ঢাকা, ২৩ এপ্রিল মঙ্গলবার, ২০২৪ || ১০ বৈশাখ ১৪৩১
good-food
৯৭৬

এমন পোড়া মৃত্যু কেনো বারবার ?

লাইফ টিভি 24

প্রকাশিত: ২২:০২ ২৯ মার্চ ২০১৯  

কি লিখব? লিখে কি লাভ? কাকে লিখব? কি হবে লিখে? কে শোনে কার কথা?

উদ্ধার কর্মিদের পথরোধ করে রাস্তায় ভিড় জমিয়ে যে জাতি দেখে আগুনে মানুষ পোড়া তান্ডব!

পুড়ছে মানুষ, পুড়ুক মানবতা। ভিড় করে কৌতুহল দৃষ্টিতে দেখতে হবে এবং মোবাইল ক্যামেরায় ছবি তুলতে হবে। বিভৎস অগ্নি দৃশ্যের ছবি তুলে ফেসবুকে পোষ্ট দিতে হবে।

অন্যদিকে পোড়া মানুষের মৃত্যু সংখ্যা চিরদিন যা হয় যেভাবে হয় এবারও তাই হবে। এর কোনো হেরফের হবেনা। কদিন চ্যানেল চ্যানেল টকশোর যন্ত্রণায় জাতির কর্ন ঝালাপালা হবে। রাজনৈতিক নেতা কর্মিদের সান্তনার বাণী গিলতে হবে।

ঘাতক? যেমন ছিলেন তেমনই থাকবেন।

ব্যাংক ও বিমার টাকায় আবার ঘুরে দাঁড়াবেন সব মালিক। আবার নব উদ্যোমে সেজে উঠবে প্রতিটি ফ্লোর। শুধু দিনে দিনে পুরনো থেকে পুরনো হবে পোড়া মানুষের কবরগুলো। একদিন কবরের বাঁশগুলো ক্ষয়ে ক্ষয়ে ধ্বসে পড়বে প্রতিটি কবর। এই বিভৎস মৃত্যুর জন্যই যেনো এখানে তাদের জন্ম।

যে মা অফিস থেকে ফিরে গিয়ে সন্তানকে দুধ খাওয়ানর কথা ভেবে বাঁচার শেষ আর্তনাদ করে মরেছেন, সে মা আর পোড়া স্তন নিয়ে ফিরে আসবে না অভুক্ত শিশুর কাছে। তার সব স্বপ্ন গতকাল শহরের সুউচ্চ ভবনের আগুনযুক্ত ফ্লোরে পুড়ে শেষ হয়ে গেছে!

মায়ের ওষুধ, বাবার খাবার নিয়ে যে যুবক সন্তানের সন্ধ্যায় ফেরার কথা ছিল, সেও আর কোনোদিন ফিরবে না অসহায় বাবা-মার কাছে।

স্ত্রীর আবদার নিয়ে স্বামী আর কখনোই আগুনে পোড়া দগ্ধ শরীর নিয়ে ফিরে আসবেনা প্রিয়তমার কাছে। বাবার ফিরার পথ চেয়ে যে শিশু বসেছিল, তার অপেক্ষার জলভরা চোখের সামনে বাবা আর কোনোদিন আসবেনা।

মাইলের পর মাইল দূরে থেকেও যে সোনার সংসারগুলো বনানীর আগুনের ঝাপটাই পুড়ে ছারখার হয়ে গেলো, কেউ তাদের খোঁজ নেবেনা কোনোদিন। নিমতলি ভুলে, চুড়িহাট্টি, চুড়িহাট্টি ভুলে, বনানী!

এরপর?

অপেক্ষা। আবার কোনো নতুন প্রাণের শেষ পরিনতি। আবার কোনো নতুন গণমৃত্যু আর ধ্বংসযজ্ঞের ইতিহাসের!

 

লেখক : জাতীয় পুরষ্কারপ্রাপ্ত চলচ্চিত্রকার