ঢাকা, ০৬ অক্টোবর সোমবার, ২০২৫ || ২১ আশ্বিন ১৪৩২
good-food
৪০

একীভূত ৫ ব্যাংকের নাম হচ্ছে ‘ইউনাইটেড ইসলামী ব্যাংক’

লাইফ টিভি 24

প্রকাশিত: ০১:৪২ ৪ অক্টোবর ২০২৫  

দেশের ব্যাংকিং খাতে অভূতপূর্ব সিদ্ধান্ত নিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। ইতিহাসে প্রথমবারের মতো শেয়ারবাজারের তালিকাভুক্ত পাঁচটি শরিয়াহভিত্তিক ব্যাংক একীভূত হতে যাচ্ছে। একীভূতকরণের পর যার নাম হবে ‘ইউনাইটেড ইসলামী ব্যাংক’। 

 

এর আগে প্রতিটি ব্যাংকে একজন করে প্রশাসক নিয়োগের ঘোষণা দিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। ইতোমধ্যে তাদের তালিকা চূড়ান্ত করা হয়েছে। 

 

এর মধ্যে নির্বাহী পরিচালক মো. শওকাতুল আলম এক্সিম ব্যাংক, নির্বাহী পরিচালক মুহাম্মদ বদিউজ্জামান দিদার সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংক, নির্বাহী পরিচালক মো. সালাহ উদ্দিন ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংক, বাংলাদেশ ব্যাংকের সিলেট অফিসের পরিচালক মোহাম্মদ আবুল হাসেম ইউনিয়ন ব্যাংক এবং টাঁকশালের পরিচালক মো. মাকসুদুজ্জামান গ্লোবাল ইসলামী ব্যাংকের প্রশাসক হিসেবে দায়িত্ব পেয়েছেন। প্রতিটি ব্যাংকে প্রশাসকের সঙ্গে একজন অতিরিক্ত পরিচালক, একজন যুগ্ম পরিচালক এবং একজন উপপরিচালক থাকবেন।

 

এক বিবৃতিতে বাংলাদেশ ব্যাংক জানিয়েছে, আইনি প্রক্রিয়া মেনে শিগগিরই প্রজ্ঞাপন জারি করা হবে। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র আরিফ হোসেন খান বলেন, “এরই মধ্যে একীভূতকরণের প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। প্রশাসক নিয়োগের বিষয়টি পরিচালনা পর্ষদের সভায় তোলা হচ্ছে। প্রজ্ঞাপন জারির পরই প্রশাসকরা দায়িত্ব গ্রহণ করবেন।”

 

তবে পাঁচটি শরিয়াহভিত্তিক ব্যাংকের একীভূতকরণ নিয়ে উদ্বিগ্ন দেশের অর্থনীতিবিদরা। তারা মনে করেন, প্রশাসকের সঙ্গে সুশাসন বজায় রেখে ব্যাংকগুলো কীভাবে চলবে তা চিন্তার বিষয়।

 

বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ ড, জাহিদ হোসেন বলেন, “এটি একটি পরীক্ষামূলক পদক্ষেপ। যদি এটি কাজ করে তাহলে ঠিক আছে। কিন্তু যদি কাজ না করে তাহলে আরও জটিলতা তৈরি হবে। দুর্বল ব্যাংকগুলোর উচিত সংকট থেকে বেরিয়ে আসার জন্য নিজস্ব পথ তৈরি করা।”

 

পাঁচটি শরিয়াহভিত্তিক ব্যাংকের একীভূতকরণের নেপথ্যে রয়েছে দীর্ঘদিনের অনিয়ম ও দুর্নীতি। হাজার হাজার কোটি টাকা আত্মসাৎ ও বিদেশে পাচার হওয়ায় সেগুলো ভয়াবহ খেলাপিতে জর্জরিত।

 

বর্তমানে পাঁচ ব্যাংকের সম্মিলিত আমানত প্রায় ১ লাখ ৪৬ হাজার কোটি টাকা। আর ঋণ ১ লাখ ৯২ হাজার ৭৮৬ কোটি টাকা। এর মধ্যে ৭৬ শতাংশই খেলাপি। ইউনিয়ন ব্যাংকে খেলাপি ঋণ ৯৮ শতাংশ, ফার্স্ট সিকিউরিটিতে ৯৭, গ্লোবালে ৯৫, সোশ্যাল ইসলামীতে ৬২ দশমিক ৩ এবং এক্সিমে ৪৮ দশমিক ২ শতাংশ। 

 

বিদ্যমান সংকট কাটাতে বাংলাদেশ ব্যাংকের হিসাবে দরকার ৩৫ হাজার ২০০ কোটি টাকা। এর মধ্যে সরকার ২০ হাজার ২০০ কোটি, আমানত বিমা ট্রাস্ট সাড়ে ৭ হাজার এবং প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীরা দেবেন সাড়ে ৭ হাজার কোটি টাকার শেয়ার।