করোনা মুক্তির পরের চ্যালেঞ্জগুলো কী?
লাইফ টিভি 24
প্রকাশিত: ২০:৫৮ ৩ জুলাই ২০২০
কোভিড-১৯ অর্থাৎ করোনাভাইরাসে আক্রান্তের পর পোহাতে হয় নানা ঝক্কি-ঝামেলা। কিন্তু এসব পেরিয়ে দীর্ঘ চিকিৎসার শেষে রোগ সেরে ওঠার পরও থেকে যায় নানা চ্যালেঞ্জ।
এ ব্যপারে বিবিসি’র এক প্রতিবেদনে জানানো হয়, নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে ডাক্তাররা সাইমন ফ্যারেলকে ওষুধ দিয়ে সংজ্ঞাহীন করে রেখেছিলেন কোভিড-১৯ চিকিৎসার জন্য। সেই কৃত্রিম কোমা থেকে জেগে ওঠার পর সাইমনের মনে আছে তিনি তার অক্সিজেন মাস্কটা ছিঁড়ে ফেলার জন্য প্রাণপণ চেষ্টা করেছিলেন।
দশদিন তাকে রাখা হয়েছিল নিবিড় পরিচর্যায়। তাকে নি:শ্বাস নিতে হচ্ছিল ভেন্টিলেটারের মাধ্যমে।
"আমি অক্সিজেন মুখোশটা টেনে আমার মুখ থেকে সরিয়ে দিচ্ছিলাম আর নার্স বারবার সেটা পরিয়ে দিচ্ছিল," বলছিলেন তিনি।
ডাক্তাররা যখন তাকে কোমা থেকে জাগান, তখন কোভিড-১৯এর সবচেয়ে মারাত্মক অবস্থা তিনি কাটিয়ে উঠেছেন, কিন্তু তার ক্ষতিগ্রস্ত ফুসফুসের তখনও স্বাভাবিকভাবে শ্বাস নেবার ক্ষমতা ছিল না। তার অক্সিজেনের দরকার ছিল।
দুই সন্তানের বাবা ৪৬ বছরের সাইমন তখন মারাত্মক প্রলাপের মধ্যে। তার শরীরে যে অক্সিজেনের দরকার সেটা বোঝার ক্ষমতা তিনি হারিয়ে ফেলেছিলেন। তার মনে হচ্ছিল এসবের কোন দরকার নেই।
"আমাকে ঠেকান দেখি," ইংল্যান্ডে বার্মিংহাম কুইন এলিজাবেথ হাসপাতালের নার্সকে তিনি বারবার একথা বলছিলেন তার মনে আছে। তার নার্স বলছিলেন, আপনি শান্ত না হলে আপনার দু হাতে আমরা মেডিকেল গ্লাভস পরিয়ে দেব।
"শেষ পর্যন্ত আমার দু হাত তারা টেপ দিয়ে বেঁধে দিয়েছিল। আমি দস্তানাগুলোও ছিঁড়ে ফেলার চেষ্টা করছিলাম। আমি কামড়ে দস্তানা ছিঁড়েখুঁড়ে ফেলেছিলাম। তাদের আবার নতুন দস্তানা দিয়ে আমার হাত বেঁধে দিতে হয়েছিল।"
কোভিড-১৯ যাদের গুরুতরভাবে অসুস্থ করেছে, যাদের বেশ কিছুদিন ভেন্টিলেটারে থাকতে হয়েছে এবং যাদের কড়া মাত্রায় ঘুমের ওষুধ দিয়ে রাখতে হয়েছে, সেসব রোগীর মধ্যে আইসিইউ-তে এমন লক্ষণ প্রায়ই দেখা গেছে।
হাসপাতালে দীর্ঘদিন ভেন্টিলেটারে থাকার পর তৈরি হতে পারে নানাধরনের শারীরিক ও মানসিক জটিলতা
লন্ডনের রয়াল ফ্রি হাসপাতালে নিবিড় পরিচর্যা ইউনিটের ঊর্ধবতন চিকিৎসক ডা. কুলওয়ান্ত ধাদওয়াল বলছেন, "এধরনের রোগীদের মধ্যে মারাত্মক প্রলাপ বা বিকার, বিভ্রান্তি এবং অস্থিরতা আমরা দেখছি।"
