ঢাকা, ০৩ মে শুক্রবার, ২০২৪ || ২০ বৈশাখ ১৪৩১
good-food
৩৬৯

ডেঙ্গু জ্বরে ‘ভিটামিন ডি’ জরুরি কেন?

লাইফ টিভি 24

প্রকাশিত: ১৯:৩৯ ৩১ আগস্ট ২০২৩  

এই মুহূর্তে দেশে সবচেয়ে বড় আতঙ্কের নাম ডেঙ্গু জ্বর। ডেঙ্গু এখন শুধু ঢাকা শহর নয়, ছড়িয়ে পড়েছে দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলেও। আগের তুলনায় এবার ডেঙ্গু জ্বরের ভয়াবহতা অনেক বেশি।

 

ডেঙ্গু জ্বরে মৃত্যুর অন্যতম কারণ হলো ডেঙ্গু হেমোরেজিক ফিভার ও ডেঙ্গু শক সিনড্রোম। এ ক্ষেত্রে রক্তনালি থেকে প্লাজমা বের হয়ে যায়। এতে শরীরে তরল পদার্থের পরিমাণ কমে বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ আক্রান্ত হয়ে কার্যকারিতা হারায়, রোগীর মৃত্যু হয়।

 

ম্যাক্রফেজ অ্যাকটিভেশন সিনড্রোমও কিছু মৃত্যুর জন্যে দায়ী। কিছু গবেষণায় দেখা গেছে, মারাত্মক ও জটিল ডেঙ্গু জ্বরের সঙ্গে ভিটামিন ডির অভাবের সম্ভাব্য সম্পর্ক রয়েছে। সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত এক লেখায় এমনটিই জানিয়েছেন ঢাকা শিশু হাসপাতালের শিশু হরমোন রোগবিশেষজ্ঞ, সহযোগী অধ্যাপক ডা. রবি বিশ্বাস।

 

মারাত্মক ডেঙ্গু জ্বরে কী সমস্যা হয় —

মারাত্মক ডেঙ্গু জ্বরে শরীরে অতিরিক্ত ডেঙ্গু ভাইরাস লোডের কারণে বিভিন্ন কোষ (টি সেল, মনোসাইট/ ম্যাক্রফেজ, এন্ডথেলিয়াল সেল) থেকে অতিমাত্রায় সাইটোকাইন নিঃসরিত হয়। আর এই প্রো-ইনফ্লেমেটরি সাইটোকাইনস ডেঙ্গু হেমোরেজিক ফিভার ও শক সিনড্রোম হওয়ার জন্য বিশেষভাবে দায়ী।

 

ভিটামিন ডি কী কাজ করে —

আমরা সবাই জানি, ভিটামিন ডি আমাদের শরীরের জন্য অনেক গুরুত্বপূর্ণ। এটা মূলত আমাদের হাড়ের স্বাস্থ্য সুরক্ষা করে। তাছাড়া এই ভিটামিন আমাদের ইমিউন সিস্টেমকে নিয়ন্ত্রণ করে বিভিন্ন রোগ প্রতিরোধ ও দ্রুত রোগমুক্তিতে বিশাল ভূমিকা রাখে। গবেষণায় দেখা গেছে, ডেঙ্গু জ্বরের জটিলতা সৃষ্টির বিভিন্ন পর্যায়ে তা কমাতে ভিটামিন ডি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।

 

ভিটামিন ডি মানবদেহে ডেঙ্গু আক্রান্ত কোষের পরিমাণ কমায়, যা প্রকারান্তরে বিভিন্ন প্রো-ইনফ্লেমেটরি সাইটোকাইনসের নিঃসরণ কমায়। ফলে ডেঙ্গুর ভয়াবহতা হ্রাস পায়। এ ছাড়া ভিটামিন ডি ম্যাক্রফেজ নামক কোষের পৃথককরণে সাহায্য করে; যা শরীরে দ্রুত ভাইরাস বৃদ্ধি হতে বাধা দেয় এবং ডেঙ্গুর ভয়াবহতা কমাতে সহায়তা করে। উল্লেখ্য, আমাদের দেশের প্রায় ৭৫-৯০ ভাগ মানুষ কোনো না কোনোভাবে ভিটামিন ডির স্বল্পতায় ভুগছেন।

 

এই মুহূর্তে করণীয় —

বাস্তবতা হলো, দেশে এখন ডেঙ্গু জ্বরের ভয়াবহতা অনেক বেশি। অন্যদিকে আমাদের দেশের মানুষের ভিটামিন ডি সার্বিকভাবে কম। ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগীদের নিয়ে পরিচালিত দুটি পৃথক গবেষণায় দেখা গেছে, যাদের শরীরে দৈনিক ৪০০০ ইউনিট হারে ১০ দিন অথবা এক ডোজ ২০০০০০ ইউনিট ভিটামিন ডি দেয়া হয়েছে, তাদের মধ্যে মারাত্মক ডেঙ্গু হওয়ার আশঙ্কা অন্যদের তুলনায় কমেছে। যেহেতু ভিটামিন ডি ডেঙ্গু জ্বরের ভয়াবহতা কমাতে সহায়তা করে, তাই আমাদের লক্ষ্য হবে ডেঙ্গু আক্রান্ত সবার শরীরে যেকোনো উপায়ে পর্যাপ্ত ভিটামিন ডির জোগান নিশ্চিত করা।