ঢাকা, ২৫ এপ্রিল বৃহস্পতিবার, ২০২৪ || ১২ বৈশাখ ১৪৩১
good-food
১৬২৮

কোরবানি নিয়ে যা একদম করবেন না

অধ্যাপক মুনীরউদ্দিন আহমদ

লাইফ টিভি 24

প্রকাশিত: ১৩:৫০ ৮ আগস্ট ২০১৯  

প্রতিবছর কোরবানি আসলেই কিছু মানুষের মধ্যে অহেতুক বাড়াবাড়ি ও উন্মত্ততা দেখা যায়। এসব বাড়াবাড়ি ও উন্মত্ততা ধর্মসম্মত নয়। কোরবানি হবে শুধুমাত্র আল্লাহর সন্তোষটি অর্জনের জন্য, লোক দেখানোর জন্য নয়। সামর্থ্যবানরা কোরবানি দেবেন এবং গরিবদের মধ্যে মাংস বিতরণ করে আনন্দ ভাগ করে নেবেন। হালাল উপার্জন ইবাদত কবুলের পুর্বশর্ত। 
কোরবানি হলো বিশেষ তাৎপর্যপূর্ণ ইবাদত। কোরবানির আগে বিশুদ্ধ চিত্তে দোয়া করুন, 
" আমার নামাজ, আমার কোরবানি, আমার জীবন, আমার মরণ একমাত্র আপনার জন্য। হে প্রভু, আপনি আমাদের কোরবানি কবুল করুন।" 
কোরবানির পশু কিনতে গিয়ে প্রতিযোগিতায় লিপ্ত হবেন না। পশুর দাম জিজ্ঞেস করবেন না, দাম প্রচার করে বেড়াবেন না এবং দাম উল্লেখ করে ফেসবুকে পশুর ছবি আপলোড করবেন না। কোরবানির পশুতে কত কিলো মাংস হবে তার হিসাব কষতে শুরু করবেন না। পশু কিনে জিতেছেন না ঠকেছেন - এসব চিন্তা করে রাতের ঘুম হারাম করবেন না। 
পশুকে অহেতুক কষ্ট দেবেন না। পশুকে নিয়মিত পর্যাপ্ত খাবার ও পানি দিন। টাকা খরচের ভয়ে পশুকে উপোষ রাখলে কোরবানি শুদ্ধ হবে না। 
পশু জবাই, রক্ত, মাংস কাটাকাটি ও টেবিলভর্তি খাবারের দৃশ্য ফেসবুকে আপলোড করবেন না। মনে রাখবেন, লাখো মানুষ অনাহারে-অর্ধাহারে দিন কাটাচ্ছে।
 জবাইয়ের সময় শিশুদের দূরে রাখুন। পশু জবাইয়ের দৃশ্য অনেক শিশুর মনে ভয়ংকর প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করতে পারে। জবাইয়ের সময় পশুকে অযথা কষ্ট দেবেন না। 
কোরবানির পর স্বার্থপরের মতো জবাইয়ের স্থানে বা রাস্তাঘাটে বর্জ্য রেখে চলে যাবেন না। সব বর্জ্য ও রক্ত গর্ত করে মাটি চাপা দিন, রক্ত ধুয়ে ফেলুন ও ব্লিচিং পাউডার ছিটিয়ে দিয়ে পরিবেশ সংরক্ষণ করুন। অথবা সিটি কর্পোরেশন কর্তৃক নির্ধারিত স্থানে বর্জ্য রাখুন। সিটি কর্পোরেশনের দায়িত্ব হবে দেরি না করে এসব বর্জ্য সরিয়ে নেয়া। কোরবানির পর আপনার পশুর বর্জ্য পরিষ্কার করা আপনার দায়িত্ব। আপনি নিশ্চয় চাইবেন না আপনার দায়িত্বহীনতার জন্য সহস্র মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হোক। 
আল্লাহ আপনাকে কোরবানি করার সামর্থ্য দিয়েছেন বলে তাঁকে শোকরিয়া জানান। আমাদের ধর্মীয় ও সমাজ ব্যবস্থা এমন দাঁড়িয়েছে - যাদের অঢেল সম্পদ আছে, টাকা-পয়সা আছে, প্রভাব-প্রতিপত্তি আছে, তারাই ঈদ করবে, উৎসব করবে, আনন্দ করবে। ঈদের জন্য লাখ টাকার কুরবানির পশুর ছবি, পশু জবাইয়ের দৃশ্য, ভিডিও ক্লিপ ও টেবিলভর্তি শত পদের খাবার, মনোরম সাজসজ্জায় সজ্জিত হয়ে পশুর সাথে সেলফি তোলা, ফেসবুকে আপলোড, আচকান, পাঞ্জাবি,পাজামা, শাড়ি-গয়না, কোটি টাকার গাড়ি-বাড়ির দৃশ্যমান প্রতিযোগিতা, ক্লাব-হোটেলে মাতাল হয়ে নাচানাচি আনন্দ-ফুর্তির উন্মাদনা, ব্যাংকক, সিঙ্গাপুর, মালয়েশিয়ায় প্রমোদভ্রমণ এবং কক্সবাজারের সি-বিচে উপচে পড়া ভিড় দেখে কে বলবে এ দেশের লাখো মানুষ এক টুকরো মাংসের জন্য ঈদের দিন কাড়াকাড়ি ও মারামারি করে!