ঢাকা, ২৭ এপ্রিল শনিবার, ২০২৪ || ১৩ বৈশাখ ১৪৩১
good-food
৬৩৪

রায়হান হত্যায় গ্রেফতার এসআই আকবরের কি অবস্থা?

লাইফ টিভি 24

প্রকাশিত: ২১:২৬ ১০ নভেম্বর ২০২০  

সিলেটে পুলিশের বহিস্কৃত উপ-পরিদর্শক (এসআই) আকবর হোসেন ভূঁইয়াকে ৭ দিনের রিমান্ডে নেয়া হয়েছে। তিনি রায়হান হত্যা মামলায় প্রধান আসামি। মামলার তদন্তকারি কর্মকর্তা পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) পরিদর্শক আওলাদ হোসেন এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

 

এসআই আকবরকে মঙ্গলবার দুপুরে সিলেট চিফ মেট্রোপলিটন আদালতের বিচারক আবুল কাশেমের আদালতে হাজির করা হয়। এ হত্যাকাণ্ডের রহস্য উদঘাটনে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তার বিরুদ্ধে ৭ দিনের রিমান্ডের আবেদন জানান আওলাদ হোসেন। রিমান্ড শুনানি শেষে তার ৭ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন আদালত।

 

এর আগে পুলিশ ফাঁড়িতে রায়হানের উপর নির্যাতনের সময় এসআই আকবর হেসেন এসএমপি’র বন্দরবাজার ফাঁড়ির ইনচার্জের দায়িত্বে ছিলেন। তার নেতৃত্বেই রায়হানকে নির্যাতন করা হয় বলে এই ঘটনায় গ্রেফতার হওয়া অন্য পুলিশ সদস্যরা আদালতকে জানিয়েছেন।

 

সোমবার রাতে সিলেট জেলা পুলিশের পক্ষ থেকে রায়হান হত্যার মুল অভিযুক্ত এসআই আকবর হেসেনকে পিবিআই’র কাছে হস্থান্তর করে সিলেট জেলা পুলিশ। পিবিআই’র একটি দল পুলিশ সুপার কার্যালয় থেকে তাকে নিয়ে যায়। সন্ধ্যায় সিলেটের সীমান্তবর্তী এলাকা কানাইঘাট থেকে কঠোর নিরাপত্তা প্রহরায় সিলেট পুলিশ সুপার কার্যালয়ে নিয়ে আসা হয়। 

 

এর আগে সকাল ৯টার দিকে সিলেটের কানাইঘাট উপজেলার লক্সীপ্রসাদ ইউনিয়নের দনা সীমান্তবর্তী এলাকা থেকে এসআই আকবরকে গ্রেফতার করা হয়। ভারতে পালানোর সময় সাদা পোশাকে পুলিশ তাকে গ্রেফতার করে বলে জানান পুলিশ সুপার মোহাম্মদ ফরিদ উদ্দিন।

 

প্রসঙ্গত, গত ১০ অক্টোবর মধ্যরাতে রায়হানকে তুলে নিয়ে সিলেট মহানগরের কোতোয়ালি থানার বন্দরবাজার ফাঁড়িতে আটকে রেখে নির্যাতন করা হয় বলে অভিযোগ ওঠে। পরদিন সকালে তাকে ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেয়া হলে সেখানে তার মৃত্যু হয়। নির্যাতনের সময় এক পুলিশের মুঠোফোন থেকে পরিবারকে ফোন করে টাকা চাওয়ার অভিযোগও ওঠে। 

 

পরিবারের সদস্যরা হাসপাতালে গিয়ে রায়হানের লাশ শনাক্ত করেন। এ ঘটনার শুরুতে ছিনতাইকারী সন্দেহে নগরীর কাস্টঘর এলাকায় গণপিটুনিতে রায়হান নিহত হয়েছেন বলে প্রচার করে পুলিশ। গণপিটুনিস্থল হিসেবে যে স্থানটির কথা বলেছিল তারা, সেখানে থাকা সিসিটিভি ক্যামেরায় ওই রকম কোনো দৃশ্য দেখা যায়নি।

 

পরবর্তীতে এ ঘটনায় রায়হানের স্ত্রী তাহমিনা আক্তার পুলিশি হেফাজতে মৃত্যুর অভিযোগ এনে একটি মামলা করেন। পরে এ ঘটনায় সিলেট মহানগর পুলিশের পক্ষ থেকে গঠিত তদন্ত কমিটি অনুসন্ধান শেষে ফাঁড়িতে পুলিশি হেফাজতে মৃত্যুর বিষয়ে প্রাথমিকভাবে নিশ্চিত হয়। এ ঘটনায় ১২ অক্টোবর ফাঁড়ির ইনচার্জ এসআই আকবর হোসেনসহ চারজনকে সাময়িক বরখাস্ত এবং তিনজনকে ফাঁড়ি থেকে প্রত্যাহার করা হয়। 

 

ওই দিনই পালিয়ে যান আকবর। বরখাস্ত পুলিশ সদস্যরা হলেন বন্দরবাজার ফাঁড়ির কনস্টেবল হারুনুর রশিদ, তৌহিদ মিয়া ও টিটু চন্দ্র দাস। প্রত্যাহার হওয়া পুলিশ সদস্যরা হলেন সহকারি উপ-পরিদর্শক (এএসআই) আশেক এলাহী, এএসআই কুতুব আলী ও কনস্টেবল সজিব হোসেন। এদের মধ্যে কারাগারে রয়েছেন এএসআই আশেক এলাহী, কনস্টেবল হারুনুর রশীদ ও টিটু চন্দ্র দাস।

 

পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনকে (পিবিআই) মামলাটি তদন্তের দায়িত্ব দেয়া হয়। দায়িত্ব নেয়ার পর পরই এই মামলায় আকবর ছাড়াও আরও তিন পুলিশ সদস্যকে গ্রেফতার করে পিবিআই। এদের মধ্যে কনস্টেবল টিটু চন্দ্র দাস ও হারুন উর রশিদকে দু’দফায় আটদিন এবং সহকারি উপপরিদর্শক (এএসআই) আশেক এলাহীকে ৫ দিনের রিমান্ডে নেয়া হয়। এছাড়া রায়হানের বিরুদ্ধে ছিনতাইয়ের অভিযোগকারি সাইদুর শেখ নামের ব্যক্তিকে সন্দেহভাজন হিসেবে গ্রেফতার করে কারাগারে পাঠানো হয়।

 

রায়হান সিলেট নগরীর আখালিয়া এলাকার বাসিন্দা। তিনি সিলেটের স্টেডিয়াম মার্কেটে এক চিকিৎসকের সহকারি হিসেবে কাজ করতেন।

অপরাধ বিভাগের পাঠকপ্রিয় খবর