ঢাকা, ০৮ ডিসেম্বর সোমবার, ২০২৫ || ২৩ অগ্রাহায়ণ ১৪৩২
good-food

কেন বাড়ি এসে কাঁদতেন আমির খান?

লাইফ টিভি 24

প্রকাশিত: ২১:১৬ ৭ ডিসেম্বর ২০২৫  

আমির খান, বলিউডের মিস্টার পারফেকশনিস্ট। যার ছবি মানেই বক্স অফিসে নতুন রেকর্ড। কিন্তু খ্যাতির এই শিখরে পৌঁছনোর পথটা একেবারেই সহজ ছিল না। ১৯৮৮ সালে 'কেয়ামত সে কেয়ামত তক' ছবির মাধ্যমে রাতারাতি তারকা হয়ে গেলেও, এরপর এমন এক কঠিন সময়ের মধ্যে দিয়ে তাঁকে যেতে হয়েছিল যে তিনি প্রতি সন্ধ্যায় বাড়িতে এসে কান্নায় ভেঙে পড়তেন।

সম্প্রতি হিন্দুস্তান টাইমস লিডারশিপ সামিটে আমির খান তার কেরিয়ারের সেই অন্ধকার সময়ের কথা তুলে ধরেন। তিনি জানান, 'কেয়ামত সে কেয়ামত তক' সুপারহিট হওয়ার পর তার কাছে ছবির প্রস্তাবের বন্যা বয়ে যায়। কিন্তু যে বড় এবং প্রতিষ্ঠিত পরিচালকদের সঙ্গে তিনি কাজ করতে চাইতেন, তাঁদের কেউই তাঁকে ডাকেননি।
আমিরের কথায়, "তখন আমার মনে হয়, এ-গ্রেড পরিচালকদের সঙ্গে কাজ করার আগে নিজেকে আরও বড় তারকা হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করতে হবে। তাই আমি একসঙ্গে ৮-৯টা ছবিতে চুক্তিবদ্ধ হই। কিন্তু শ্যুটিং শুরু হতেই বুঝতে পারি, কত বড় ভুল করে ফেলেছি।"

তিনি উপলব্ধি করেন, একসঙ্গে একাধিক ছবিতে কাজ করা তার পক্ষে সম্ভব নয় এবং একটি ছবির সাফল্যের জন্য সঠিক পরিচালক থাকা কতটা জরুরি।

আমির বলেন, “আমি বুঝতে পারছিলাম, চিত্রনাট্য, পরিচালক এবং প্রযোজক—এই তিনটি জিনিস ঠিক না থাকলে সেই ছবি সফল হওয়া কঠিন। আর সত্যি বলতে, আমি যে কাজগুলো করছিলাম তাতে আমি একেবারেই খুশি ছিলাম না।"

এই অসন্তুষ্টি আর কেরিয়ার নিয়ে হতাশা তাঁকে মানসিকভাবে বিপর্যস্ত করে তোলে। একে একে তাঁর ছবি ফ্লপ করতে শুরু করে। আমির বলেন, "আমার যে ৩-৪টি ছবি মুক্তি পেয়েছিল, সেগুলো ভালো ব্যবসা করেনি। আর যে ছবিগুলোর শ্যুটিং চলছিল, আমি জানতাম সেগুলো আরও খারাপ হবে। আমার মনে হচ্ছিল আমি চোরাবালিতে আটকে গিয়েছি এবং আমার কেরিয়ার শেষ হয়ে যাচ্ছে। এই সবকিছু মিলিয়ে আমি এতটাই হতাশ ছিলাম যে প্রতি সন্ধ্যায় বাড়ি ফিরে কাঁদতাম।"

এই কঠিন সময়েই তিনি সিদ্ধান্ত নেন, আর কখনও নিজের কাজের সঙ্গে আপস করবেন না। ঠিক তখনই তার কাছে মহেশ ভাটের মতো একজন সফল পরিচালকের কাছ থেকে ছবির প্রস্তাব আসে। কিন্তু চিত্রনাট্য শুনে আমিরের তা পছন্দ হয়নি। এক রাত না ঘুমিয়ে তিনি সিদ্ধান্ত নেন, নিজের নীতির সঙ্গে আপস করবেন না। পরের দিন অত্যন্ত সম্মানের সঙ্গে তিনি মহেশ ভাটকে 'না' বলে দেন।

আমির বলেন, "যখন আমার পিঠ দেওয়ালে ঠেকে গিয়েছিল, যখন কেরিয়ার শেষ হওয়ার মুখে, সেই সময়েও একটা কাজকে 'না' বলার সাহস আমার ছিল। সেই শক্তিই আমাকে পরবর্তীকালে আমার কেরিয়ারের সমস্ত কঠিন সিদ্ধান্ত নেওয়ার সাহস জুগিয়েছিল।"

সেই দিনের সেই একটি 'না'-ই আমির খানের কেরিয়ারের মোড় ঘুরিয়ে দিয়েছিল এবং তাঁকে বলিউডের বিচক্ষণ ও সফলতম তারকাদের একজনে পরিণত করেছিল।

বিনোদন বিভাগের পাঠকপ্রিয় খবর