চাকরি পরীক্ষার পদ্ধতি কেন পরিবর্তন জরুরি
লাইফ টিভি 24
প্রকাশিত: ২২:৫৮ ১৮ মার্চ ২০২৫

বহুল আগ্রহের বিসিএস বা সরকারি যেকোনো চাকরির পরীক্ষা দেওয়ার জন্য বিশ্ববিদ্যালয় বা অনার্স কলেজগুলোর শিক্ষার্থীরা প্রথম বর্ষ বা দ্বিতীয় বর্ষ থেকেই প্রস্তুতি শুরু করেন। শিক্ষার্থীরা অ্যাকাডেমিক পঠন-পাঠনে মনোযোগী হন না বা হতে পারেন না।
কোন রকম রেজাল্ট করে বিসিএস সিলেবাস কভার করার জন্য পড়েন। বিশ্ববিদ্যালয় গ্রন্থাগারে তারা নিয়মিত যান, কিন্তু গ্রন্থাগারের বই পড়তে নয়, নিরিবিলি বিসিএস গাইড পড়তে, তথ্য মুখস্থ করতে। প্রায় পত্রিকায় প্রকাশ হয় সকালবেলা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গ্রন্থাগারে প্রবেশে শিক্ষার্থীদের লম্বা সারির ছবি—যারা চাকরির পরীক্ষার প্রস্তুতির জন্য গ্রন্থাগারে নিরিবিলিভাবে গাইড পড়তে যান। অ্যাকাডেমিক জ্ঞান বা বিদ্যা অর্জনের জন্য তারা গ্রন্থাগারে যান না।
শিক্ষার্থীরা এখন অ্যাকাডেমিক বা অন্যান্য গ্রন্থ কেনেনও না, শুধু কেনেন চাকরির গাইড বই। জ্ঞান অর্জনের জন্য পড়াশোনা নয়, চাকরির জন্য শিক্ষা অর্জন—এটা একটা জাতিকে বুদ্ধিবৃত্তিকভাবে ধ্বংস করার জন্য যথেষ্ট। এখন চাকরিপ্রত্যাশীদের লাইন আরও দীর্ঘ হয়েছে।
মজার ব্যাপার, বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারের পাশে বাইরের দিকে চাকরিপ্রত্যাশীদের জন্য সেড করে দেওয়া হয়েছে, চেয়ার-বেঞ্চ রয়েছে, যেখানে শত শত শিক্ষার্থী সকাল থেকে রাত পর্যন্ত পালাক্রমে বিসিএস বা চাকরি পরীক্ষার গাইড পড়েন। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ বাধ্য হয়ে এই সেড তৈরি করে দিয়েছে, যাতে খোলা আকাশের নীচে মেঝেতে বসে পড়তে না হয়।
শিক্ষার্থীরা বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর লাইব্রেরিকে এখন জ্ঞানার্জন বা বিদ্যার্জনের জন্য নয়, ব্যবহার করছেন শিক্ষা সনদ নিয়ে বিসিএস পরীক্ষার তথ্যার্জনের জন্য, পড়ছেন চাকরির গাইড বই। শিক্ষার্থীরা এখন অ্যাকাডেমিক বা অন্যান্য গ্রন্থ কেনেনও না, শুধু কেনেন চাকরির গাইড বই। জ্ঞান অর্জনের জন্য পড়াশোনা নয়, চাকরির জন্য শিক্ষা অর্জন—এটা একটা জাতিকে বুদ্ধিবৃত্তিকভাবে ধ্বংস করার জন্য যথেষ্ট।
আমরা শিক্ষক হিসেবে গর্ব করি কোনো শিক্ষার্থী বিসিএস ক্যাডার হলে। গর্ববোধ করি যে আমার শিক্ষার্থী বিসিএস ক্যাডার হয়েছে বা ভালো চাকরি পেয়েছে। কিন্তু আশঙ্কার বিষয় হচ্ছে, এভাবে তথ্যার্জন করে বিসিএস পাস করলে অ্যাকাডেমিক পাঠন-পাঠনের প্রয়োজন কী? শুধুই কি সনদ অর্জনের জন্য অ্যাকাডেমিক পড়াশোনা? উচ্চশিক্ষার প্রয়োজন কেন তাহলে?
বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াতে গিয়ে দেখছি, একটা সেমিস্টারে দু-একজন শিক্ষার্থী ছাড়া অ্যাকাডেমিক পড়াশোনা কেউ সিরিয়াসলি করেন না, কোনো রকমে দ্বিতীয় শ্রেণির একটা রেজাল্টের জন্য পড়েন। বাকিরা কেউ আড্ডা দিয়ে সময় কাটান, তবে এখন বেশিরভাগ চাকরির গাইড বই পড়েন।
এমনকি, আমরা যখন বেশি ক্লাস ও পড়াশোনার চাপ দেই তখন শিক্ষার্থীরা বলেন, সামনে বিসিএস পরীক্ষা স্যার। ক্লাস কম নেওয়ার অনুরোধও আসে। এভাবে একটা জাতি সনদ নির্ভর হয়ে গেলে এর ভবিষ্যৎ অন্ধকার নিশ্চিতভাবে। আশ্চর্য ঘটনা হচ্ছে, আমরা বিসিএসে একই প্রশ্ন করে করে সব ধরনের কর্মকর্তা নিয়োগ দেই। কত ছোট ছোট তথ্য জানলো, কত নম্বর পেলো—এটাই একমাত্র পরিমাপক সরকারি চাকরির যোগ্যতার৷
বাংলাদেশের যে রেনেসাঁ এতোদিনে ঘটেছে, তা অন্ধকারের দিকে নিমজ্জিত হবে। এ জন্যই আমরা খবরে দেখি, বিসিএস ক্যাডার টিএনও কৃষককে লুঙ্গি পরে অফিসে ঢুকতে দেন না, সাংবাদিক পেটান। অমানবিকতার ও লাঞ্ছনার উপদ্রব বারবার খবরের শিরোনাম হয়। দুর্নীতির মহোৎসবে মেতে উঠে তথ্যার্জনে ভরপুর প্রজন্ম। বালিশকান্ডও ঘটে!
এই ব্যর্থতা আমাদেরও। উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানে জ্ঞানার্জন ও বিদ্যার্জনের মাধ্যমে একজন শিক্ষার্থী পরিপূর্ণ বুদ্ধিবৃত্তি সম্পন্ন মানবিক মানবসম্পদ হিসেবে গড়ে উঠে। কিন্তু আমরা শিক্ষার্থীদের বিদ্যার্জন করাতে পারি না, মানবিক মূল্যবোধ জাগ্রত করতে পারি না।
আমরা যখন শিক্ষার্থী ছিলাম, একটা টপিকের জন্য অনেক বই পড়তাম। এমনকি যারা অত ভালো রেজাল্টধারী ছিল না, তারাও বিশ্ববিদ্যালয় গ্রন্থাগারে বই পড়তো, বই কিনতো। এখন এসবের দিন শেষ। এভাবে একটা জাতিকে পঙ্গু করা যায় না।
এজন্য চাকরি পরীক্ষার পদ্ধতিতে পরিবর্তন আনা জরুরি। আমরা যদি যুক্তরাজ্য বা অন্যান্য দেশের সিভিল সার্ভিসে নিয়োগ প্রক্রিয়া দেখি, তাহলে দেখা যাবে যে এরকম তথ্য মুখস্থ করার যোগ্যতা দিয়ে সিভিল সার্ভিস ক্যাডার নিয়োগ হয় না। এসব নিয়োগে মূলত দেখা হয়, কতগুলো দক্ষতা ও সফলতার সংশ্লেষণ বা সাকসেস প্রোফাইল আছে, যা ছাত্র জীবন বা অ্যাকাডেমিক জীবন থেকেই বিদ্যার্জনের মাধ্যমে অর্জিত হতে থাকে।
সাকসেস প্রোফাইলের মধ্যে থাকে জ্ঞান বা কোনো বিষয় আয়ত্ত করা বা কোনো বিষয়ে সংযুক্ত হওয়ার অভিজ্ঞতা, সক্ষমতা বা অ্যাবিলিটি বা অ্যাপটিটিউড। অর্থাৎ সংশ্লিষ্ট বিষয়ে কাজ করার সম্ভাব্যতা, সামর্থ্য, উক্ত পদের কারিগরি দক্ষতা এবং সর্বশেষ উক্ত চাকরি করার কর্ম আচরণ।
আশ্চর্য ঘটনা হচ্ছে, আমরা বিসিএসে একই প্রশ্ন করে করে সব ধরনের কর্মকর্তা নিয়োগ দেই। কত ছোট ছোট তথ্য জানলো, কত নম্বর পেলো—এটাই একমাত্র পরিমাপক সরকারি চাকরির যোগ্যতার৷ তাহলে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে বিসিএস বিশ্ববিদ্যালয়ে রূপান্তর করলে হয়! আমরা বিশ্ববিদ্যালয়ে শুধু বিসিএস পাঠ দিবো, অ্যাকাডেমিক পঠন-পাঠনকে গৌণ করে!
