ঢাকা, ২০ এপ্রিল শনিবার, ২০২৪ || ৭ বৈশাখ ১৪৩১
good-food
১১৭৮

একযোগে সারাদেশে বোমা হামলা : ১৪ বছরেও শেষ হয়নি বিচার

লাইফ টিভি 24

প্রকাশিত: ১২:৩২ ১৭ আগস্ট ২০১৯  

ভয়াল ১৭ আগস্ট। বাঙালির ইতিহাসে আরেকটি ভয়ংকর তারিখ। ২০০৫ সালের এই দিনে মুন্সীগঞ্জ ছাড়া দেশের ৬৩ জেলায় ৪৩৪ স্থানে একযোগে বোমা হামলা চালায় নিষিদ্ধ ঘোষিত সংগঠন জামায়াতুল মুজাহিদীন বাংলাদেশের (জেএমবি) জঙ্গিরা। 
এরই মধ্যে চৌদ্দ বছর পার হয়েছে। কিন্তু শেষ হয়নি সেই সিরিজ বোমা হামলা মামলার বিচার কাজ। 
সংশ্লিষ্টদের তথ্যমতে, সিরিজ বোমা হামলার ঘটনায় সারা দেশে মামলা হয় ১৬১টি। তদন্ত শেষে ১৪৩টি মামলার চার্জশিট দেয়া হয়। অভিযোগপত্র দেয়া ১৪৩ মামলায় আসামি করা হয় ১ হাজার ১৫৭ জনকে। এর মধ্যে বিভিন্ন সময়ে গ্রেফতার করা হয়েছে ৯৬৭ জনকে। রায় দেয়া হয়েছে ১২৮টি মামলার। বর্তমানে ৩৩টি মামলা বিচারাধীন। রায় দেয়া ঐসব মামলায় ৩০৭ জনের বিভিন্ন মেয়াদে সাজা হয়েছে। মৃত্যুদণ্ড দেয়া হয়েছে ২৭ জনকে।

সেই সিরিজ বোমা হামলার পরও বাংলাদেশে আরো বেশ কয়েকটি জঙ্গি হামলার ঘটনা ঘটে। ২০১৬ সালের ১ জুলাই দেশের ইতিহাসের সবচেয়ে বড়ো জঙ্গি হামলা হয় গুলশানের হলি আর্টিজানে। এক সপ্তাহের মাথায় ৭ জুলাই কিশোরগঞ্জের শোলাকিয়ায় ঈদের জামাত চলাকালে প্রকাশ্যে জঙ্গিরা হামলা চালায়। ২০০০ সালে দিনাজপুরের ফুলবাড়িতে বোমা হামলার মধ্য দিয়ে জেএমবির কার্যক্রম শুরু করে। 
জেএমবির কার্যক্রম যে বর্তমানে একেবারে শেষ হয়ে গেছে তা নিশ্চিত করে বলতে পারছেন না আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কর্মকর্তারা। তবে এখন এই জামায়াতুল মুজাহিদীন বাংলাদেশ ( জেএমবি) নামক নিষিদ্ধ এই সংগঠনটি আন্তর্জাতিক অঙ্গনে তাদের কার্যক্রম বিস্তারের চেষ্টা করছে।
এরইমধ্যে ভারতের পশ্চিমবঙ্গে এদের শক্তিশালী নেটওয়ার্কের তথ্য মিলেছে। গত বছরের ৭ আগস্ট ভারতের ব্যাঙ্গালুরু এলাকা থেকে জেএমবির দুর্ধর্ষ পলাতক জঙ্গি বোমারু মিজানকে গ্রেফতার করে ঐ দেশের এনআইয়ে টিম। 
চলতি বছরের ২৯ এপ্রিল গুলিস্তানে কর্তব্যরত পুলিশের ওপর বোমা হামলায় ৩ পুলিশ সদস্য আহত হন। ২৭ মে মালিবাগে পুলিশ ভ্যানে বোমা হামলায় একজন পথচারী আহত হন। ২৩ জুলাই রাতে খামারবাড়ী ও পল্টন পুলিশ বক্সে অজ্ঞাত ব্যক্তিরা দুইটি শক্তিশালী আইইডি যুক্ত বোমা ফেলে রেখে যায়। পুলিশ ঐ দুইটি বোমা নিষ্ক্রিয় করে। এসব ঘটনার সঙ্গে জঙ্গি সংগঠনের সংশ্লিষ্টতা রয়েছে বলে পুলিশ নিশ্চিত হয়েছে। 
পুলিশ ও র‌্যাবের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়, এই মুহূর্তে জঙ্গিদের বিচ্ছিন্নভাবে হামলা চালানোর মতো ক্ষমতা থাকলেও তা আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।

জঙ্গি দমনে প্রধান ভূমিকা রাখা র্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক লে.কর্নেল এমরানুল হাসান বলেন, প্রতিষ্ঠার পর থেকেই র্যাব জঙ্গি দমনে গুরুত্বপূর্ণ ও কার্যকর ভূমিকা পালন করে যাচ্ছে। র্যাবের অভিযানেই জেএমবির প্রধান বা আমির শায়খ আবদুর রহমান, সেকেন্ড ইন কমান্ড সিদ্দিকুল ইসলাম বাংলাভাইসহ শীর্ষ জঙ্গি নেতারা গ্রেফতার হয়। তাদের বিচারের মুখোমুখিও করা হয়েছে। জঙ্গিরা এখন সাইবার মাধ্যমে তাদের কার্যক্রম চালানোর চেষ্টা করছে। তবে এ ব্যাপারে র্যাবের সাইবার মনিটরিং সেল খুলে জঙ্গিদের কঠোর নজরদারির মধ্যে আনা হয়েছে। ইতিমধ্যে এ সংক্রান্ত অপরাধ করার সময় বেশ কয়েকজন জঙ্গিকে র্যাব গ্রেফতার করেছে। জঙ্গিদের কঠোর নজরদারি করতে র্যাব সদর দপ্তরসহ প্রতিটি ব্যাটালিয়ন সজাগ রয়েছে।