"সাধারণত কারো যদি অস্ত্রোপচার হয় বা সাধারণ নিউমোনিয়া রোগীকে সংজ্ঞাহীন করা হয়, তারপর জ্ঞান ফিরলে তারা এতটা বিভ্রান্ত বা অস্থির অবস্থায় থাকে না। এই কোভিড-১৯ রোগীদের ভেন্টিলিটার থেকে বের করার পর তারা স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরতে অনেক বেশি সময় নিচ্ছে।"
চিকিৎসকরা বলছেন, এ কাজটা সফলভাবে করা গেলেও, সেখান থেকেই শুরু হচ্ছে সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ। তাদের শারীরিক এবং মানসিকভাবে সুস্থ করে তোলার দীর্ঘ প্রক্রিয়া।
কোভিড-১৯ থেকে সেরে ওঠা রোগীদের আবার স্বাভাবিক জীবনে ফিরিয়ে নিয়ে যাওয়া বিশাল একটা চ্যালেঞ্জ।
লেস্টার বিশ্ববিদ্যালয়ের শ্বাসতন্ত্র এবং হৃদরোগ পুনর্বাসন বিভাগের অধ্যাপক স্যালি সিং বলছেন, "অনেকেই মনে করেন রোগীকে সারিয়ে তোলাটাই বড় কথা, ফলে রোগী আসলে স্বাভাবিক জীবনে ফিরতে পারছে কিনা, সেটাকে অগ্রাধিকার দেয়ার কথা আমরা হয়ত ভাবছি না।"
একটা বিশাল সংখ্যক জনগোষ্ঠী কোভিড আক্রান্ত হয়েছে। কাজেই এদিকটা উপেক্ষা করলে চলবে না।
বিশ্বে লাখো লাখো মানুষ এখন এই দীর্ঘ পথ পাড়ি দিচ্ছে।
অনেকে মৃত্যুর কাছাকাছি পৌঁছে ইনটেনসিভ কেয়ারে চিকিৎসা নিয়েছে, অনেককে হয়ত অতটা কঠিন সময় পার করতে হয়নি, অবস্থা গুরুতর পর্যায়ে পৌঁছনর আগে হাসপাতালে অক্সিজেন চিকিৎসা তাদের সেরে উঠতে সাহায্য করেছে। কিন্তু কোভিড-১৯ এদের সবার জীবনকে বদলে দিয়েছে।
কিন্তু গুরুতর অসুস্থ হয়ে যাদের নিবিড় পরিচর্যায় যেতে হয়েছে, বিশেষজ্ঞরা বলছেন, দীর্ঘমেয়াদে তাদের পুনর্বাসন কীভাবে হবে, সেটা তারা কোমা থেকে জেগে ওঠার আগেই শুরু করা উচিত। শারীরিক ও মানসিক সুস্থতার জন্য তাকে সাহায্য করার কাজটা সেই সময় থেকেই শুরু করতে হবে।
তারা বলছেন, যখন গুরুতরভাবে আক্রান্তরা সংজ্ঞাহীন অবস্থায় আছে, সে অবস্থাতেই নার্স ও বিশেষজ্ঞদের রোগীর পেশী ও হাড়ের জয়েন্টগুলো সচল রাখতে বিশেষ ব্যায়াম করাতে হবে। নাহলে দীর্ঘসময় সংজ্ঞাহীন অবস্থায় থাকার কারণে তার শরীর খুব শক্ত হয়ে যাবে।
ইংল্যান্ডে প্লিমাথ শহরের ইউনিভার্সিটি হাসপাতালের আইসিইউ ইউনিটের বিশেষজ্ঞ নার্স কেট ট্যানটাম বলছেন, "যেমন, কাউকে যদি ভেন্টিলেটারে রাখা হয়, বা তার বিভিন্ন অঙ্গ যন্ত্রের সাহায্যে কৃত্রিমভাবে চালু রাখা হয়, এমনকী পাশাপাশি তাকে বাঁচিয়ে রাখতে যদি নানাধরনের ওষুধ তার শরীরে বিভিন্ন নলের মাধ্যমে প্রবেশও করানো হয়, তেমন অবস্থাতেও তাদের ব্যায়াম করার বিশেষ সাইকেল যন্ত্রে তোলা সম্ভব।
"যন্ত্রে রোগীর পাদুটো বসিয়ে দিলে বাকি কাজটা যন্ত্রই করবে। তাতে করে রোগীর পেশী, হাড়, অস্থিমজ্জা সব কিছু সচল রাখা যাবে, সেগুলো কঠিন হয়ে যাবে না।"
