মঙ্গল শোভাযাত্রা: প্রতিবাদ থেকে বিশ্ব ঐতিহ্য
লাইফ টিভি 24
প্রকাশিত: ১৩:৪৭ ১৪ এপ্রিল ২০২২

পুরনো বছরকে বিদায় জানিয়ে বাংলা নতুন বছরকে স্বাগত জানাতে ও মঙ্গল কামনায় শোভাযাত্রার আয়োজন করা হয়। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা ইনস্টিটিউট থেকে মঙ্গল শোভাযাত্রার প্রধান শোভাযাত্রাটি বের হয়। এ ছাড়া দেশের বিভিন্ন জেলায় নতুন বছরকে স্বাগত জানিয়ে শোভাযাত্রা বের করা হয়। মঙ্গল শোভাযাত্রায় তুলে ধরা হয় বাঙালি সংস্কৃতির নানা দিক। ফুটিয়ে তোলা হয় চিত্র, মুখোশ আর নানা প্রতীকে।
প্রতি বছরই এই মঙ্গল শোভাযাত্রার একটি মূলভাব থাকে। সেই মূলভাব প্রতিবাদ এবং দ্রোহের। সেখানে অশুভের বিনাশ কামনা করা হয়। আহ্বান করা হয় সত্য এবং সুন্দরের। এ বছরের প্রতিপাদ্য "নির্মল করো মঙ্গল করে মলিন মর্ম মুছায়ে।"
মঙ্গল শোভাযাত্রা শুরুর কথা
বৈশাখী উদযাপনের ইতিহাস কয়েকশ বছরের পুরনো হলেও মঙ্গল শোভাযাত্রার ইতিহাস খুব বেশি পুরনো নয়। মঙ্গল শোভাযাত্রা প্রথম শুরু হয়েছিল ১৯৮৫ সালের পহেলা বৈশাখে যশোরে। তখন দেশে ছিল সামরিক শাসন। উদ্দেশ্য ছিল দেশের লোকজ সংস্কৃতি উপস্থাপনের মাধ্যমে সব মানুষকে ঐক্যবদ্ধ করা। আর সেই শোভাযাত্রায় অশুভের বিনাশ কামনা করে শুভশক্তির আগমনের প্রার্থনা করা হয়। এর উদ্যোগ নিয়েছিলেন চারুশিল্পী মাহবুব জামাল শামিম।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা ইনষ্টিটিউট থেকে পড়াশোনা শেষ করে যশোরে চলে যান তিনি। যশোরে গিয়ে চারুপিঠ নামে একটি প্রতিষ্ঠান শুরু করেছিলেন তিনি। তবে শেষ পর্যন্ত যশোরে সীমাবদ্ধ থাকেনি মঙ্গল শোভাযাত্রা।
১৯৮৯ সালে পহেলা বৈশাখে ঢাকার চারুকলা থেকেও শুরু হয় এই মঙ্গল শোভাযাত্রা। শুরুতে এর নাম ‘আনন্দ শোভাযাত্রা’ ছিল। তৎকালীন রাজনৈতিক অবস্থাকে মাথায় রেখেই এমনটা করা হয়েছিল। পরবর্তী সময়ে এটি 'মঙ্গল শোভাযাত্রা' হিসেবেই পরিচিত হয়।
