ঢাকা, ২৭ এপ্রিল শনিবার, ২০২৪ || ১৪ বৈশাখ ১৪৩১
good-food
৫৪০

ধানমন্ডি ক্লাবের বার সিলগালা, জুয়ার আলামত

লাইফ টিভি 24

প্রকাশিত: ১০:৩০ ২১ সেপ্টেম্বর ২০১৯  

রাজধানীর ধানমন্ডি ক্লাব লিমিটেডের বারের গোডাউন খুলতে না পারায় ২৪ ঘণ্টার জন্য সেটিকে সিলগালা করে দেয়া হয়েছে। বারটি শুক্রবার বন্ধ থাকায় কর্তৃপক্ষ রেজিস্টার খাতার স্টক দেখাতে পারেনি বলে এটি সিলগালা করেছে র‌্যাব। রাত সোয়া ১০টার দিকে বারটি সিলগালা করেন র‌্যাবের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রট গাউসুল আজম।

ধানমন্ডি ক্লাবে র‌্যাবের অভিযান ২৪ ঘণ্টার মধ্যে বারটির স্টক কর্তৃপক্ষকে দেখাতে বলা হয়েছে। ক্লাবটিতে জুয়া খেলার আলামতও পেয়েছে র‌্যাব। বারে রাখা মদের অনুমতি রয়েছে কিনা, তা মিলিয়ে দেখার জন্য গোডাউনটি খোলার চেষ্টা করেছিল র‌্যাব।

ধানমন্ডি ক্লাবে অভিযান শেষে র‍্যাব-২ এর এসপি মো. শাহবুদ্দীন বলেছেন, রাজধানীতে ক্লাবের অন্তরালে মাদক, ক্যাসিনো ও জুয়ার বিরুদ্ধে চলা অভিযানের অংশ হিসেবে ধানমন্ডি ক্লাবে অভিযান পরিচালনা করা হয়। কিন্তু ক্লাবটি বন্ধ থাকায় দুয়েকজন স্টাফ ছাড়া কেউ ছিল না।

তিনি বলেন, এ ক্লাবের একটি বার রয়েছে। তবে ক্লাবটি বন্ধ থাকায় রেজিস্ট্রারের সঙ্গে বারের অনুমোদন অনুযায়ী লিকারের স্টক মিলাতে পারিনি। তাই র‌্যাব সদর দফতরের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট গাউসুল আজম ক্লাবটির বার ২৪ ঘণ্টার জন্য সিলগালা করে দিয়েছেন।

এসপি মো. শাহবুদ্দীন বলেন, আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে ক্লাবের লোকজনের কাছ থেকে স্টকের হিসাব নেব। রেজিস্ট্রার অনুযায়ী লিকারের স্টকের অসঙ্গতি থাকলে আইনি ব্যবস্থা নেয়া হবে। এছাড়া বারের লিকারের গোডাউন বন্ধ থাকায় আমরা ভেতরে যেতে পারিনি।

রাজধানীর ধানমন্ডি ক্লাবের সভাপতি মোশাররফ হোসেন কাজল। তিনি দুদকের আইনজীবী এবং ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলার মামলার রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী। যে দুই মামলায় খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে সাজা হয়েছে তারও রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী ছিলেন তিনি।

গেল ১৮ সেপ্টেম্বর অবৈধ জুয়া ও ক্যাসিনো চালানোর অভিযোগে র‌্যাবের হাতে আটক হন ঢাকা দক্ষিণ মহানগর যুবলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক খালেদ মাহমুদ ভূঁইয়া। অস্ত্র ও মাদকের আলাদা দুই মামলায় তাকে সাতদিনের রিমান্ডে নিয়েছে পুলিশ। শুক্রবার তাকে যুবলীগ থেকে বহিষ্কার করা হয়।

সম্প্রতি ছাত্রলীগ ও যুবলীগের কয়েকজন নেতার বিষয়ে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তারপরই ছাত্রলীগের পদ হারান শোভন-রাব্বানী। এরপর আটক হন খালেদ। শুক্রবার যুবলীগ পরিচয়ধারী অপর আলোচিত নেতা কমান্ডো স্টাইলে চলা জি কে শামীমকে নিকেতনের নিজ কার্যালয় থেকে আটক করা হয়।

রাজধানীর সবুজবাগ, বাসাবো, মতিঝিলসহ বিভিন্ন এলাকায় প্রভাবশালী ঠিকাদার হিসেবে পরিচিত যুবলীগ নেতা এস এম গোলাম কিবরিয়া শামীম ওরফে জি কে শামীমকে আটক করে র‌্যাব। শামীমের সঙ্গে তার সাত দেহরক্ষীকেও আটক করা হয়। এ সময় বেশ কয়েকটি আগ্নেয়াস্ত্র ও মাদক উদ্ধার করা হয়। উদ্ধার করা হয় ২ কোটি নগদ টাকা, ১৬৫ কোটি টাকার ওপরে এফডিআর (স্থায়ী আমানত)। এর মধ্যে তার মায়ের নামে ১৪০ কোটি টাকা ও ২৫ কোটি টাকা তার নামে।

শুক্রবার বিকেলে র‌্যাব-২ এর একটি দল অভিযান চালায় রাজধানীর কলাবাগান ক্রীড়াচক্র ক্লাবে। এর আগে দুপুরে আটক করা হয় ক্লাবটির সভাপতি সফিকুল আলম ফিরোজকে। রাতে সংবাদ সম্মেলনে র‌্যাব-২ এর অধিনায়ক আশিক বিল্লাল জানান, এ অভিযানে মোট পাঁচজন আটক করা হয়েছে। অভিযান এ ক্লাব থেকে গন্ধবিহীন ইয়াবা, একটা বিদেশি পিস্তলসহ তিন রাউন্ড গুলি, যুক্তরাষ্ট্রের তৈরি ক্যাসিনোতে খেলার কয়েন, স্কোরবোর্ড ও ৫৭২ প্যাকেট তাস উদ্ধার করা হয়। ক্লাবটিতে যেসব জিনিসপত্র পাওয়া গেছে ধারণা করা হচ্ছে আগে এ ক্লাবে ক্যাসিনো খেলা হত।

এছাড়া রাজধানীর এলিফ্যান্ট রোডের এজাক্স ক্লাব ও কারওয়ান বাজারের মৎস্যজীবী ক্লাবেও অভিযান চালানো হয়।
 

অপরাধ বিভাগের পাঠকপ্রিয় খবর