ডা. কুলওয়ান্ত ধাদওয়াল বলছেন, আইসিইউতে সংজ্ঞাহীন বা কড়া ওষুধ দিয়ে ঘুম পাড়িয়ে রাখা রোগীদের সাথে তার সহকর্মীরা অনবরত কথা বলেন। তাদের বলা হয় তারা কোথায় আছে, তাদের নিয়ে কী করা হচ্ছে, তাদের আশ্বাস দেয়া হয় যে তারা নিরাপদে আছে।
"তাদের যখন জ্ঞান ফিরবে তখন রোগীর মানসিক অবস্থার জন্য এগুলো খুবই জরুরি। কোন কোন রোগী জ্ঞান ফেরার পর এমনও বলেছেন, 'ও আপনার কণ্ঠ আমার মনে আছে', তারা কিছু স্মৃতি নিয়ে জেগে ওঠে," বলছেন ডা. ধাদওয়াল।
তবে কোভিড-১৯ রোগীদের ক্ষেত্রে বিষয়টা অবশ্যই অনেক বেশি কঠিন ও জটিল হয়, কারণ আইসিইউ-তে কোভিড রোগীদের অনেককেই ভেন্টিলেটারে রাখতে হয় দীর্ঘ সময় ধরে।
অনেকেই যখন জ্ঞান ফিরে পান, যন্ত্র থেকে যখন তাদের বের করে আনা হয়, তখন তারা ভীষণরকম দুর্বল থাকেন।
"ধরুন একজন রোগী সংজ্ঞাহীন অবস্থায় থাকছেন ৪০ দিন বা তারও বেশি। তাদের জন্য ভেন্টিলেটার থেকে বেরিয়ে স্বাভাবিকভাবে শ্বাস প্রশ্বাস নিতে সময় লেগে যায় ছয় সপ্তাহ, কখনও কখনও তার থেকেও বেশি। এরপর তাদের উঠে দাঁড়ানো, হাঁটাচলা শুরু করা, সব মিলিয়ে লম্বা সময়ের ব্যাপার," বলছেন ডা. কুলওয়ান্ত ধাদওয়াল।
তবে কেউ কেউ "বিস্ময়কর ভাবে" তাড়াতাড়ি সেরে উঠছেন, এমনও দেখছেন চিকিৎসকরা।
ডাক্তাররা বলছেন, কোভিড-১৯-এর মত মারাত্মক ভাইরাস থেকে সেরে ওঠার পর অন্যতম বড় একটা চ্যালেঞ্জ হল খুব মারাত্মক প্রদাহ কাটিয়ে ওঠা।
অনেক রোগীর জন্য বড় সমস্যা হয় নি:শ্বাস নেবার জন্য তাদের মুখের ভেতর দিয়ে নল ঢোকাতে না পারার কারণে। কোভিড আক্রান্ত হলে গলার নালী, স্বরযন্ত্র এবং আশপাশের অংশগুলো খুব ফুলে যায়। ফলে তাদের গলা দিয়ে নল ঢোকানো কঠিন হয়। সেক্ষেত্রে ডাক্তারদের গলার কাছে ফুটো করে সেখান দিয়ে নল শ্বাসনালীতে প্রবেশ করাতে হয়, যেটা ভেন্টিলেটারের সাথে যুক্ত করতে হয়।
"এই ফুটো করার কারণে গলায় যে ক্ষত সৃষ্টি হয়, সেটারও পরবর্তীতে দেখাশোনার দরকার পড়ে," ব্যাখ্যা করছিলেন ইংল্যান্ডেরই আরেকটি হাসপাতালে নিবিড় পরিচর্যার দায়িত্বে থাকা ডাক্তার কার্ল ওয়াল্ডমান।
সব মিলিয়ে সেরে ওঠার গোটা প্রক্রিয়াটাই অনেক লম্বা এবং সময়সাপেক্ষ হয়ে দাঁড়ায়।
- যুক্তরাষ্ট্রে প্রথম বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত বিচারপতি সোমা সাইদ
- শিগগিরই অবসর নেবো, সেদিন কাঁদবোও: রোনালদো
- যাকে ভয় পেতেন, তার নায়িকা মৌ খান
- অ্যাপল–স্যামসাং নয়, সেরা ক্যামেরা কোন ফোনগুলোর
- প্রথম মেট্রোরেল প্রকল্পের মেয়াদ বাড়ল
- এইচএসসি পাসে ২০০ এসআর নেবে আবুল খায়ের গ্রুপ
- সেন্টমার্টিন ভ্রমণের নতুন ওয়েবসাইট
- ইতিহাসের প্রথম নির্বাচন: কবে ও কোথায়?
