ঢাকা, ০৬ নভেম্বর বৃহস্পতিবার, ২০২৫ || ২২ কার্তিক ১৪৩২
good-food
৮৯৯

বাড্ডায় গণপিটুনিতে রেনু হত্যার মূলহোতা গ্রেফতার

লাইফ টিভি 24

প্রকাশিত: ১৯:৪৬ ২৪ জুলাই ২০১৯  

রাজধানীর বাড্ডায় ছেলেধরা সন্দেহে গণপিটুনিতে নিহত তাসলিমা বেগম রেনু হত্যা মামলার প্রধান আসামি হৃদয়কে (১৯) গ্রেফতার করেছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশ। ডিএমপি’র গোয়েন্দা পূর্ব বিভাগের অবৈধ মাদক উদ্ধার ও প্রতিরোধ টিম মঙ্গলবার রাতে নারায়ণগঞ্জ জেলার ভুলতা এলাকা থেকে তাকে গ্রেফতার করে।

বুধবার ডিএমপি’র মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত প্রেস ব্রিফিংয়ে অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (ডিবি) মো. আবদুল বাতেন বলেন, গ্রেফতারকৃত হৃদয় একজন সবজি বিক্রেতা। স্কুল গেটে তিনি সবজি বিক্রি করতেন। ওই এলাকায় থাকতেন।

ঘটনার দিন হৃদয় তাসলিমাকে স্কুল গেট দিয়ে প্রবেশ করতে দেখেছিলেন। তাসলিমা তার সন্তানের ভর্তির ব্যপারে স্কুলে যান। সেখানে গিয়ে তিনি একজন মহিলা অভিভাবককে বিভিন্ন কথা জিজ্ঞাসা করেন। এক পর্যায়ে তিনি ওই অভিভাবকের বাসার ঠিকানা জিজ্ঞাসা করেন। এতে ওই মহিলা সন্দেহ করে তাসলিমাকে ছেলেধরা বলে।

সবজি বিক্রেতা হৃদয় এ কথা শুনে এগিয়ে যান। তার সঙ্গে আরো ১৫ থেকে ২০ জন একত্রিত হন। এ অবস্থা দেখে স্কুলের দ্বিতীয় তলায় তাসলিমাকে তালাবদ্ধ করে রাখে স্কুল কর্তৃপক্ষ। স্কুলের পাশেই ছিল বাজার। এ খবর পেয়ে আরো অনেক লোকজন স্কুলে প্রবেশ করে। এরপর হৃদয়সহ আরো লোকজন তালা ভেঙে তাসলিমাকে বাইরে নিয়ে আসে। প্রহার করে হত্যা করে।

ঘটনার পর হৃদয় নারায়ণগঞ্জ তার নিজের বাড়িতে পালিয়ে যায়। নিজেকে আড়াল করার জন্য মাথা ন্যাড়া করে ফেলে। যাতে কেউ তাকে সনাক্ত করতে না পারে। পুলিশ ঘটনার সময়ে হৃদয়ের পরিহিত জামা-কাপড় উদ্ধার করেছে। পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে হৃদয় তার সঙ্গে যারা তালা ভেঙেছে তাদের নামও প্রকাশ করেছে। তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে। এই ঘটনায় জাফর নামে একজন ইতোপূর্বে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন।

অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার বলেন, আমরা সোশ্যাল মিডিয়া মনিটরিং করছি। কেউ যদি এ ধরনের উস্কানিমূলক বক্তব্য পোস্ট করে জনমনে বিভ্রান্তির সৃষ্টি করে। এমনকি যারা ওই পোস্টে কমেন্টস করে তাদের আইনের আওতায় আনা হবে। হৃদয় ছাড়াও এর আগে বাড্ডা ও উত্তর বাড্ডা এলাকা থেকে ৭ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।

উল্লেখ্য, গত শনিবার সকালে উত্তর বাড্ডায় ছেলেধরা সন্দেহে তাসলিমা বেগম রেনুকে (৪০) পিটিয়ে গুরুতর জখম করে বিক্ষুব্ধ জনতা। গুরুতর আহত অবস্থায় তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে নেয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। এ ঘটনায় বাড্ডা থানায় অজ্ঞাতনামা ৪শ’ থেকে ৫শ’ ব্যক্তির বিরুদ্ধে একটি হত্যা মামলা দায়ের করা হয়।