ঢাকা, ১৬ এপ্রিল মঙ্গলবার, ২০২৪ || ৩ বৈশাখ ১৪৩১
good-food
১৪১০

কোন ডালে পুষ্টি বেশি?

লাইফ টিভি 24

প্রকাশিত: ০১:৩০ ২২ ডিসেম্বর ২০২১  

ডালের সঙ্গে আমরা ওতপ্রোতভাবে জড়িত। ডাল হলো উদ্ভিজ্জ প্রোটিনের ভালো উৎস। এটা শরীরে প্রোটিনের চাহিদা পূরণ করে ও দীর্ঘক্ষণ পেট ভরা রাখে। এছাড়া ডাল নানা রকম খনিজ ও পুষ্টি উপাদান সমৃদ্ধ হওয়ায় তা শরীর সুস্থ রাখতে সহায়তা করে।

 

এই ডালের ব্যবহার এতো বেশি যে চালের পরেই এর স্থান। হরেক রকমের ডালের উপাদেয় রান্না। ভাতের সঙ্গে তো থাকছেই, রুটিতে ডাল না হলে চলেই না। হালুয়া, চর্চরি, খিচুড়ি, বিভিন্ন সবজির সঙ্গে ডালের প্রচলন রয়েছে। স্বাদের দিক থেকে বিভিন্ন পদের ডাল বিভিন্ন স্বাদের। মুগ, মসুর, ছোলা, অড়হর, মটর- এমন আরও অনেক রকম ডাল রয়েছে। ডালের যে পুষ্টি রয়েছে তা সবাই জানেন। কিন্তু কোন ডালে কি পুষ্টিগুণ রয়েছে তা কি জানেন? এবার ডালের পুষ্টিগুণ সম্পর্কে জেনে নিন-

 

মুগ ডাল

উচ্চ আঁশ ও উদ্ভিজ্জ প্রোটিনের ভালো উৎস এই ডাল। কাঁচা মুগ ডালে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে প্রোটিন, ভিটামিন-বি, পটাশিয়াম, ম্যাগনেশিয়াম, ফোলেট, ম্যাঙ্গানিজ, কপার, জিঙ্ক ও ফাইবার। তাই এই ডাল যেমন সুস্বাদু, তেমনই পুষ্টিকরও। মুগ ডাল হজম করা খুবই সহজ। তাই বিভিন্ন রোগে রোগীকে মুগ ডালের খিচুড়ি খাবারের পরামর্শ দেন ডাক্তাররা। গর্ভবতী মহিলাদের জন্যও মুগের ডাল খাওয়া খুবই উপকারী।

 

মসুর ডাল

মসুর ডালে প্রোটিন, পটাশিয়াম, ফাইবার, এসেনশিয়াল অ্যামাইনো অ্যাসিড, আয়রন, ভিটামিন-বি-১ প্রচুর পরিমাণে থাকায় এটি অত্যন্ত পুষ্টিকর। ১০০ গ্রাম রান্না করা মুসুর ডালে প্রায় ১১৬ ক্যালোরি থাকে। এছাড়া এতে ১১ শতাংশ ডায়েটারি ফাইবার, ৬৩ শতাংশ কার্বোহাইড্রেট, ২৫ শতাংশ প্রোটিন রয়েছে। গলা, অন্ত্রের বিভিন্ন রোগের ক্ষেত্রে উপকারী এবং হিমোগ্লোমিন বাড়ায় মসুর ডাল। ডায়াবেটিস রোগীদের জন্যও এই ডাল উপকারী। মসুর ডাল রক্তে শর্করা আর কোলেস্টেরলের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখতে সাহায্য করে। এছাড়াও এতে রয়েছে প্রোটিন ও খনিজ উপাদান।

 

অড়হর ডাল

অড়হর ডাল অত্যন্ত পুষ্টিকর। এই ডালে ক্যালসিয়াম, আয়রন, ম্যাগনেশিয়াম, ফলিক অ্যাসিড, ভিটামিন-বি আর পটাশিয়াম রয়েছে পর্যাপ্ত পরিমাণে। উচ্চ আঁশ ও প্রোটিন সমৃদ্ধ যা পেটভরা রাখে, ক্ষুধা কমায়, ওজন কমায় ও কোলেস্টেরলের মাত্রা কমাতে সহায়তা করে। এতে আছে ভিটামিন সি, ই, কে এবং বি-কমপ্লেক্স। এছাড়াও এতে ম্যাঙ্গানিজ, ফসফরাস, সোডিয়াম ও জিংক পাওয়া যায়।

