ঢাকা, ২৫ এপ্রিল বৃহস্পতিবার, ২০২৪ || ১২ বৈশাখ ১৪৩১
good-food
৫২৩

২কোটি টাকা-অস্ত্র-মদ

কমান্ডো স্টাইলের ‘যুবলীগ’ জিকে গ্রেপ্তার

লাইফ টিভি 24

প্রকাশিত: ২৩:১২ ২০ সেপ্টেম্বর ২০১৯  

নগদ প্রায় ২ কোটি টাকা, পৌনে ২  ‘শ কোটি টাকার এফডিআর, আগ্নেয়াস্ত্র ও মদসহ গ্রেপ্তার হলেন আওয়ামী যুবলীগের নেতা পরিচয় দিয়ে ঠিকাদারি চালিয়ে আসা গোলাম কিবরিয়া শামীম ওরফে জি কে শামীম। 

রাজধানী ঢাকার নিকেতনের ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের অফিস থেকে শামীম ও তার ৭ দেহরক্ষীকে গ্রেপ্তার করা হয় বলে জানিয়েছেন র‌্যাবের অতিরিক্ত মহাপরিচালক তোফায়েল মোস্তফা সারোয়ার। 

তিনি বলেন, শুক্রবার দুপুরের আগে নিকেতনের ওই ভবন ঘিরে তাদের অভিযান শুরু হয়। একটানা চলে বিকেল সাড়ে ৪টা পর্যন্ত। 

অভিযান শেষে র্যাবের নির্বাহী হাকিম সারওয়ার আলম উপস্থিত সাংবাদিকদের জানান, বিভিন্ন ব্যাংকে এফডিআর করে রাখা ১৬৫ কোটি ২৭ লাখ টাকার নথি তারা শামীমের অফিস কক্ষে পেয়েছেন। এর মধ্যে বড় একটি অংশ তার মায়ের নামে রাখা। 

এর পাশাপাশি ১ কোটি ৮১ লাখ ২৮ হাজার টাকা, ৯ হাজার মার্কিন ডলার এবং ৭৫২ সিঙ্গাপুরি ডলার সেখানে পাওয়া গেছে। 
সারওয়ার আলম বলেন, মোট আটটি আগ্নেয়াস্ত্র আমরা পেয়েছি। এগুলো বৈধ অস্ত্র বলেই প্রাথমিকভাবে মনে হচ্ছে, তবে এগুলোর অবৈধ ব্যবহারের তথ্য রয়েছে।

শামীম রাজধানীর সবুজবাগ, বাসাবো, মতিঝিলসহ বিভিন্ন এলাকায় প্রভাবশালী ঠিকাদার হিসেবে পরিচিত। গণপূর্ত ভবনে ঠিকাদারি কাজে তার দাপটের খবরে এরইমধ্যে সংবাদমাধ্যমের শিরোনাম হয়েছে।

গণমাধ্যমের খবর অনুযায়ী, এক সময় যুবদলের রাজনীতি করা শামীম পরে যুবলীগে ভেড়েন। যুবলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সমবায় বিষয়ক সম্পাদক পরিচয় দিয়েই তিনি প্রভাব খাটিয়ে আসছিলেন।
তবে যুবলীগের কেন্দ্রীয় প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক ইকবাল মাহমুদ বাবলু জানান, যুবলীগে জি কে শামীমের কোনো পদ নেই। সে নিজেই নিজেকে সমবায় বিষয়ক সম্পাদক বলে বেড়াতো। এ নিয়ে যুবলীগে কয়েকবার আলোচনাও হয়েছে।

বাবলু বলেন, জিকে শামীম এক সময় যুবদলের সাবেক সহ সম্পাদক ছিল। এখন সে নারায়ণগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের সহ সভাপতি বলে শুনেছি।

তবে জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আবদুল হাই বলেন, জি কে শামীম নামে আমাদের কোনো সহ সভাপতি বা সদস্যও নাই।
শামীমের রাজনৈতিক পরিচয় জানতে চাইলে র্যাবের নির্বাহী হাকিম সারওয়ার আলম বলেন, দলীয় পরিচয় দল থেকেই নিশ্চিত করা হবে। তারা দেখবেন শামীম ঠিকাদারী ব্যবসার আড়ালে অবৈধ কিছু করেছেন কি না।

নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁ উপজেলার দক্ষিণপাড়া গ্রামের মো. আফসার উদ্দিন মাস্টারের ছেলে শামীম থাকেন বনানীর ডিওএইচএসে। আর নিকেতনে ৫ নম্বর সড়কের ১৪৪ নম্বর ভবনটি তিনি তার জিকেবি অ্যান্ড কোম্পানি লিমিটেডের অফিস হিসেবে ব্যবহার করেন।

তার চলাফেরার সময় শটগানধারী ৬ দেহরক্ষীর ‘প্রটেকশন’ নিয়ে শুক্রবার সকালেই কয়েকটি পত্রিকায় প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। তাকে বৃহস্পতিবারই আটক করেছে বলে গুঞ্জন শোনা গেলেও র্যাবের পক্ষ থেকে শুক্রবার বিকেলের আগে আনুষ্ঠানিকভাবে কিছু বলা হয়নি।
আলোচিত এই ব্যক্তি উচ্চতায় ছোটখাটো। ৫ ফুটের সামান্য বেশি। মাথায় চুল কম। সাদামাটা গোছের প্রায়। কিন্তু নিরাপত্তা বেষ্টনী তার পুরো রাজকীয়। বিশাল দেহের রক্ষীরা তার পাহারায়। অর্ধডজন দেহরক্ষী সঙ্গী থেকে বদলে দিত তার চলার স্বাভাবিক প্রক্রিয়া।

অস্ত্রসজ্জিত দেহরক্ষী নিয়ে তার চলাচল অনেকটাই কমান্ডো স্টাইলের। আগে-পিছে মোটরসাইকেল ও জিপে চড়া রক্ষীবাহিনীর পাহারায় নিকেতনে আসা-যাওয়া করতেন সাইরেন বাজিয়ে। থাকতো পুলিশের পাহারাও। যেন রাষ্ট্রীয় কোনো বড় মাপের ভিআইপি মুভমেন্ট করছেন।