ঢাকা, ০৮ ডিসেম্বর সোমবার, ২০২৫ || ২৩ অগ্রাহায়ণ ১৪৩২
good-food
১০

কাশির ওষুধ নাকি লেবু-মধু বেশি কার্যকর?

লাইফ টিভি 24

প্রকাশিত: ২১:১৪ ৭ ডিসেম্বর ২০২৫  

শীত এলেই ভাইরাসজনিত কাশি-সর্দিতে সবাই নাকাল। বাড়ি-অফিস-বাসে ট্রেনেও গলা খাঁকারির সিম্ফনি। এ সময় অনেকেই দৌড়ান কাশির ওষুধের জন্য।কিন্তু সত্যিই কি এসব কাজ করে? নাকি ঘরোয়া মধু–লেবুই বেশি কার্যকর?

ম্যানচেস্টার বিশ্ববিদ্যালয়ের শ্বাসযন্ত্র বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক জ্যাকি স্মিথ এসব প্রশ্নের জবাবেই ভাঙলেন মিথ ও বাস্তবের হিসেব।

কম দামের সিরাপেও কাজ হয়

বেশিরভাগ কাশি আসে সাধারণ সর্দি-কাশির ভাইরাস থেকে, আর এই ভাইরাসকে শরীরকে নিজে থেকেই সামলাতে হয়। কাশির সিরাপ ভাইরাস দূর করতে পারে না, শুধু গলা নরম রাখে, শুকনো ভাব কমায়, আর কাশির টিকটিকানি কিছুটা থামায়।

শুকনো কাশিতে ঘন, মিষ্টি সিরাপ বা গ্লিসারিনজাত ওষুধ গলা “ঢেকে” রাখে, ফলে কম কষ্ট দেয়।

এক্ষেত্রে দামি ব্র্যান্ড নেওয়ার কোনো দরকার নেই, দোকানের কমদামি সিরাপও একই কাজ করে।

তবে সাবধান, এই সিরাপগুলোতে চিনি থাকে অনেক বেশি। তাই চাইলে চিনি ছাড়া সিরাপ বেছে নিতে পারেন।

ডোজ এখানে খুব গুরুত্বপূর্ণ। কারণ অতিরিক্ত নিলে আসক্তি তৈরি হতে পারে। তাই লেবেলে যা লেখা, তার বেশি কখনোই নয়।

আরেকটি উপাদান, পুদিনার মতো ঠান্ডা অনুভূতি দেয়, যা গলার জ্বালা আড়াল করে কিছুক্ষণ আরাম দেয়।

কফসহ কাশিতে সিরাপ কতটা কাজে দেয়?

বুকে কফ জমে থাকা কাশি সাধারণত নাক-সাইনাসে কফ বাড়া বা বাতাসের নালি প্রদাহিত হওয়ার কারণে হয়।

অনেকে তখন কফপাতলা করার সিরাপ খান। কিন্তু এগুলোর কার্যকারিতা নিয়ে বড় প্রমাণ নেই।

রাতে ঘুমানোর সুবিধা ছাড়া ঘুমপাড়ানি অ্যান্টিহিস্টামিনও কাশি কমায় না।

গাছগাছড়ার নির্যাসের এসবের কার্যকারিতারও নিশ্চিত প্রমাণ নেই।

এই অবস্থায় অধ্যাপক জ্যাকি স্মিথের পরামর্শ—

সময় দিন, প্রচুর পানি খান, আর লজেন্স নিন।

লজেন্স মুখে রাখলে বারবার গিলতে হয়, এতে কিছুক্ষণ কাশি থেমে থাকে।

মধু-লেবু কি বেশ কার্যকর?

গরম পানিতে মধু-লেবুর মিশ্রণ শুকনো কাশিতে সিরাপের মতোই গলা নরম রাখে, জ্বালাভাব কমায়।

আন্তর্জাতিক একটি স্বাধীন গবেষণাও বলছে, এক বছরের বেশি বয়সী শিশুদের ক্ষেত্রে মধু-লেবু কিছুটা উপকার দেয়।

কাশি হলো শরীরের রক্ষা ব্যবস্থা

কফ জমলে সেটা বের করাই ভালো। শরীর কাশি দিয়েই কফ ঠেলে ফেলে দেয়। তাই জোরে দমন না করে টিস্যু ব্যবহার করে কাশুন।

গিলে ফেললেও সমস্যা নেই, পেট সেটা ভেঙে ফেলতে পারে।

তবে কফ গাঢ় বাদামি হলে সাবধান, এতে রক্ত মেশার ইঙ্গিত থাকতে পারে।

সাধারণত বুকের কাশি কয়েক সপ্তাহের মধ্যেই সেরে যায়।

তবে তিন সপ্তাহ পেরিয়ে গেলেও যদি কাশি না সারে, তাহলে অবশ্যই চিকিৎসকের কাছে যান।