আসলে এখন এ অবস্থাই তৈরি হয়েছে পরোক্ষভাবে। শিক্ষার্থীরা বিশ্ববিদ্যালয়কে বিসিএস বা চাকরির পরীক্ষার প্রতিষ্ঠানে পরিণত করেছেন। তারা এসএসসি-এইচএসসিতে সিলেবাসের বাংলা, ইংরেজি, গণিত, বিজ্ঞান, সাধারণ জ্ঞান অর্জনের জন্য পড়াশোনা করেন। আবারো ফিরে যান নিম্ন মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিকের পড়াশোনায়।
কারণ, চাকরির পরীক্ষায় এসব লেভেলের প্রশ্ন থাকে। চিন্তা করা যায়, এসব লেভেলের মান, মাপ বা পরিমাপ দিয়ে বাংলাদেশের সর্বোচ্চ কর্মকর্তা হবেন তারা, আমলাতন্ত্র চালাবেন, দেশ চালাবেন! সিভিল সার্ভিসের নিয়োগ পরীক্ষা মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিকের মান দিয়ে বা লেভেলের হতে পারে না।
বিষয়ভিত্তিক জ্ঞান ও অভিজ্ঞতা, সক্ষমতা, সামর্থ্য, কারিগরি দক্ষতা, বিশ্লেষণী ক্ষমতা প্রভৃতি যোগ্যতার অনুসন্ধানে উচ্চশিক্ষার মানদণ্ডে ক্যাডার ও নন-ক্যাডার কর্মকর্তার নিয়োগ পরীক্ষা পরিচালনা করা উচিত। গতকাল বিসিএস পরীক্ষা হয়েছে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভরে যাবে কে কয়টা উত্তর দিয়েছে, কত নম্বরে উত্তীর্ণ হওয়া যাবে—এসবই এখন সরকারি চাকরির মাপকাঠি। এই মাপকাঠি ঘুণেধরা, ভঙ্গুর! এই পরীক্ষা পদ্ধতির পরিবর্তন জরুরি।
লেখক: মাহামুদুল হক
শিক্ষক ও গবেষক
গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগ,
বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়
- ১৫ ফেব্রুয়ারির মধ্যেই হবে জাতীয় নির্বাচন: শফিকুল আলম
- ৫০ টাকার নিচে সবজি নেই বাজারে
- নেপালে জেন-জি বিক্ষোভে নিহতের সংখ্যা বেড়ে ৫১
- জাকসু নির্বাচনের দায়িত্ব পালনকালে শিক্ষিকার মৃত্যু
- ‘শ্রীলংকাকে হারালেই এশিয়া কাপের সুপার ফোরে বাংলাদেশ’
- পপির দুঃখ প্রকাশ
- কেউ আত্মহত্যার কথা ভাবছে কিনা বুঝবেন যেভাবে, যা করবেন
- লিটন-হৃদয়ের ব্যাটিং দৃঢ়তায় দাপুটে জয়ে এশিয়া কাপ শুরু বাংলাদেশের
- ফের ইউএনডিপির শুভেচ্ছাদূত জয়া
- সকালে ভেজানো ছোলা খাওয়ার যত উপকারিতা
- ছাত্রদলের পর জাকসু নির্বাচন বর্জন করলো আরো চার প্যানেল
- পুলিশের স্বাধীন তদন্ত সার্ভিস গঠনের সিদ্ধান্ত
- নেপাল থেকে নিরাপদে দেশে ফিরলেন ফুটবলাররা
- আসন্ন জাতীয় নির্বাচনে পোস্টাল ব্যালটে ভোট দিতে পারবেন প্রবাসীরা
