ঢাকা, ২৬ এপ্রিল শুক্রবার, ২০২৪ || ১৩ বৈশাখ ১৪৩১
good-food
৩৩৮

যেভাবে নিজে ও অন্যকে সুখী করা যায়

লাইফ টিভি 24

প্রকাশিত: ০০:৪০ ৩ অক্টোবর ২০২২  

সম্পর্কে নিজের সুখী হওয়ার দায়িত্বটা নিজেরই নেয়া ভালো। তা না হলে দুটো ঘটনা ঘটতে পারে-

 

১. নিজের সুখ-আনন্দ এসব যদি অন্যের উপর বেশি নির্ভর করে, তাহলে সুখী হওয়ার জন্য আমাকে অপরের দ্বারস্থ হতে হবে। নিজের জীবনের লাগাম অন্যের হাতে দিয়ে আর যাই হোক বেশি দিন সুখী থাকা কখনই সম্ভব নয়। 

 

২. যে সম্পর্কের উপর ডিপেন্ড করছি, ধরা যাক সেটা আমার পার্টনারের উপর, তো এতে তার কি হবে?  আমি যখন তাকে বলব তোমার কারণে আমি সুখী না, তুমি আমাকে সুখী করতে পারনি, তুমি আমাকে বহুবার কষ্ট দিয়েছ……… ইত্যাদি ইত্যাদি…--তো এতে করে এই সম্পর্কটা আমার পার্টনারের কাছে ধীরে ধীরে একটা বোঝায় পরিণত হতে পারে।

 

তাই নিজের সুখের দায়িত্বটা নিজেরই নেয়া ভালো। বরঞ্চ অন্যের সুখের দায়িত্বটাও নিজে নিতে পারি। অনেকে ভাবছেন কন্ট্রাডিক্টরি কথা হয়ে যাচ্ছে নাকি! না, হচ্ছে না। 

 

আমি দেখেছি, যখন আমার পার্টনারের কোনো সুখের কারণ আমি হই, তখন সেই তৃপ্তিটা পাই। যেটা নিজে সুখী হলেও এতটা পাই না। সম্পর্কে কিছুটা ডিপেন্ডেন্সি তো থাকবেই। কিন্তু খেয়াল রাখা উচিৎ যেন সেটা আরেকজনের উপর টর্চার বা বোঝা না হয়ে যায়। 

 

কোনো সম্পর্কেই আসক্ত হওয়াটা খুব ভুল কাজ। সেটা প্রেম, বিয়ে বা সন্তান- যে সম্পর্কই হোক না কেন। নিজেকে নানা ধরনের ফ্রুটফুল কাজে, সেবামূলক কাজে নিয়োজিত রাখুন। যেটা আপনার নিজস্ব জগতের খুব ইম্পর্ট্যান্ট একটা পার্ট হবে।

 

আমি জব বা ব্যবসা করার কথা বলছি না। পেশা, পরিবার আর বন্ধুত্ব-আত্মীয়তা বাদেও নিঃস্বার্থভাবে অন্যের সেবায় কিছু কাজ করার কথা বলছি।
এতেও দুটো ঘটনা ঘটে-

 

১. সেবামূলক কাজের মাধ্যমে অন্যের জীবনে নিঃস্বার্থ সেবা আপনাকে মানসিক নিরাপত্তা আর প্রশান্তি দেবে, আত্মবিশ্বাস বাড়াবে, আত্মমর্যাদা বাড়বে অর্থাৎ নিজেকে অনেক বেশি সম্মান করতে পারবেন। এই সেবাটা শুধু টাকা দিয়ে নয়, মেধা আর শ্রম দিয়ে করা গেলে আরো ভালো।

 

২. সেবামূলক কাজ আপনাকে সম্পর্কে আসক্তিহীন থাকতে শক্তি ও অনুপ্রেরণা দেবে। অন্যের বোঝা নয়, বরঞ্চ অন্যের আশ্রয়স্থলে পরিণত হতে শেখাবে। সম্পর্কে তখন চাওয়াটা কমিয়ে, দেবার মানসিকতা বেশি তৈরি হবে।
যা বললাম, নিজের জীবনের অভিজ্ঞতা থেকে বললাম।

 

কাজটা এত সহজ নয়, জানি। কারণ সম্পর্কে চাওয়া-পাওয়ার হিসেব চলে আসেই। তাই যখনই এই হিসেবে ডুবে যেতে শুরু করবেন, ডুব দেয়ার আগেই নিজেকে মনে করিয়ে দিতে হবে যে, আমার সুখের দায়িত্ব আমি নিজেই নিয়েছি, অন্যের হাতে লাগাম দিয়ে অন্যের পুতুলে পরিণত হতে চাই না।

 

আমি শুধু আমার সুখ নয়, বরং সম্পর্কের অন্যপাশে থাকা আরেকজনের সুখের দায়িত্বও নিজে নিয়েছি। তার আশ্রয়স্থলে পরিণত হয়েছি!

 

লেখক: হিমেল পারভীন লায়লা

মেন্টাল হেলথ থেরাপিস্ট

মন্ত্র কেয়ার হেলথ প্রাইভেট লিমিটেড