ঢাকা, ২৯ মার্চ শুক্রবার, ২০২৪ || ১৫ চৈত্র ১৪৩০
good-food
৫৮১

ধর্ষণ-খুন, অগ্নি মামলা দ্রুত নিষ্পত্তির নির্দেশ প্রধানমন্ত্রীর

লাইফ টিভি 24

প্রকাশিত: ২০:৩১ ২৮ এপ্রিল ২০১৯  

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা অপরাধীদের কঠোর শাস্তি নিশ্চিত করতে খুন, অগ্নি সন্ত্রাস, আগুন দিয়ে পুড়িয়ে হত্যা এবং ধর্ষণের মতো মামলাগুলোর দ্রুত নিষ্পত্তির জন্য সংশ্লিষ্ট কতৃর্পক্ষকে নির্দেশ দিয়েছেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, খুন,অগ্নি সন্ত্রাস, আগুন দিয়ে পুড়িয়ে হত্যা করা, ধর্ষণ ও নানা ধরনের সামাজিক অনাচার চলছে-এগুলোর বিচার যেন খুব দ্রুত হয়, এদের কঠোর শাস্তি হয়। যাতে এর কবল থেকে দেশ ও জাতি রক্ষা পেতে পারে।

তিনি বলেন, আমরা সর্বস্তরে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করে এমন একটি উদার গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করতে চাই। এমন একটি সমাজ বিনির্মাণ করতে চাই যেখানে ধনী, দরিদ্রের কোনো বৈষম্য থাকবে না। জনগণ মৌলিক অধিকারসমূহ ভোগ করে নিজেরা নিজেদের ভাগ্যোন্নয়ন করতে পারবে।

রোববার সকালে রাজধানীর হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালে ‘জাতীয় আইনগত সহায়তা দিবস-২০১৯’ এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির ভাষণে শেখ হাসিনা একথা বলেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা চাই প্রতিটি মানুষ ন্যায় বিচার পাক এবং সেই ব্যবস্থাটা যেন চালু হয়। কারণ, আমরা চাই না, ইনডেমনিটি অর্ডিন্যান্সের কারণে আমরা যেমন বিচার না পেয়ে কেঁদেছি, আর কাউকে যেন এভাবে কাঁদতে না হয়। সবাই যেন ন্যায় বিচার পেতে পারে সেটাই আমরা চাই।

তিনি বলেন, অনেক মামলার দীর্ঘসূত্রিতা রয়েছে। অনেকে বছরের পর বছর কারাগারে আটকে রয়েছে, কেন যে আটকে রয়েছে তারা নিজেরাও জানে না। তাদের দোষটা যেমন কেউ কেউ জানে না না, তেমনি কিভাবে আইনগত সহায়তা নিতে পারে তাও জানা নেই। সেই বিষয়টা দেখার জন্য আমরা ইতোমধ্যে ব্যবস্থা নিয়েছি এবং আমার মনে হয়, আইন মন্ত্রণালয় এই ব্যাপারে যথাযথ পদক্ষেপ নেবে।

আইন, বিচার এবং সংসদ বিষয়ক মন্ত্রী আনিসুল হক অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন। আইন মন্ত্রণালয়ের আইন ও বিচার বিভাগের সচিব এএসএসএম জহুরুল হক এবং জাতীয় আইনগত সহায়তা প্রদানকারী সংস্থার পরিচালক মো. আমিনুল ইসলাম ও অনুষ্ঠানে বক্তৃতা করেন। মানিকগঞ্জ এবং কুমিল্লার দু’জন উপকারভোগীও অনুষ্ঠানে নিজস্ব অনুভূতি ব্যাক্ত করেন।

অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী ‘জাতীয় আইনগত সহায়তা দিবস-২০১৯’ উপলক্ষ্যে বেসরকারী সংস্থা, প্যানেল আইনজীবী এবং লিগ্যাল এইড- এই তিনটি ক্যাটাগরিতে বিশেষ সম্মাননা প্রাপ্তদের মাঝে পুরস্কার বিতরণ করেন।

শেখ হাসিনা বলেন, স্বাধীনতার পর মাত্র সাড়ে তিন বছরে জাতির পিতা বাংলাদেশকে স্বল্পোন্নত দেশের মর্যাদায় উন্নীত করেন। জাতিকে উপহার দিয়েছেন গণতন্ত্র, মানবাধিকার, সাম্য ও ন্যায়বিচারের এক অনন্য দলিল- বাংলাদেশের সংবিধান।

প্রধানমন্ত্রী এ সময় জাতির পিতার ভাষণের উদ্ধৃতি দিয়ে বলেন, বিচার বিভাগের উন্নয়নের জন্য তিনি বলেছিলেন-‘এই বিচার বিভাগকে নতুন করে এমন করতে হবে, যেন মানুষ এক বছর দেড় বছরের মধ্যে বিচার পায় তার বন্দোবস্ত করতেছি, আশা করি সেরকমই হবে।

আক্ষেপ করে তিনি বলেন, কিন্তু পঁচাত্তরের ১৫ আগস্ট জাতির পিতাকে নির্মমভাবে হত্যার পর থেমে যায় সবকিছু।

বঙ্গবন্ধু কন্যা বলেন, আওয়ামী লীগ সরকার ১৯৯৬-২০০১ মেয়াদে অসহায়, দরিদ্র ও সুবিধাবঞ্চিত বিচারপ্রার্থী জনগণের ন্যায়বিচার পাওয়ার পথ সুগম করার লক্ষ্যে আইনগত সহায়তা প্রদান আইন, ২০০০ প্রণয়ন করে। এরপর বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের আমলে এ কার্যক্রম মুখ থুবড়ে পড়ে এবং ২০০৯ সালে সরকার পরিচালনার দায়িত্ব পেয়ে পুনরায় সরকারি আইনি সেবা কার্যক্রমের উন্নয়নে ব্যাপক উদ্যোগ বাস্তবায়ন শুরু হয়।

সরকারপ্রধান বলেন, বিগত ১০ বছরে ৩ লাখ ৯৩ হাজার ৭৯০ জনকে সরকারি খরচে আইনগত সহায়তা প্রদান করা হয়েছে। একই সময়ে এ কার্যক্রমের আওতায় মোট ১ লাখ ৬৬৮টি মামলা নিষ্পত্তি হয়েছে। লিগ্যাল এইড অফিসারের মধ্যস্থতায় আপোষ-মীমাংসার মাধ্যমে ক্ষতিগ্রস্ত পক্ষকে সর্বমোট ১৮ কোটি ৪৩ লক্ষ ২৪ হাজার ৩২৬ টাকা আদায় করে দেয়া হয়েছে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, বর্তমানে এসিডদগ্ধ নারী-পুরুষ, বিধবা ও স্বামী পরিত্যক্তা মহিলা, প্রতিবন্ধী, পাচারকৃত নারী বা শিশু, ক্ষুদ্র জাতিসত্ত্বা, নৃ-গোষ্ঠীসহ আর্থিকভাবে অস্বচ্ছল, সহায়-সম্বলহীন এবং নানাবিধ আর্থ-সামাজিক কারণে বিচার পেতে অক্ষম যেকোনো নাগরিককে সম্পূর্ণ সরকারি অর্থ ব্যয়ে আইনগত সহায়তা প্রদান করা হচ্ছে।