ঢাকা, ২৯ মার্চ শুক্রবার, ২০২৪ || ১৫ চৈত্র ১৪৩০
good-food
৮৮১

এই দুঃসময়ে একটি পরামর্শ

ড. মুনীরউদ্দিন আহমদ

লাইফ টিভি 24

প্রকাশিত: ২২:৩০ ১২ জুন ২০২০  

পৃথিবী বদলে গেছে। আমরাও ক্রমশ বদলে গেছি এবং যাচ্ছি। করোনা সংক্রমণের ভয়ে সবাই আতংকিত। অহরহ মৃত্যু সংবাদ শুনছি। ভয়ে থাকি এরপর কার শোক সংবাদ শুনব বলে।

 

আমি গত কয়েক বছর ধরে একাধিক প্রবন্ধে লিখেছিলাম - একটি ভয়াবহ মহামারী আবির্ভাবের সময় হয়ে গেছে। জীবাণু সংক্রমণের ওপর গভীর পড়াশোনা করতে গিয়ে আমার এরকম একটি ধারণা জন্মেছিল। আমি এটাও লিখেছিলাম- নতুন কোনো ভাইরাসের কারণে যদি ভয়াবহ প্যান্ডেমিক দেখা দেয়, বর্তমান পরিস্থিতিতে পৃথিবীর কোনো দেশের পক্ষে তা সুষ্ঠুভাবে মোকাবিলা করা সম্ভব হবে না। বিশেষ করে অনুন্নত ও উন্নয়নশীল দেশগুলো মহাসমস্যায় পড়ে যাবে। তার কারণ ভঙুর স্বাস্থ্যসেবা ব্যবস্থা।

 

বাংলাদেশের লোকসংখ্যা অনুপাতে আমাদের কয়টি সরকারি হাসপাতাল বা ক্লিনিক আছে হিসাব করে দেখুন তো? করোনা ক্রাইসিসের আগেও বাংলাদেশের হাসপাতালগুলোতে ইনডোর আউটডোর রোগীদের ভিড় ছিল ভয়াবহ। সংকটাপন্ন রোগীদের পক্ষেও ভালো একটি হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার সুযোগ পাওয়া ছিল রীতিমতো ভাগ্যের ব্যাপার। আর অভিজ্ঞ ডাক্তার ও নার্সের সেবা পাওয়া ছিল আরও দুরূহ ব্যাপার।

 

আর এখন? শুধু করোনা রোগী নয়, অন্য রোগে আক্রান্ত সংকটাপন্ন রোগীরা পর্যন্ত হাসপাতালে গিয়ে এখন ভর্তি হওয়ার সুযোগ পাচ্ছে না। টেস্ট ছাড়া অনেক হাসপাতালে কোনো রোগীই ভর্তি করছে না। বিভিন্ন হাসপাতালে দৌড়াদৌড়ি করতে গিয়ে করোনা রোগী মারা যাচ্ছে। বড় মাপের মানুষ না হলে, বড় মাপের মানুষের সুপারিশ না থাকলে নাকি হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার সম্ভাবনা জিরো।


এদেশে অসংখ্য ব্যবসায়ী, র‌্যাব, পুলিশ, আনসার, বিজেবি, সেনাবাহিনী, নৌবাহিনী, আকাশবাহিনী, আমলা, কামলা, ব্যাংকার, শিক্ষক, ইন্জিনীয়র, বড় নেতা, ছোট নেতা তৈরি হয়েছে এবং এদের তৈরিতে ও সাজসরঞ্জাম সরবরাহ করতে গিয়ে লাখো-কোটি টাকার বাজেট বরাদ্দ রাখা হয় প্রতি বছর। অথচ দেখুন দেশের ১৭ কোটি লোকের জন্য পর্যাপ্ত চিকিৎসক নেই, নার্স নেই, হাসপাতাল নেই, ক্লিনিক নেই। বাজেটে বরাদ্দ থাকে ন্যূনতম। সেজন্য আমি আমার প্রবন্ধে প্রায় লিখতাম - এদেশে রোগ হওয়ার চেয়ে মরে যাওয়া অনেক সুখের, যদিও কথাটি অনেক দুঃখের।

 

এখন কী করবেন? কারণ সময় ভালো নয়। কে বাঁচবে, কে মরবে কেউ জানে না। আমরা পরিবার পরিজন নিয়ে এক অনিশ্চিত ভবিষ্যতের মুখোমুখি।


রোগ হলে আপনি স্বাস্থ্যসেবা পাবেন এবং সুস্থ হবেন তার নিশ্চয়তা এখন আপনাকে কেউ দেবে না। তবে একজন দিতে পারেন। তিনি মহান আল্লাহ! আল্লাহর কাছে সারাক্ষণ দোয়া করুন যাতে আপনি সুস্থ থাকেন, কোনো রোগবিমারিতে যেন আক্রান্ত না হন, এমন কি সেটা যেন সাধারণ সর্দি কাশি বা জ্বরও না হয়। কায়মনোবাক্যে এবাদত করুন, সেজদা করুন, মহান আল্লাহর কাছে সাহায্য চান। তিনি ছাড়া এ মুহূর্তে আমাদের রক্ষা করার আর কেউ নেই।

মুক্তমত বিভাগের পাঠকপ্রিয় খবর