- ৪৮তম বিসিএসের ফল প্রকাশ: নিয়োগ পাচ্ছেন ৩ হাজার ১২০ চিকিৎসক
- নেপালে বাংলাদেশিরা নিরাপদে, পরিস্থিতির উন্নতি হলেই ফিরতে পারবেন
- মাহির সঙ্গে প্রেমের গুঞ্জন, যা জানালেন জায়েদ
- স্ত্রীর কথা মনোযোগ দিয়ে শোনার যত উপকারিতা
- এবারের জাতীয় নির্বাচনে ভোটকেন্দ্র ৪২৬১৮
- নেপালের শীর্ষ নেতারা গোপনে, তবু দেশ পরিচালনা তাদের হাতেই
- আ. লীগের সঙ্গে আঁতাত করে ডাকসু নির্বাচনে জিতেছে শিবির
- এশিয়া কাপে নামার আগে সুখবর পেলেন লিটন-মুস্তাফিজরা
- নেপালের ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রীর সন্ধান মিলেছে
- বিক্ষোভের মুখে পদত্যাগ করলেন নেপালের প্রধানমন্ত্রী
- ডাকসু নির্বাচন: বুধবারও বন্ধ থাকবে ক্লাস-পরীক্ষা
- হিমোগ্লোবিনের মাত্রা বাড়ায় যেসব খাবার
- বলিউডের সেরা তারকার তালিকায় শীর্ষে সালমান, নেই শাহরুখ, আমির
- এবারের নির্বাচনে প্রবাসী বাংলাদেশিরা ভোট দেবেন: ইসি সচিব
- ১৬ বছর বয়সীরা এনআইডি পাবেন
- কাতারে হামলা চালালো ইসরায়েল
- সাবেক কর্মীদের ১৮২৩ কোটি টাকা পাওনা পরিশোধ করছে না ম্যারিকো
- নুরাল পাগলার মরদেহ পোড়ানো অমানবিক ও ঘৃণ্য: অন্তর্বর্তী সরকার
- আর্জেন্টিনার দুই প্রতিপক্ষ চূড়ান্ত, কবে-কখন খেলা
- দুর্গাপূজায় ভারতে ১২০০ টন ইলিশ পাঠাচ্ছে সরকার
- ভোরের স্বপ্ন কী আসলেই সত্যি হয়?
- সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংককে একীভূত না করার দাবি
- এশিয়া কাপে মোটা অঙ্কের প্রাইজমানি: কত টাকা পাবে চ্যাম্পিয়নরা
- হজমশক্তি বাড়ায় যে ৪ ফল
- নুরাল পাগলার মাজার ঘিরে পুলিশের ওপর হামলা, গ্রেফতার ৫
- নির্বাচনের সীমানা চূড়ান্ত:৩৭ আসনে পরিবর্তন, ঢাকাসহ ৪৬ আসনে প্রভাব
- ফ্যাশনের নতুন ট্রেন্ড দাড়ি, সৌন্দর্য বাড়াতে যেভাবে যত্ন নেবেন
- স্বর্ণের দাম সর্বকালের সর্বোচ্চ
- ট্রাম্পকে তুলোধনা করলেন সালমান!
- মাহির সঙ্গে প্রেমের গুঞ্জন, যা জানালেন জায়েদ
- ফরিদা পারভীনের শারীরিক অবস্থার অবনতি
- কার্তিক-শ্রীলীলার বিয়ের প্রস্তুতি শুরু!
- ফেব্রুয়ারির প্রথমার্ধেই নির্বাচন, কোনো শক্তি ঠেকাতে পারবে না
- কাতারে হামলা চালালো ইসরায়েল
- ১৬ বছর বয়সীরা এনআইডি পাবেন
- হাতকড়া-শিকল পরিয়ে আরো ৩০ বাংলাদেশিকে ফেরত পাঠালো যুক্তরাষ্ট্র