ঢাকা, ১৯ এপ্রিল শুক্রবার, ২০২৪ || ৫ বৈশাখ ১৪৩১
good-food
৪৩০

ভোট শেষ, চলছে গণনা

লাইফ টিভি 24

প্রকাশিত: ১৭:৫৭ ১ ফেব্রুয়ারি ২০২০  

ব্যাপক নিরাপত্তা ও ভোটারদের স্বতস্ফুর্ত উপস্থিতিতে শান্তিপূর্ণ পরিবেশে ঢাকা উত্তর এবং দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে ভোটগ্রহণ সম্পন্ন হয়েছে। সকাল ৮টা থেকে ইলেক্ট্রনিক ভোটিং মেশিনের (ইভিএম) মাধ্যমে ভোটগ্রহণ শুরু হয়ে বিরতিহীনভাবে বিকেল ৪টা পর্যন্ত চলে।
নতুন পদ্ধতি ইভিএম-এ ভোট দেয়ার বিষয়ে নগরবাসীর মধ্যে একধরনের কৌতুহল কাজ করেছে। ভোট দিতে ভোটাররা স্বতস্ফুর্তভাবে বিভিন্ন কেন্দ্রে হাজির হয়েছেন। সকালের দিকে কেন্দ্রে ভোটার উপস্থিতি কিছুটা কম থাকলেও বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে ভোট কেন্দ্রে প্রার্থী উপস্থিতি বাড়তে থাকে।
ভোটারদের মধ্যে পুরুষ ১৫ লাখ ৪৯ হাজার ৫৬৭ জন এবং নারী ১৪ লাখ ৬০ হাজার ৭০৬ জন। উত্তরে মোট ভোটকেন্দ্রে ১ হাজার ৩১৮। মোট সাধারণ ওয়ার্ড ৫৪ এবং সংরক্ষিত ওয়ার্ড সংখ্যা ১৮টি। এছাড়া ভোটকক্ষ রয়েছে ৭৫৪টি।
ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনে ভোটার ২৪ লাখ ৫৩ হাজার ১৯৪ জন। এদের মধ্যে পুরুষ ১২ লাখ ৯৩ হাজার ৪৪১ এবং নারী ১১ লাখ ৫৯ হাজার ৭৫৩। ভোটকেন্দ্রের সংখ্যা ১ হাজার ১৫০। সাধারণ ওয়ার্ড ৭৫ এবং সংরক্ষিত ওয়ার্ড ২৫টি। এছাড়া ভোটকক্ষের সংখ্যা রয়েছে ৮৭৬টি।
ভোটারদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর প্রায় ৫০ হাজার সদস্য মোতায়েন করেছে ইসি। এদের মধ্যে ভোটকেন্দ্রের নিরাপত্তা রক্ষায় পুলিশ ও আনসার নিয়োজিত রয়েছে এবং বিজিবি, র‌্যাব ও নৌ-পুলিশ নির্বাচনী এলাকার নিরাপত্তা নিশ্চিত করে। নির্বাচন কমিশনের নির্দেশনা অনুযায়ী, বিভিন্ন বাহিনী বৃহস্পতিবার সকাল থেকেই ভোটের দায়িত্বে নিজ নিজ সদস্যদের নির্দিষ্ট জায়গায় মোতায়েন করে।
ইসির সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, দুই সিটিতে ২ হাজার ৪৬৮ কেন্দ্রের মধ্যে ১ হাজার ৫৯৭টি কেন্দ্র গুরুত্বপূর্ণ। আর সাধারণ কেন্দ্র রয়েছে ৮৭১টি। নিরাপত্তার স্বার্থে গুরুত্বপূর্ণ ভোটকেন্দ্রে ৬ জন অস্ত্রসহ পুলিশ (একজন এসআই, একজন এএসআই ও চারজন কনস্টেবল), ২ জন অস্ত্রসহ অঙ্গীভূত আনসার এবং ১০ জন লাঠিসহ অঙ্গীভূত আনসার/ভিডিপি সদস্য (চারজন নারী ও ছয়জন পুরুষ) মোতায়েন করা হয়। আর সাধারণ ভোটকেন্দ্রে অস্ত্রসহ চারজন পুলিশ (এসআই/এএসআই ১ জন ও ৩ জন কনস্টেবল), ২ জন অস্ত্রসহ অঙ্গীভূত আনসার, ১০ জন লাঠিসহ অঙ্গীভূত আনসার/ভিডিপি সদস্য মোতায়েন করা হয়। এ হিসাবে ভোটকেন্দ্রের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে নিয়োজিত ছিল আনসার ও পুলিশের ৪২ হাজার ৬৮২ জন সদস্য। আর ভোটের এলাকায় নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য ৭৫ প্লাটুন বিজিবির ২ হাজার ২৫০ জন জোয়ান নিয়োজিত ছিল।
এছাড়া পুলিশ ও এপিবিএন সমন্বয়ে ১২৪টি ভ্রাম্যমাণ ও ৪৩টি স্ট্রাইকিং টিম, র‌্যাবের ১২৯টি টিম নিয়োজিত রয়েছে। অর্থাৎ র‌্যাব, পুলিশ, এপিবিএন, স্ট্রাইকিং ও ভ্রাম্যমাণ টিম মিলিয়ে প্রায় ৪ হাজারের মতো ফোর্স মোতায়েন রয়েছে। সব মিলিয়ে এ নির্বাচনে ৫০ হাজারের মতো আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য নিয়োজিত আছেন।
ইসি সচিবালয়ের সিনিয়র সচিব মো. আলমগীর জানান, নির্বাচন কমিশন প্রয়োজনে তাৎক্ষণিক যেখানে যেমন দরকার সেই অনুযায়ী যেকোনো আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের নিয়োজিত করার নির্দেশনা দিয়ে রেখেছে।
নির্বাচনী আচরণ বিধি প্রতিপালন ও অপরাধের বিচার কাজের জন্য দুই সিটিতে ১২৯ জন নির্বাহী হাকিম এবং ৬৪ জন বিচারিক হাকিম নিয়োগ করা হয়। ঢাকা উত্তর সিটিতে ৫৪ জন এবং দক্ষিণ সিটিতে ৭৫ জন নির্বাহী হাকিম ২ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত নির্বাচনী মাঠে রয়েছেন। এছাড়া উত্তর সিটিতে ২৭ জন এবং দক্ষিণে ৩৭ জন বিচারিক হাকিম ৩ জানুয়ারি পর্যন্ত দায়িত্ব পালন করছেন।
একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পর দেশবাসী এবং বিদেশিরা ঢাকার দুই সিটি নির্বাচন গুরুত্বের সঙ্গে দেখছে । এ নির্বাচনে মোট ২২ প্রতিষ্ঠানের ১ হাজার ১৩ জন স্থানীয় পর্যবেক্ষক কাজ করছেন। এদের মধ্যে উত্তরে ৫০৩, দক্ষিণে ৪৫৭ এবং কেন্দ্রীয়ভাবে ৫৩ পর্যবেক্ষক পর্যবেক্ষণ করছেন। আর বিদেশি পর্যবেক্ষক হিসেবে কাজ করছেন মোট ৭৪জন। তাদের মধ্যে ৪৬ বিদেশি এবং ২৮ বাংলাদেশি নাগরিক রয়েছেন।
টানা ২০ দিন প্রচারণা শেষে নির্বাচনী বিধি অনুযায়ী বৃহস্পতিবার রাত ১২টায় সকল প্রকার প্রচারণা শেষ হয়েছে। ভোট উপলক্ষে রাজধানীতে ইতোমধ্যে মটরসাইকেল চলাচল বন্ধ হয়েছে। শুক্রবার রাত ১২টা থেকে সবধরনের যান চলাচল বন্ধ রয়েছে। এছাড়া সেসময় থেকে শনিবার রাত ১২টা পর্যন্ত নৌ চলাচলও বন্ধ থাকবে।

ভোটের সব খবর বিভাগের পাঠকপ্রিয় খবর