ঢাকা, ১৯ এপ্রিল শুক্রবার, ২০২৪ || ৫ বৈশাখ ১৪৩১
good-food
৫৩৩

করোনার ভয়াবহ ছোবল : একদিনে ১৯ মৃত্যু, আক্রান্ত ১১৬২

লাইফ টিভি 24

প্রকাশিত: ১৬:২১ ১৩ মে ২০২০  

প্রাণঘাতি করোনাভাইরাস মারাত্মক ছোবল হেনেছে দুনিয়াজুড়ে। বাংলাদেশে ভয়ংকর এ ভাইরাস সংক্রমণে  ২৪ ঘণ্টায় আরো ১৯ জনের মৃত্যু হয়েছে। নতুন শনাক্ত হয়েছেন এক হাজার ১৬২ জন।

 

এ নিয়ে দেশে করোনায় এ পর্যন্ত মৃত্যু হয়েছে ২৬৯  জনের। আর সব মিলিয়ে শনাক্ত হয়েছেন ১৭ হাজার ৮২২ জন।

 

বুধবার (১৩ মে) স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের করোনাভাইরাস পরিস্থিতি নিয়ে সরকারি বুলেটিনে এসব তথ্য জানানো হয়েছে। বুলেটিন প্রকাশে অংশ নেন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. নাসিমা সুলতানা।

 

ডা. নাসিমা বলেন, গত ২৪ ঘণ্টায় করোনা সংক্রমণে দেশে আরো ১৯ জনের মৃত্যু হয়েছে। এঁরা পুরুষ ১২ জন এবং সাতজন নারী। মৃত্যুবরণকারীদের মধ্যে শূন্য থেকে ১০ বছরের মধ্যে একটি মেয়ে শিশুও রয়েছে। অন্যদের বয়স ৩১ থেকে ৪০ বছরের মধ্যে একজন, ৫১ থেকে ৬০ বছরের মধ্যে সাতজন, ৬১ থেকে ৭০ বছরের মধ্যে পাঁচজন এবং ৭১ থেকে ৮০ বছরের মধ্যে পাঁচজন।

 

১৯ জনের মধ্যে ঢাকা শহরের কয়েকটি হাসপাতালে মৃত্যুবরণ করেছেন ১৩ জন। এঁদের মধ্যে ১২ জনই ঢাকার। বাকি একজন পাবনার। বাকিদের নারায়ণগঞ্জে একজন, মুন্সিগঞ্জে একজন, খুলনা বিভাগের নড়াইলের একজন, চট্টগ্রাম বিভাগের চট্টগ্রামের দুইজন এবং কুমিল্লার একজন। এ নিয়ে দেশে করোনায় এ পর্যন্ত মৃত্যুবরণ করেছেন ২৬৯ জন।

 

এ ছাড়া গত ২৪ ঘণ্টায় সুস্থ হয়েছেন ২১৪ জন। এ পর্যন্ত সুস্থ হয়েছেন তিন হাজার ৩৬১ জন।

 

ডা. নাসিমা জানান, গত ২৪ ঘণ্টায় নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে সাত হাজার ৮৬২টি। আর পূর্বের নমুনাসহ পরীক্ষা করা হয়েছে সাত হাজার ৯০০টি। এর মধ্যে করোনা রোগী হিসেবে শনাক্ত করা হয়েছে এক হাজার ১৬২ জনকে। এ নিয়ে দেশে এ পর্যন্ত করোনা রোগী শনাক্ত হয়েছেন ১৭ হাজার ৮২২ জন।

 

জানানো হয়, করোনা সন্দেহে নমুনা পরীক্ষায় নতুন করে যুক্ত হয়েছে তিনটি ল্যাব। ঢাকায় বেড়েছে দুইটি এবং ঢাকার বাইরে একটি। ঢাকার দুটি হলো ইবনে সিনা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল ও প্রাভা হেলথ। আর ঢাকার বাইরে যেটি যুক্ত হয়েছে সেটি হলো শেখ হাসিনা মেডিক্যাল কলেজ জামালপুর। ফলে গত ২৪ ঘণ্টায় ৪১টি ল্যাবে নমুনা পরীক্ষা হয়েছে।

