ঢাকা, ১৯ এপ্রিল শুক্রবার, ২০২৪ || ৬ বৈশাখ ১৪৩১
good-food
৮০৮

অফিসে কাজ না করেও যেভাবে বসের চোখে ভালো থাকবেন

লাইফ টিভি 24

প্রকাশিত: ২২:০১ ৬ জুলাই ২০১৯  

অফিসে কিছু কর্মী থাকে যারা কাজ না করে কে কী করছে তা নিয়েই বেশি মেতে থাকেন। কাজে বিশেষ মনোযোগ থাকে না তাদের। কিন্তু এরপরও তারা বসের কাছে ভালো থাকেন। কারণ, অফিসিয়াল মিটিংগুলোতে সামনের সারিতে বসে কর্তা ব্যক্তিদের কথায় সমর্থন জুগিয়ে বা প্রশংসা করে তাদের চোখে পড়েন।

এই ধরনের ব্যক্তিদের 'সেল্ফ-প্রমোটার' বা 'আত্ম-প্রচারকারী' বলে উল্লেখ করেছে যুক্তরাজ্যের একটি গবেষণা। সেটি বলছে, প্রকৃতার্থে কাজ না করেও কেবল যোগাযোগ কৌশল বলে অফিসে বড় কর্তাদের চোখে ভালো কর্মী হন তারা। অনেক ক্ষেত্রে দেখা যায়, যারা মনপ্রাণ দিয়ে কাজ করেন; তাদের চেয়ে আত্ম-প্রচারকারীরা এগিয়ে থাকেন।

কিন্তু যুক্তরাজ্যের সাম্প্রতিক এই গবেষণা বলছে, এসব ব্যক্তিরা দিন শেষে 'টিম-ওয়ার্ক' বা 'দলগত কাজে' আদতে কোনো উপকারেই আসে না। তাই এই আত্ম-প্রচারকারী ব্যক্তিদের চিহ্নিত করা হচ্ছে মূলত, 'কাজের চেয়ে আওয়াজ বেশি' দেয়া ব্যক্তি হিসেবে।

'প্রোডাক্টিভিটি স্টাডি' বা কর্মোৎপাদন সক্ষমতা বিষয়ক এই গবেষণার আওতায় ছিল যুক্তরাজ্যের ২৮টি প্রতিষ্ঠানের কর্মীরা। এতে একদল কর্মীকে চিহ্নিত করা হয়েছে, যাদের দূর থেকে দেখলে মনে হয়; তারা নিজের কাজে 'হাইলি এনগেজড' বা 'অতি গভীরভাবে সম্পৃক্ত' কিন্তু নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করলে বোঝা যায়, এসব ব্যক্তি আসলে 'সেল্ফ-প্রমোটার' বা 'আত্ম-প্রচারকারী' মাত্র। হাল্ট ইন্টারনেশনাল বিজনেস স্কুলের গবেষণাটিতে টিম-ওয়ার্ক বা দলগত কাজে কর্মীদের সম্পৃক্ততার বিভিন্ন স্তর খতিয়ে দেখা হয়েছে।

এতে সাতটি ভিন্ন ধরনের কর্মক্ষেত্রের কর্মীদের নমুনা হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করা হয়। এর মধ্যে স্বাস্থ্য, সরকার পরিবহন থেকে শুরু করে অলাভজনক প্রতিষ্ঠানও রয়েছে।

কর্পোরেট সংস্কৃতি

গবেষণাটি বলছে, প্রতি ৫টি টিমের একটিতে এই ধরনের 'প্রহেলিকা' বা ধাঁধা পাওয়া গেছে। যেখানে দেখা গেছে, কর্মীরা খুবই সম্পৃক্ত। কিন্তু প্রকৃতার্থে তাদের উৎপাদশীলতা কম। ধরনের টিমগুলোর দিকে গবেষকেরা নিবিড়ভাবে লক্ষ্য করে দেখেছেন, তারা আসলে যত বুলি দেন, তত কাজ করেন না। যত না কাজ করেন এর চেয়ে বেশি আওয়াজ দেন। অর্থাৎ এই ধরনের ব্যক্তিরা মিটিংগুলোতে ঘড়ি ধরে উপস্থিত হয়। অফিসের কর্তাব্যক্তিদের সঙ্গে আলাপে জড়িত হয়। তাদের কথা যুক্তিতে সায় দেয়। এসব করার মাধ্যমেই তারা কর্তাব্যক্তিদের চোখে পড়ে। কর্মক্ষেত্রে ভালো কাজের সুনাম পায়। এমনকি পদোন্নতিও পেয়ে যান। ধরনের ব্যক্তিদের এই গবেষণায় 'সুডো-এনগেজড' বা কাজে গভীরভাবে সম্পৃক্ত হওয়ার ভানধারী হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে।

কাজ না করেও পুরস্কার পদোন্নতি

'আত্ম-প্রচারকারী' অনেক কাজে ডুবে থাকার ভানধারী ব্যক্তিদের এই গবেষণার জ্যেষ্ঠ গবেষক এমি আর্মস্ট্রং 'স্বার্থপর' বলে বর্ণনা করেছেন। তার মতে, ধরনের ব্যক্তিরা দলগত কাজকে অবমূল্যায়ন করে। দিন শেষে তারা আসলে কাজে ক্ষতিকর প্রভাব ফেলে। তবে কাজে ব্যস্ততা দেখানোর ছদ্মবরণ নেয়া এই কর্মীরাও অনেক সময় অফিসে বেশ প্রশংসা, সুনাম পদোন্নতি পেয়ে যায়।

এই ধরনের কর্মীরা অফিসে পুরস্কৃত হওয়ার বিষয়টিকে এমি আর্মস্ট্রং 'অত্যন্ত হতাশাব্যঞ্জক' বলে উল্লেখ করেছেন। তিনি ব্যাখ্যা করেছেন, আত্ম-প্রচারকারী কর্মীরা নিজের সুবিধার্থে অফিসের কর্তা ব্যক্তির সামনে অনেক কিছুই করে। দিন শেষে তারা সহকর্মীদের খুব কম বিশ্বাস করে। কাজের ক্ষেত্রেও কম সহযোগিতা করতে দেখা যায়।

ধরনের ব্যক্তিদের কারণে কাজের পরিবেশ বিনষ্ট হতে পারে। অন্যরা দলগত কাজে আগ্রহ হারিয়ে ফেলতে পারে বলেও মনে করেন এমি আর্মস্ট্রং।