সেই শোভাযাত্রার মূলভাব ছিল অগণতান্ত্রিক শক্তির বিনাশ। ওই সময় এরশাদবিরোধী আন্দোলন তুঙ্গে। সে সময় সবাইকে এক প্ল্যাটফর্মে আনার চেষ্টা করেছিল সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোট। সবার প্রচেষ্টায় তখন এটি বৃহত্তর প্রচেষ্টা হিসেবে উপস্থাপন করার চেষ্টা করা হলো। ১৯৮৫-৮৬ সালের প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থীরা প্রথম মঙ্গল শোভাযাত্রার উদ্যোক্তা। শিক্ষকরা পেছনে ছিলেন, কিন্তু সব কাজ হয়েছে শিক্ষার্থীদের উদ্যোগে। এখন পহেলা বৈশাখ বাংলা নববর্ষে মঙ্গল শোভাযাত্রা সব ধরনের মানুষের অংশগ্রহণে একটি প্রধান অনুষ্ঠানে পরিণত হয়েছে।
শোভাযাত্রায় যারা অংশ নেন
মঙ্গল শোভাযাত্রা সবার জন্য উন্মুক্ত। বিভিন্ন শ্রেণিপেশা এবং ধর্মের মানুষেরা এই শোভাযাত্রায় অংশ নেন।
অনুষঙ্গ
শোভাযাত্রা বর্ণিল রঙে রঙিন থাকে। আবহমান বাংলার বিভিন্ন লোকজ উপাদান এই শোভাযাত্রায় ফুটিয়ে তোলা হয়। শোভাযাত্রা উপলক্ষে হাতে তৈরি করা হয় বিভিন্ন মুখোশ, মূর্তি, ট্যাপা পুতুল, নকশি পাখি, বিভিন্ন প্রাণীর প্রতিকৃতি। এ শোভাযাত্রাকে শোভিত করার জন্য যে উপাদানগুলো লাগে, সেগুলো শুরু থেকেই নেওয়া হয় দেশের লোকশিল্পের নানা ধরনের খেলনা থেকে। এর বাইরে ঘোড়া, নকশি পাখা, ফুল, প্রজাপতি, মানুষ, প্রকৃতি এগুলো শোভাযাত্রায় স্থান পেতে থাকে।
১৯৮৯ এর প্রথম আনন্দ শোভাযাত্রায় ছিল পাপেট, ঘোড়া, হাতি। ১৯৯০-এর আনন্দ শোভাযাত্রায়ও নানা ধরনের শিল্পকর্মের প্রতিকৃতি স্থান পায়।১৯৯১ সালে চারুকলার শোভাযাত্রা জনপ্রিয়তার নতুন মাত্রা লাভ করে। চারুকলা ইনস্টিটিউটের শিক্ষার্থী, শিক্ষক-শিক্ষিকা ও শিল্পীদের উদ্যোগে হওয়া সেই শোভাযাত্রায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের তৎকালীন ভাইস চ্যান্সেলর, বিশিষ্ট লেখক, শিল্পীসহ সাধারণ নাগরিকরা অংশ নেয়। শোভাযাত্রায় স্থান পায় বিশালাকায় হাতি, বাঘের প্রতিকৃতির কারুকর্ম।
কৃত্রিম ঢাক আর অসংখ্য মুখোশ খচিত প্ল্যাকার্ডসহ মিছিলটি নাচে-গানে উৎফুল্ল পরিবেশ সৃষ্টি করে। দিনদিন এই শোভাযাত্রা আরো বর্ণিল হয়েছে।
শোভাযাত্রা হয় পৃষ্ঠপোষকতা ছাড়া
মঙ্গল শোভাযাত্রার আরেকটি বিশেষ দিক হচ্ছে, এটি আয়োজন করার ক্ষেত্রে কোনো বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানের সহায়তা নেওয়া হয় না। চারুকলার শিক্ষক, শিক্ষার্থী বা চিত্রশিল্পীদের অনেকে তাদের চিত্রকর্ম বিক্রি করে যে অর্থ পান, তা-ই মঙ্গল শোভাযাত্রা আয়োজনের মূল