 

আইসোলেশন প্রসঙ্গে জানানো হয়, গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে আইসোলেশনে নেওয়া হয়েছে আরো ১৫০ জনকে। একইসময় আইসোলেশন থেকে ছাড় পেয়েছেন ৭৬ জন। বর্তমানে আইসোলেনশনে আছেন তিন হাজার ৪৩৫ জন। এ পর্যন্ত আইসোলেশন থেকে ছাড় পেয়েছেন এক হাজার ৩৩২  জন।

 

ডা. নাসিমা আরো জানান, সারা দেশে আইসোলেশন শয্যা সংখ্যা আট হাজার ৬৩৪টি। ঢাকা মহানগরীতে দুই হাজার ৯০০টি এবং ঢাকা সিটির বাইরে বিভিন্ন হাসপাতালে আছে পাঁচ হাজার ৭৩৪টি। এ ছাড়া ময়মনসিংহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ৫০০টি ও ময়মনসিংহ নার্সিং ডরমিটরিতে আরো ২০০টি আইসোলেশন শয্যা প্রস্তুতির কাজ চলছে।

 

এর বাইরেও রাজধানীর বসুন্ধরা কনভেনশন সিটিতে একটি হাসপাতাল এবং মহাখালীর ডিসিসি মার্কেটে আরেকটি হাসপাতাল প্রস্তুতির কাজ চলছে।

 

কোয়ারেন্টিন প্রসঙ্গেও তথ্য দেওয়া হয় বুলেটিনে। বলা হয়, গত ২৪ ঘণ্টায় হোম এবং প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টিনে এসেছেন দুই হাজার ৫৫৮ জন। একইসময় কোয়ারেন্টিন থেকে ছাড় পেয়েছেন দুই হাজার ৬৬২ জন। আর এ পর্যন্ত কোয়ারেন্টিনে গেছেন মোট দুই লাখ ২৭ হাজার ৬৪২ জন। আর এ পর্যন্ত কোয়ারেন্টিন থেকে ছাড় পেয়েছেন এক লাখ ৮২ হাজার ৩৬১ জন। ছাড়ের পর বর্তমানে হোম এবং প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টিনে আছেন ৪৫ হাজার ২২১ জন।

 

সারা দেশের জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টিনের জন্য প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা আরো দুটি বেড়েছে। বর্তমানে এই সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৬১৭টিতে। এর মাধ্যমে তাৎক্ষণিকভাবে ৩১ হাজার ১৬৫ জনকে সেবা প্রদান যাবে বলে জানানো হয় বুলেটিনে।

 

বুলেটিনে আরো জানানো হয়, গত ২৪ ঘণ্টায় স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের স্বাস্থ্য বাতায়ন এবং আইইডিসিআর'র হটলাইনে কল এসেছে এক লাখ ৩৭ হাজার ২৬টি। এসব কলে সবাইকে স্বাস্থ্য পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। এ নিয়ে এ পর্যন্ত হটলাইনে ৫০   লাখ ৬৫ হাজার ৫৫৬ জনকে স্বাস্থ্য পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।

 

গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত চিকিৎসকের সংখ্যা বেড়েছে আরো ১২ জন। এ নিয়ে এখন মোট প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত চিকিৎসকের সংখ্যা দাঁড়াল ১৫ হাজার ৭৩৩ জনে। এ ছাড়া বর্তমানে স্বেচ্ছাসেবক হিসেবে হটলাইনে চার হাজার ৭২ জন চিকিৎসক স্বাস্থ্য পরামর্শ দিয়ে যাচ্ছেন বলে বুলেটিনে জানানো হয়।