ঢাকা, ২৬ এপ্রিল শুক্রবার, ২০২৪ || ১৩ বৈশাখ ১৪৩১
good-food
২০৩

সেই সীমা ধর্ষণ-হত্যা মামলায় ৮ জনের মৃত্যুদণ্ড বহাল

লাইফ টিভি 24

প্রকাশিত: ১৯:১৫ ২৮ জানুয়ারি ২০২০  

লক্ষ্মীপুরে স্কুলছাত্রী স্মৃতি নাথ সীমাকে ধর্ষণের পর হত্যা মামলায় ৮ জনের মৃত্যুদণ্ড বহাল রেখেছেন হাইকোর্ট। বিচারপতি ভবানী প্রসাদ সিংহ ও বিচারপতি মো. কামরুল হোসেন মোল্লার সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট ডিভিশন বেঞ্চ মঙ্গলবার উভয়পক্ষের শুনানি শেষে এ রায় ঘোষণা করেন।
নিম্ন আদালতে মৃত্যুদণ্ড প্রাপ্ত অপর দুই আসামিকে যাবজ্জীবন মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন আদালত।
মৃত্যুদণ্ড বহাল থাকা আসামিরা হলেন কুমিল্লার মনোহরগঞ্জ উপজেলার হিরণ, নোয়াখালীর বেগমগঞ্জ উপজেলার দহরপাড়া গ্রামের মানিক, তালিতপুর গ্রামের রাশেদ, রুদ্রপুর গ্রামের সুমন, সুধারামের লক্ষ্মীনারায়ণপুর গ্রামের হেদায়েত উল্যা হেদু, চাটখিল উপজেলার ধর্মপুর গ্রামের নুরনবী, সোনাইমুড়ি উপজেলার ধন্যপুর গ্রামের সাদ্দাম হোসেন ওরফে রুবেল এবং লক্ষ্মীপুর সদরের শ্রীরামপুর গ্রামের নুর আলম ওরফে নুরু। এদের মধ্যে মানিক, রাশেদ, সুমন ও রুবেল পলাতক রয়েছেন।
হাইকোর্টে মৃত্যুদণ্ড থেকে যাবজ্জীবন দণ্ডপ্রাপ্ত দুই আসামি হলেন নোয়াখালীর বেগমগঞ্জ উপজেলার অনন্তপুর গ্রামের আনোয়ার হোসেন এবং একলাশপুর গ্রামের সোহেল। আসামি সোহেল পলাতক রয়েছেন।
আদালতে আসামিদের পক্ষে শুনানি করেন ব্যারিস্টার এ এম মাহবুব উদ্দিন খোকন এবং এস এম শফিকুল ইসলাম কাজল। পলাতক আসামিদের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী হাফিজুর রহমান খান। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি এটর্নি মো. আমিনুল ইসলাম, সহকারি এটর্নি জেনারেল সামসুন নাহার লাইজু, ফারহানা আফরোজ রুনা।
এর আগে ২০১৪ সালের ১৬ সেপ্টেম্বর সীমাকে ধর্ষণ এবং হত্যার দায়ে ১০ জনকে মৃত্যুদণ্ডাদেশ দেন বিচারিক আদালত। তাদের ১ লাখ টাকা করে জরিমানাও করা হয়।
আদালত অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় মামলার ১৫ আসামিকে খালাস দেন। ওই রায়ের পরে সাজাপ্রাপ্ত আসামিরা খালাস চেয়ে হাইকোর্টে আপিল করেন। মৃত্যুদণ্ডাদেশপ্রাপ্ত আসামিদের ডেথ রেফারেন্স অনুমোদনের জন্য নথি হাইকোর্টে পাঠানো হয়। সেই আপিল ও ডেথ রেফারেন্সের শুনানি শেষে হাইকোর্ট এদিন ৮ জনের মৃত্যুদণ্ড বহাল রেখে রায় দেন। 
মামলার বিবরণ থেকে জানা যায়, সীমা (১৩) মা-বাবার সঙ্গে বসুদহিতা গ্রামে দাদার বাড়িতে থাকত। তার দাদার নাম কৃষ্ণলাল দেবনাথ (৬৫)। ২০১২ সালের ১৮ জুলাই রাত সাড়ে ১১টার দিকে ১৪/১৫ জন মুখোশধারী সশস্ত্র ব্যক্তি তাদের বাড়িতে ঢোকে। তারা অস্ত্রের মুখে পরিবারের সদস্যদের জিম্মি করে কাপড় দিয়ে বেঁধে ফেলে। এসময় তারা কুপিয়ে কৃষ্ণলাল, তার স্ত্রী গীতা রানী (৬০) ও সীমার চাচি মিনতী বালা দেবীকে (২৭) জখম করে। 
একপর্যায়ে তারা সীমাকে একটি কক্ষে নিয়ে আগ্নেয়াস্ত্রের মুখে ধর্ষণ করে। এরপর স্বর্ণালংকারসহ প্রায় ৮০ হাজার টাকা মূল্যের মালামাল নিয়ে চলে যায়। ডাকাতরা চলে যাওয়ার পর বাড়ির সদস্যদের চিৎকারে আশপাশের লোকজন এসে সীমা এবং আহতদের উদ্ধার করে স্থানীয় চন্দ্রগঞ্জ ন্যাশনাল হাসপাতালে নিয়ে যায়। পরে তাদের লক্ষ্মীপুর সদর হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রাতেই সীমা মারা যায়।
এ ঘটনায় পরদিন কৃষ্ণ লাল দেবনাথ বাদী হয়ে অজ্ঞাতপরিচয় ১৪-১৫ জনকে আসামি করে ডাকাতি, ধর্ষণ ও হত্যার অভিযোগে সদর থানায় মামলা করেন।