উৎস। আগে শোভাযাত্রায় ব্যবহৃত মুখোশ বা নানা উপকরণ নিলামে তোলা হতো। সেখান থেকে যে অর্থ পাওয়া যেত, তা পরবর্তী সময়ে শোভাযাত্রায় খরচ করা হতো। এখন চারুকলার শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা এক মাস আগে থেকেই এই কাজটি শুরু করেন। এক মাস আগেই শিল্পকর্ম বিক্রি শুরু হয়।
মঙ্গল শোভাযাত্রার বিশ্ব স্বীকৃতি
বাংলাদেশ সরকারের সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের আবেদনক্রমে ২০১৬ সালের ৩০ নভেম্বর বাংলাদেশের ‘মঙ্গল শোভাযাত্রা’ জাতিসংঘের সংস্কৃতিবিষয়ক সংস্থা ইউনেস্কোর সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের তালিকায় স্থান লাভ করে।
ইউনেস্কো মঙ্গল শোভাযাত্রাকে তাদের ‘রিপ্রেজেনটেটিভ লিস্ট অব ইনট্যানজিবল কালচারাল হেরিটেজ অব হিউম্যানিটি’র তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করেছে। এর ফলে পহেলা বৈশাখে মঙ্গল শোভাযাত্রায় যোগ হয়েছে এক নতুন মাত্রা। এখন এটি বিশ্ব সংস্কৃতির অংশ। বাঙ্গালী সংস্কৃতি ছড়িয়ে পড়েছে বিশ্বব্যাপী।
ইউনেস্কো মঙ্গল শোভাযাত্রাকে স্বীকৃতি দেওয়ার কারণ হিসেবে উল্লেখ করেছে, এটা শুধু একটা সম্প্রদায় বিশেষের নয়, এটা গোটা দেশের মানুষের, সারা পৃথিবীর মানুষের।
নববর্ষ ১৪২৯-এর শোভাযাত্রা
বাংলাদেশে করোনা পরিস্থিতির কারণে ২০২০ সালে মঙ্গল শোভাযাত্রার আয়োজন করা হয়নি। ২০২১ সালে হয়েছে সীমিত পরিসরে। এবার ১৪ এপ্রিল বাংলা নববর্ষ ১৪২৯-এর পয়লা বৈশাখ এর মঙ্গল শোভাযাত্রা চেনা রূপে ফিরছে বলে ভয়েস অফ আমেরিকাকে জানিয়েছেন চারুকলা অনুষদের ডিন অধ্যাপক নিসার হোসেন।
নিসার হোসেন বলেন, "আমাদের মূল আয়োজনটি টিএসসি থেকে স্মৃতি চিরন্তন এলাকা ঘুরে আবার টিএসসিতে আসবে। করোনা থেকে যে আমরা একটা ইতিবাচক পরিস্থিতির দিকে যাচ্ছি, এটিকেই আমরা এবার মূল প্রতিপাদ্য করেছি। আমরা আশা বা কামনা করছি যে ‘নির্মল করো মঙ্গল করো মলিন মর্ম মুছায়ে’। করোনাকালে যা কিছু আমাদের স্বাভাবিক জীবনযাত্রার ছন্দকে ব্যাহত করেছে, যা কিছু আমাদের জীবনকে মলিন করে দিয়েছে, সেগুলো মুছে যাক এবং আমাদের জীবন নির্মল ও মঙ্গলময় হয়ে উঠুক এই প্রত্যাশা।"
- ফল নাকি ফলের রস, কোনটা বেশি উপকারী?
