ঢাকা, ২৩ এপ্রিল মঙ্গলবার, ২০২৪ || ১০ বৈশাখ ১৪৩১
good-food
১৯৯

কয়েক ঘণ্টায় কীভাবে ফুসফুসের ক্ষতি করে করোনা?

লাইফ টিভি 24

প্রকাশিত: ২২:৩২ ২ ফেব্রুয়ারি ২০২১  

করোনায় আক্রান্ত হয়ে বিশ্বে ইতিমধ্যেই বহু মানুষের মৃত্যু হয়েছে। এই ভাইরাস সংক্রান্ত আরও জানতে ও রোগের গভীরে পৌঁছতে একাধিক ফুসফুসের কোষ পর্যালোচনা করেছেন বিজ্ঞানীরা। কয়েক মাস ধরে গবেষণার পর তারা ভাইরাল সংক্রমণের শুরুতে এ কোষগুলোর অভ্যন্তরে আণবিক ক্রিয়াকলাপ বিশ্লেষণ করেছেন। তারপর সিদ্ধান্তে এসেছেন।

 

বোস্টন ইউনিভার্সিটির বিজ্ঞানীরাসহ অনেকে মার্কিন ড্রাগ অ্যাডমিনিস্ট্রেশন (এফডিএ) দ্বারা অনুমোদিত প্রায় ১৮টি ওষুধ আবিষ্কার করেছেন। এগুলো কোনও ব্যক্তি করোনায় সংক্রামিত হওয়ার পর এই রোগের বিরুদ্ধে লড়াই করার সম্ভাবনা নতুন করে তৈরি করতে পারে। বিজ্ঞানীরা বলেছেন, এর মধ্যে পাঁচটি ওষুধ মানুষের ফুসফুসের কোষগুলোতে করোনাভাইরাস সংক্রমণকে ৯০ শতাংশেরও বেশি হ্রাস করতে পারে। 

 

এ গবেষণা মলিউকুলার সেল জার্নালে প্রকাশিত হয়েছে। সেখানে বিজ্ঞানীরা একসঙ্গে কয়েক হাজার ফুসফুসের কোষকে SARS-CoV-2 ভাইরাসে সংক্রামিত করেছিলেন। সংক্রমণের পর কোষগুলোতে কী কী ঘটে তা বোঝার জন্য এই গবেষণা করেন তারা। জানিয়েছেন, এগুলো আমাদের দেহের মধ্যস্থ জীবিত, শ্বাসকষ্টের সঙ্গে সম্পর্কিত কোষগুলোর মতো নয়। কিন্তু তার কাছাকাছি।

 

বোস্টন বিশ্ববিদ্যালয় (বিইউ) এর অধ্যয়ন সহলেখক এবং ভাইরোলজিস্ট এলকে মুহলবার্গার বলেছেন, এর অস্বাভাবিকত্ব হলো ভাইরাসটি ফুসফুসের কোষগুলোকে সংক্রমণের ঠিক এক ঘণ্টা পরে সেগুলো দেখা হয়েছে। সংক্রমণের সময় ভাইরাসটি এত তাড়াতাড়ি কোষগুলোকে ক্ষতিগ্রস্ত করছিল। তা দেখে বিজ্ঞানীরাও শিহরিত হয়েছিলেন। 

 

গবেষকদের মতে, ভাইরাস ফুসফুসের কোষগুলোর যেন পাইকারি হারে পুনর্নির্মাণ করছিল। বিইউর গবেষণার অপর সহ-লেখক অ্যান্ড্রু এমিলি বলেছিলেন, ভাইরাসটি যে হারে কোষগুলোকে সংক্রামিত করছিল তা রীতিমতো অবাক করে দেয়।

 

ভাইরাসগুলো যেহেতু নিজেদের প্রতিলিপি করতে পারে না। তাই তারা তার জিনগত উপাদানগুলোর অনুলিপি করতে হোস্ট সেল যন্ত্রটিকে ব্যবহার করে। সমীক্ষায় বিজ্ঞানীরা দেখতে পেয়েছেন, SARS-Cov-2 কোষের বিপাকীয় প্রক্রিয়াগুলোকে পুরোপুরি পরিবর্তন করে। সংক্রমণের পরে তিন থেকে ছয় ঘণ্টার মধ্যে কোষের পারমাণবিক ঝিল্লিকে ক্ষতি করে এই ভাইরাস। 

 

মারাত্মক ইবোলা ভাইরাসে সংক্রামিত কোষগুলো সংক্রমণের এই প্রাথমিক সময়ের বিন্দুতে কোনও সুস্পষ্ট কাঠামোগত পরিবর্তন দেখায় না। এমনকি সংক্রমণের শেষেও পারমাণবিক ঝিল্লি থাকে। বিজ্ঞানীদের মতে কোষের পারমাণবিক ঝিল্লি নিউক্লিয়াসের সাধারণ সেলুলার ফাংশন নিয়ন্ত্রণ করে।

 

গবেষণায় উল্লেখ করা হয়েছে, ফুসফুসের কোষগুলো সাধারণত অক্সিজেন এবং কার্বন ডাইঅক্সাইডের অপরিহার্য গ্যাস বিনিময়কে বজায় রাখতে ভূমিকা নেয়। গবেষকদের মতে, কোষগুলো সংক্রমণের ফলে মারা যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে জৈবিক ক্রিয়াকলাপকে ছড়িয়ে দেয়। ফলে আরও বেশি কোষের মৃত্যু ঘটে। অবশেষে নিউমোনিয়া, তীব্র শ্বাসকষ্ট এবং ফুসফুস ফেলিওর হয়।

করোনাভাইরাস বিভাগের পাঠকপ্রিয় খবর