- ওমর সানীকে ‘স্যরি’ বললেন মৌসুমী
- নতুন দলের হয়ে সেরাটা দিতে মুখিয়ে সাকিব
- ব্যালটে মামদানির নাম দুইবার, জেতানোর চক্রান্ত বলছেন মাস্ক
- মেট্রোরেলে চাকরি পাচ্ছেন নিহত কালামের স্ত্রী
- বিএনপিতে যোগ দিলেন মুগ্ধের ভাই স্নিগ্ধ
- নাসীরুদ্দীনের বিরুদ্ধে যুবদলের নয়নের মামলা, তদন্তে ডিবি
- এক চামচ অলিভ অয়েলেই সমাধান
- বাংলাদেশ দলের ব্যাটিং কোচের দায়িত্বে আশরাফুল
- ক্ষমা চাইলেন শাহরুখ
- বিএনপি জিতলে প্রধানমন্ত্রী কে হবেন?
- যারা পেলেন বিএনপির মনোনয়ন [তালিকাসহ]
- বাজার কাঁপাতে আসছে রয়্যাল এনফিল্ডের ই-বাইক
- সাগরে নতুন লঘুচাপ, পাঁচ দিন বৃষ্টির আভাস
- নির্বাচনে জিতলে ‘দুই বাংলা’ এক করার ঘোষণা বিজেপি নেতার
- শাপলা কলি প্রতীকে ৩০০ আসনে প্রার্থী দেবে এনসিপি
- নাক ডাকা কমানোর সহজ কিছু টিপস
- শাকিব খান চমকের বড় উদাহরণ: চঞ্চল চৌধুরী
- প্রোটিয়াদের হৃদয় ভেঙে প্রথম বিশ্বকাপ জিতল ভারতের মেয়েরা
- বাংলাদেশের জাতীয় সংগীত গেয়ে ভারতে তোপের মুখে কংগ্রেস নেতা
- আওয়ামী লীগ ছাড়া নির্বাচনে অংশ নেবে না কোটি মানুষ:রয়টার্সকে হাসিনা
- ঐকমত্য কমিশন প্রতারণা করেছে: ফখরুল
- ওজন কমবে ভাতের মাড়ে
- বিএনপি জিতলে প্রধানমন্ত্রী কে হবেন?
- নাসীরুদ্দীনের বিরুদ্ধে যুবদলের নয়নের মামলা, তদন্তে ডিবি
- ইতিহাসের প্রথম নির্বাচন: কবে ও কোথায়?
- সাগরে নতুন লঘুচাপ, পাঁচ দিন বৃষ্টির আভাস
- শাপলা কলি প্রতীকে ৩০০ আসনে প্রার্থী দেবে এনসিপি
- বাজার কাঁপাতে আসছে রয়্যাল এনফিল্ডের ই-বাইক
- নাক ডাকা কমানোর সহজ কিছু টিপস
- যারা পেলেন বিএনপির মনোনয়ন [তালিকাসহ]
- এক চামচ অলিভ অয়েলেই সমাধান
- ওমর সানীকে ‘স্যরি’ বললেন মৌসুমী
- শাকিব খান চমকের বড় উদাহরণ: চঞ্চল চৌধুরী
- ক্ষমা চাইলেন শাহরুখ
- নির্বাচনে জিতলে ‘দুই বাংলা’ এক করার ঘোষণা বিজেপি নেতার
- ব্যালটে মামদানির নাম দুইবার, জেতানোর চক্রান্ত বলছেন মাস্ক
- বাংলাদেশ দলের ব্যাটিং কোচের দায়িত্বে আশরাফুল
- নতুন দলের হয়ে সেরাটা দিতে মুখিয়ে সাকিব
- প্রোটিয়াদের হৃদয় ভেঙে প্রথম বিশ্বকাপ জিতল ভারতের মেয়েরা
- বিএনপিতে যোগ দিলেন মুগ্ধের ভাই স্নিগ্ধ
- মেট্রোরেলে চাকরি পাচ্ছেন নিহত কালামের স্ত্রী
- শিগগিরই অবসর নেবো, সেদিন কাঁদবোও: রোনালদো