- চমক রেখে বাংলাদেশ সফরের দল ঘোষণা ইংল্যান্ডের
- আইএমএফের ঋণের প্রথম কিস্তি পেলো বাংলাদেশ
- এলপিজির দাম আরও বাড়ল
- ৯ মাসের মধ্যে ডলারের দাম সর্বনিম্ন
- জিততে জিততে হেরে গেলেন হিরো আলম
- রেকর্ড দামে চেলসিতে ফার্নান্দেজ, নাখোশ বেনফিকা কোচ
- বই পড়ুন, সুস্থ থাকুন
- অমর একুশে বইমেলার পর্দা উঠল
- শাহজালালে ৫ ঘণ্টা করে ফ্লাইট বন্ধ থাকবে ২ মাস
- ভাষার মাসের প্রথম দিনে বাংলায় রায় দিলেন হাইকোর্ট
- এবার হজে খরচ বাড়ল লাখ টাকা
- শরীরচর্চার ছবি দিয়ে ‘নোংরা’ মন্তব্যের শিকার শ্রাবন্তী
- শীতে মোটরসাইকেল দুর্ঘটনা এড়াতে যা করবেন
- ফের বাংলাদেশের কোচ হলেন হাথুরুসিংহে
- যে ৫ লক্ষণে শিশুর পুষ্টি ঘাটতি বোঝা যাবে
- ভেজাল চা পাতা চেনার সহজ উপায়
- মাশরুমের উপকারিতা ও ২ সুস্বাদু রেসিপি
- ফের মুখোমুখি রিয়াল-বার্সা
- গোলাপের পাপড়ির বিছানায় পরীমণি
- অমর একুশে গ্রন্থমেলা, চলছে শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতি
- চ্যাটজিপিটি: মুদ্রণ কাজে লাগবে না লোকজন
- এরশাদকে নিয়ে মন্তব্যের জেরে সংসদে ব্যাপক হট্টগোল
- রেমিট্যান্সের পালে সুবাতাস, প্রথম ২৭ দিনে এলো ১৬৭ কোটি ডলার
- কুরআন অবমাননায় জাতীয় সংসদে ক্ষোভ
- ব্যাপক সাড়া ফেলা চ্যাটজিপিটি কী, কীভাবে কাজ করে?
- জাতীয় নির্বাচনে প্রস্তুত বিএনপি, ২০০ আসনে প্রার্থীর খসড়া তালিকা
- হিরো আলমের জন্য ভোট চাইলেন চিত্রনায়িকা মুনমুন
- এইচএসসি পরীক্ষার ফল প্রকাশ ৮ ফেব্রুয়ারি
- ভারতে রাষ্ট্রপতি ভবনের নাম`মুঘল গার্ডেন’ বদলে ‘অমৃত উদ্যান’
- যে বয়সে দৈনিক যত ঘণ্টা ঘুম প্রয়োজন
- ব্যাপক সাড়া ফেলা চ্যাটজিপিটি কী, কীভাবে কাজ করে?
- কর্মক্ষেত্রে করণীয়-বর্জনীয়
- যেভাবে বাগে আনবেন রাগ
- ভারতে রাষ্ট্রপতি ভবনের নাম`মুঘল গার্ডেন’ বদলে ‘অমৃত উদ্যান’
- এইচএসসি পরীক্ষার ফল প্রকাশ ৮ ফেব্রুয়ারি
- দেশের শিক্ষা বিস্তারে নটরডেম কলেজ মাইলফলক: স্পিকার
- অনন্য মাইলফলকে মাশরাফি
- হিরো আলমের জন্য ভোট চাইলেন চিত্রনায়িকা মুনমুন
- দাম বাড়ার পর বাজার থেকে উধাও চিনি
- কুরআন অবমাননায় জাতীয় সংসদে ক্ষোভ
- এবার হজে খরচ বাড়ল লাখ টাকা
- ১ ভরি স্বর্ণ-মোটরসাইকেল ফ্রি, তবু বিক্রি হচ্ছে না কোটি টাকার খাট
- জাতীয় নির্বাচনে প্রস্তুত বিএনপি, ২০০ আসনে প্রার্থীর খসড়া তালিকা
- শরীরচর্চার ছবি দিয়ে ‘নোংরা’ মন্তব্যের শিকার শ্রাবন্তী
- জিততে জিততে হেরে গেলেন হিরো আলম
- তিলের তেল ব্যবহার করবেন কেন?
- ভাষার মাসের প্রথম দিনে বাংলায় রায় দিলেন হাইকোর্ট
- গোলাপের পাপড়ির বিছানায় পরীমণি
- ভেজাল চা পাতা চেনার সহজ উপায়