহলে আমরা সীমান্ত অভিমুখে লংমার্চ ঘোষণা করব।

 

রোববার (৬ জুলাই) চাঁপাইনবাবগঞ্জে বর্ণাঢ্য পদযাত্রা ও পথসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। দেশ গড়তে এসসিপির জুলাই পদযাত্রার ষষ্ঠ দিন ছিল এদিন। 

 

দুপুরে নওগাঁ থেকে চাঁপাইনবাবগঞ্জে এসে পৌঁছান দলের আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম, সদস্য সচিব আখতার হোসেন, উত্তরাঞ্চলের মুখ্য সমন্বয়ক সারজিস আলম, দক্ষিনাঞ্চলের মুখ্য সমন্বয়ক হাসনাত আবদুল্লাহসহ কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ। জুলাই আন্দোলনের প্রাণকেন্দ্র শান্তিমোড় থেকে পদযাত্রাটি শুরু হয়ে শহর প্রদক্ষিণ শেষে নবাবগঞ্জ সরকারি কলেজ চত্বরে এসে পথসভায় মিলিত হয়। সেখানেই অনুষ্ঠিত হয় পথসভা।

 

চাঁপাইনবাবগঞ্জে জুলাই পথযাত্রার পথসভায় উত্তরাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক সারজিস আলমের সঞ্চালনায় বক্তব্য দেন- এনসিপির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম, যুগ্ম আহ্বায়ক ডা. তাজনুভা জাবীন, সদস্য সচিব আখতার হোসেন, কেন্দ্রীয় এনসিপির সদস্য আসিফ মোস্তফা জামাল, চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা এনসিপির প্রধান সমন্বয়কারী আলাউল হক প্রমুখ।

 

এসময় উপস্থিত ছিলেন- জ্যেষ্ঠ যুগ্ম আহ্বায়ক সামান্তা শারমিন, জ্যেষ্ঠ যুগ্ম সদস্য সচিব নাহিদা শারওয়ার নিভা, দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক হাসনাত আবদুল্লাহ, মুখ্য সমন্বয়ক নাসির উদ্দীন পাটোয়ারী, জ্যেষ্ঠ যুগ্ম সদস্য সচিব ডা. তাসনিম জারাসহ কেন্দ্রীয় নেতারা। নতুন বাংলাদেশ গড়ে তোলার মাধ্যমে জুলাই অভ্যুত্থানের শহীদের আকাঙ্ক্ষা পূরণ করা হবে। মৌলিক সংস্কারে বাঁধা দেয়া হলে প্রতিরোধ গড়ে তোলার হুঁশিয়ারি দেন দলটির নেতারা।

 

প্রধান অতিথির বক্তব্যে নাহিদ ইসলাম বলেন, চাঁপাইনবাবগঞ্জের দুজন শহীদ রয়েছেন। তারা গণঅভ্যুত্থানের নিজেদের জীবন বিলিয়ে দিয়েছিলেন। দেশকে মুক্ত করতে স্বৈরাচারের কবল থেকে দেশকে নতুন করে স্বাধীনতা এনে দিয়েছিলেন। আমরা সেই শহীদের শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করি। শহীদরা যে আকাঙ্ক্ষার জন্য, নতুন বাংলাদেশের জন্য জীবন দিয়েছিল আমরা যেন নতুন বাংলাদেশ বিনির্মাণ করতে পারি, সেটাই আমাদের লক্ষ্য। নতুন বন্দোবস্তের মাধ্যমে জুলাই অভ্যুত্থানের শহীদের আত্মত্যাগের মর্যাদা নিশ্চিত করা হবে বলে তিনি জানান।

 

তিনি বলেন, আমি শুনেছি চাঁপাইনবাবগঞ্জের মানুষ অনেক বৈষম্যের শিকার হয়েছে। আমের রাজধানী হলেও আমকে শিল্প পর্যায়ে নিতে বা রপ্তানি করতে কোনো সরকারই উদ্যোগ নেয়নি। আমি শুনেছি চাঁপাইনবাবগঞ্জবাসী ঢাকা থেকে সরাসরি ট্রেনের জন্য আন্দোলন করছে। সরকার দ্রুত সময়ের মধ্যে যেন এই দাবি পূরণ করে সেই দাবি জানাচ্ছি। রাষ্ট্রের মৌলিক সংস্কার, গণহত্যাকারীদের বিচার, জুলাই ঘোষণাপত্র ও জুলাই সনদ চেয়েছি। এগুলো চাঁপাইনবাবগঞ্জবাসীরও দাবি।

 

পথসভায় দলের সদস্য সচিব আখতার হোসেন বলেন, মৌলিক সংস্কারে বাঁধা দিলে প্রতিরোধ গড়ে তোলা হবে। চাঁপাইনবাবগঞ্জবাসীকে উদ্দেশ্য করে তিনি বলেন, আপনারা এতটা সাহসী মানুষ, কাস্তে নিয়ে ভারতীয় বিএসএফকে তাড়া করে খেদিয়ে দিয়েছেন। ‘দিল্লি না ঢাকা’ এই স্লোগানটা চাঁপাইনবাবগঞ্জের মানুষ সবচেয়ে বেশি ধারণ করে। তাই শেখ হাসিনা টুপ করে ঢুকে যেতে চাই, চাঁপাইনবাবগঞ্জের মানুষ তাকে ধরে আমগাছে বেঁধে ফেলবে। 

 

এনসিপির সদস্য সচিব বলেন, নতুন বাংলাদেশে রাজনৈতিক কারণে আমরা আর বৈষম্য দেখতে চাই না। আর পুরনো সিস্টেমে চলবে না, বাংলাদেশকে নতুন কাঠামোতে পরিচালনার জন্য একটি নতুন সংবিধান প্রণয়ন করতে হবে। বাংলাদেশের মৌলিক কাঠামোতে যদি হস্তক্ষেপ করা হয়, মৌলিক সংস্কারে বাঁধা দেয়া হয় তাহলে প্রতিরোধ গড়ে তোলা হবে হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেন তিনি।

 

পথসভা শেষে শহরের ক্লাব সুপার মার্কেট এলাকায় এনসিপির চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা কার্যালয় উদ্বোধন করেন কেন্দ্রীয় নেতারা। এরপর রাজশাহীর উদ্দেশে রওনা হয় জুলাই পদযাত্রার গাড়ি বহর।