 

ছোলার ডাল

ছোলার ডাল বা চানা ডালে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে প্রোটিন, আয়রন, জিঙ্ক, ম্যাঙ্গানিজ, ফাইবার, কপার, ফোলেট, মলিবডেনামের মতো জরুরি উপাদান। যেগুলো আমাদের শরীর-স্বাস্থ্যের জন্য অত্যন্ত জরুরি। এই ডাল যেমন সুস্বাদু, তেমনই পুষ্টিকর। ডায়াবেটিসের রোগীদের যদি ছোলার ডাল খাওয়ানো যায়, তাহলে ভাল ফল মেলে। আর ছোলার ডালে কোলেস্টেরলের পরিমাণও কম।

 

বিউলির ডাল

হজমের সমস্যা কমাতে বিউলির ডাল অত্যন্ত কার্যকর।  ভাতের সঙ্গে ছাড়াও পরোটা বা রুটির সঙ্গেও অনেকে এই ডাল খেতে ভালবাসেন। দোসা, বড়া বা এই জাতীয় পদ তৈরির ক্ষেত্রে বিউলির ডাল অপরিহার্য একটি উপাদান। এই ডালে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে প্রোটিন।

 

রাজমা ডাল

বাড়তি ওজন নিয়ে চিন্তিত? খাবারে রাখুন রাজমা ডাল। রাজমায় রয়েছে প্রচুর পরিমাণে প্রোটিন আর ফাইবার যা রক্তে কোলেস্টেরলের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখতে সাহায্য করে।

 

তরকার ডাল

ডালের মধ্যে সবচেয়ে বেশি ক্যালসিয়াম রয়েছে তরকার ডালে। সেই সঙ্গেই এই ডালে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে প্রোটিন আর ফ্যাট। তরকার ডালে নামমাত্র সোডিয়াম থাকায় ডায়াবেটিস রোগীদের জন্যও এটি খুবই উপকারী।

 

মাষকলাই ডাল
মাষকলাই ডাল শুধু এমনি এমনি রান্না হয় না, মাছ-মাংস-সবজি-এসবের সঙ্গে এ ডালযোগে রান্না হয় উপাদেয় ব্যঞ্জন। দেশের উত্তর ও উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলে এর চাষ বেশি হয়ে থাকে। বিশেষজ্ঞরা বলেন, মাষকলাইয়ের ডালে শতকরা ২০ থেকে ২৩ ভাগ আমিষ থাকে।

 

খেসারি ডাল 

বাড়তি ওজন নিয়ে চিন্তিত? খেতে পারেন খেসারির ডাল। এতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে প্রোটিন আর ফাইবার যা রক্তে কোলেস্টেরলের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখতে সাহায্য করে।

 

অ্যাংকর ডাল

অ্যাংকর ডাল অত্যন্ত পুষ্টিকর। এই ডালে ক্যালসিয়াম, আয়রন, ম্যাগনেশিয়াম, ফলিক অ্যাসিড, ভিটামিন-বি আর পটাশিয়াম রয়েছে পর্যাপ্ত পরিমাণে।

 

উল্লেখ্য, ঘরে তৈরি ডাল ওজন কমাতে সহায়তা করে এবং এই ডাল অন্যান্য খাবারে সঙ্গে খাওয়া হলে ফলাফল আরও ভালো হয়। সব ধরনের ডাল বিশেষ করে উপরে উল্লেখিত ডালগুলো উচ্চ আশঁ ও প্রোটিন সমৃদ্ধ যা পেট ভরা রাখে এবং বিপাক বাড়াতে সহায়তা করে। তাই প্রতিদিন খাবার তালিকায় এক বাটি ডাল যোগ করুন। এটা শরীর সুস্থ রাখার পাশাপাশি ওজন কমাতেও সহায়তা করবে।