ঢাকা, ০৭ মে মঙ্গলবার, ২০২৪ || ২৩ বৈশাখ ১৪৩১
good-food
৫৩৩

হাজার বছর ধরে স্বর্ণের এত গুরুত্ব কেন?

লাইফ টিভি 24

প্রকাশিত: ২৩:৩৪ ১৩ জুলাই ২০২৩  

সেই সুপ্রাচীনকাল থেকে প্রাচুর্য প্রদর্শন এবং অর্থনৈতিক লেনদেনে গুরুত্ব বহন করে আসছে স্বর্ণ। ইতোমধ্যে অর্থের সবচেয়ে স্থায়ী রূপ হিসেবে প্রতিষ্ঠা পেয়েছে মূল্যবান ধাতুটি। যার চোখধাঁধানো ঔজ্জ্বল্য, অনন্যসাধারণ দীপ্তি, চাকচিক্য ও রঙের তীব্রতা মানুষকে অভিভূত করে চলেছে।

 

সঙ্গত কারণে স্বর্ণের মূল্য কখনো শূন্যতে নামেনি। হাজার হাজার বছর ধরে এটি মূল্যবান সম্পদ হিসেবে পরিগণিত হয়ে আসছে। কিন্তু কেন? বিখ্যাত মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিবিএসের এক বিশ্লেষণধর্মী প্রতিবেদনে সেই উত্তর মিলেছে।


১. মূল্য কখনও কমে না 

শতাব্দীর পর শতাব্দী ধরে গুরুত্ব বহন করে আসছে স্বর্ণ। আধুনিক যুগেও মহামূল্যবান এটি। স্বর্ণ সর্বজনীনভাবে স্বীকৃত সম্পদ। অতিরিক্ত উত্তোলনেও যার অবমূল্যায়ন ঘটে না। ইলেকট্রনিক্স পণ্য থেকে শুরু করে গয়না পর্যন্ত- সবকিছুতে এটি ব্যবহৃত হয়। তাই সর্বদা এর চাহিদা থাকে। বিশেষ করে অর্থনৈতিক অস্থিরতার সময় স্বর্ণের গুরুত্ব বেড়ে যায়। মন্দার সময় যার চাহিদা বৃদ্ধি পায়। তাই একে দুঃসময়ের বন্ধু বলা হয়। 

 

২. মূল্যস্ফীতির বিরুদ্ধে লড়াই করে 

মূল্যস্ফীতি বিনিয়োগের মূল্য হ্রাস করতে পারে। কারণ পণ্য ও পরিষেবার দাম বৃদ্ধি পায়। সেই সঙ্গে ডলারের ক্রয়ক্ষমতা হ্রাস পায়। বিপরীতে, মূল্যস্ফীতিতেও দর ধরে রাখে স্বর্ণ। চাহিদা যত বাড়ে, এটি তত মূল্যবান হয়ে ওঠে।

 

উদাহরণস্বরূপ, ১৯৭০-এর দশকে সুদের হার পৌঁছে দুই অংকের ঘরে। ১৯৮০-এর শুরুতে তা ১৩ দশমিক ৮২ শতাংশ স্পর্শ করে। বিশ্ববিখ্যাত মার্কিন আর্থিক প্রতিষ্ঠান নাসডাকের তথ্য অনুসারে, ওই দশকে স্বর্ণের দাম শেয়ার প্রতি ৩৫ থেকে ৮৫০ ডলার পর্যন্ত বেড়েছে। অর্থাৎ মূল্যস্ফীতি বাড়লে স্বর্ণেরও দর বাড়ে। তাই একে নিরাপদ আশ্রয় ধাতু বলা হয়। 

 

৩. সংকটের মধ্যেও দাম বাড়ে 

রাজনৈতিক সংকটের সময় বিনিয়োগকারীরা স্বর্ণের মতো নির্ভরযোগ্য সম্পদের দিকে ছুটে আসেন। এতে মূল্যবান ধাতুটির মূল্য বৃদ্ধি পায়।

 

৪. প্রতিষ্ঠানের ধস নামলেও স্বর্ণ অটুট থাকে

বিশ্বখ্যাত আর্থিক প্রতিষ্ঠান গোল্ডসিলভারের তথ্য অনুযায়ী, গত ৪৯ বছরে বিশ্বের বৃহত্তম ৮টি শেয়ারবাজারে ধস নেমেছে। এর মধ্যে ৬টিতেই স্বর্ণের দাম বেড়েছে। ২০০৭ থেকে ২০০৯ সালে বিশ্ব মন্দার সময় এসঅ্যান্ডপি ৫০০ সূচক ৫৬ দশমিক ৮ শতাংশ কমেছে। কিন্তু স্বর্ণের দাম বেড়েছে ২৫ দশমিক ৫ শতাংশ। যেকোনো সময় যেকোনো মার্কেটে ধস নামতে পারে। এতে অন্যান্য পণ্যের মূল্য হ্রাস পায়। তবে স্বর্ণের দর অটুট থাকে। বাড়ে কিন্তু কমে না।

 

৫. লোকসানের হাত থেকে রক্ষা করে 

শেয়ারবাজার ভীষণ অস্থির। এখানে সূচক প্রতিনিয়ত ওঠা-নামা করে। কোনো সময় কোনো  পণ্যের দাম ব্যাপক বেড়ে যেতে পারে। আবার ক্ষণিকেই ধস নামতে পারে। কিন্তু স্বর্ণের ক্ষেত্রে এমনটা ঘটে না। তাই এতে বিনিয়োগ সবসময় লাভজনক।

 

৬. স্বর্ণের ওজন কমে না 

বিশ্বের যেকোনো খনিজ সম্পদের ক্ষয় আছে। কালের পরিক্রমায় গচ্ছিত  লোহা, রুপা, প্যালাডিয়াম, অ্যালুমিনিয়ামের ওজন হ্রাস পায়। কিন্তু স্বর্ণের আকার ঠিক থাকে। একে গলিয়ে উন্নত কাঠামো দেয়া যায়। এটি যত পুরোনো হয়, তত খাঁটিতে পরিণত হয়। ফলে দাম বাড়ে।

 

৭. যেকোনো সময় বিক্রি করা যায় 

সময়ের ব্যবধানে কোনো সম্পদের মূল্য নিঃশেষ হয়ে যেতে পারে। কিন্তু স্বর্ণের হয় না। যুগ যুগ ধরে এর বিনিময় মূল্য থাকে। ফলে স্বর্ণ সবসময় বিক্রি করা যায়।