ঢাকা, ১১ অক্টোবর শনিবার, ২০২৫ || ২৫ আশ্বিন ১৪৩২
good-food

কেন নোবেল শান্তি পুরস্কার পেলেন না ট্রাম্প?

লাইফ টিভি 24

প্রকাশিত: ০২:৫১ ১১ অক্টোবর ২০২৫  

ব্যাপক প্রচারণা ও রাজনৈতিক সমর্থনের পরও ২০২৫ সালের নোবেল শান্তি পুরস্কার জিততে পারলেন না যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। তার পরিবর্তে এ বছরের সম্মানজনক পুরস্কারটি পেয়েছেন ভেনেজুয়েলার গণতন্ত্রপন্থী নেত্রী মারিয়া কোরিনা মাচাদো। 

 

জানুয়ারিতে হোয়াইট হাউজে ফেরার পর থেকেই নোবেল শান্তি পুরস্কারের জন্য জোর প্রচেষ্টা চালাচ্ছিলেন ট্রাম্প। তিনি বারবার দাবি করেন, তার উদ্যোগে বিশ্বজুড়ে চলমান আটটি যুদ্ধের অবসান ঘটেছে। কিন্তু এতসব দাবি ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে কিছু সমর্থনের পরেও রিপাবলিকান এই নেতার ঝুলিতে এবার নোবেল পুরস্কার আসেনি।

 

শুক্রবার প্রকাশিত হিন্দুস্তান টাইমসের প্রতিবেদনে বলা হয়, ট্রাম্পের নোবেল না পাওয়ার পেছনে সবচেয়ে বড় এবং আনুষ্ঠানিক কারণটি হলো মনোনয়ন জমা দেওয়ার সময়সীমা। ২০২৫ সালের পুরস্কারের জন্য আবেদন জমা দেওয়ার শেষ তারিখ ছিল ১ ফেব্রুয়ারি। কিন্তু তার পক্ষে যত মনোনয়ন জমা পড়েছিল, সবই এই নির্ধারিত সময়ের পরে পাঠানো হয়েছিল।                                                                                                                                   

 

ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু এবং পাকিস্তান সরকার ট্রাম্পকে মনোনয়ন দিলেও তা দেরিতে জমা পড়ায় কমিটি তা বিবেচনা করতে পারেনি। এ বিষয়ে ট্রাম্পের নাম উল্লেখ না করলেও কমিটির কাজের নীতিমালা স্পষ্ট করেছেন নোবেল কমিটির চেয়ারম্যান জোর্গেন ওয়াটনে ফ্রায়ডেন্স। 

 

তিনি বলেন, “আমাদের সিদ্ধান্ত কেবল আলফ্রেড নোবেলের উইল ও কর্মের ওপর ভিত্তি করে নেওয়া হয়। এই কমিটি এমন একটি কক্ষে বসে সিদ্ধান্ত নেয়, যেখানে সব বিজয়ীর প্রতিকৃতি রয়েছে এবং সেই কক্ষটি সাহস ও সততায় পূর্ণ।” 

 

নোবেল পুরস্কার বিশেষজ্ঞরা বলছেন, কমিটি সাধারণত তাৎক্ষণিক কূটনৈতিক সাফল্যের চেয়ে দীর্ঘমেয়াদী ও বহুপাক্ষিক শান্তি প্রতিষ্ঠাকে বেশি গুরুত্ব দেয়। 
ইতিহাসবিদ ও গবেষক থিও জেনু বলেন, “অল্প সময়ের জন্য যুদ্ধবিরতি হওয়া আর সংঘাতের মূল কারণ সমাধান করার মধ্যে বড় পার্থক্য রয়েছে। ট্রাম্পের উদ্যোগগুলো দীর্ঘমেয়াদে কতটা কার্যকর হবে, তা এখনও প্রমাণিত নয়।”

 

তিনি বলেন, “আমার মনে হয় না, বিশ্বের সবচেয়ে মর্যাদাপূর্ণ পুরস্কারটি এমন কাউকে দেওয়া হবে, যিনি জলবায়ু পরিবর্তনেই বিশ্বাস করেন না। পৃথিবীর দীর্ঘমেয়াদী শান্তির জন্য এটি একটি বড় হুমকি, যা নোবেল কমিটির দর্শনের সঙ্গে পুরোপুরি সাংঘর্ষিক।”

 

ইতিহাসবিদ ও গবেষক যোগ করেন, পূর্ববর্তী বিজয়ীরা যেখানে সেতুবন্ধনকারী এবং আন্তর্জাতিক সহযোগিতার প্রতীক ছিলেন, ট্রাম্পের ক্ষেত্রে সেই বৈশিষ্ট্যগুলো অনুপস্থিত।

 

সব মিলিয়ে মনোনয়নের সময়সীমা থেকে শুরু করে দীর্ঘমেয়াদী শান্তির দর্শন এবং বৈশ্বিক ইস্যুতে বিতর্কিত অবস্থান—এসবই ট্রাম্পের নোবেল প্রাপ্তির পথে বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।

বিশ্ব বিভাগের পাঠকপ্রিয় খবর