ঢাকা, ২৬ এপ্রিল শুক্রবার, ২০২৪ || ১৩ বৈশাখ ১৪৩১
good-food
৬০৩

‘কঠোর লকডাউনে’ বন্ধ ও খোলা কী কী?

লাইফ টিভি 24

প্রকাশিত: ১৯:৪৭ ২২ জুলাই ২০২১  

মহামারি আকারে ছড়িয়ে পড়া করোনা ভাইরাস ফের মারাত্মক পর্যায়ে। এ পরিস্থিতিতে ঈদ শেষে ২৩ জুলাই থেকে আবারও শুরু কঠোর বিধিনিষেধ বা লকডাউন। চলবে টানা আগামী ৫ আগস্ট পর্যন্ত। ১৪ দিনের এই বিধিনিষেধ আগের চেয়ে কঠোর হবে। জানিয়েছেন জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন। 

 

এ ব্যাপারে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের জারি করা প্রজ্ঞাপনে আগের বিধিনিষেধের সঙ্গে আরও কিছু নতুন শর্তও জুড়ে দেওয়া হয়। শর্তগুলো হলো –

 

১. সব সরকারি, আধা-সরকারি, স্বায়ত্তশাসিত ও বেসরকারি অফিস বন্ধ থাকবে।

 

২. সড়ক, রেল ও নৌপথে গণপরিবহন (অভ্যন্তরীণ বিমানসহ) ও সব প্রকার যন্ত্রচালিত যানবাহন চলাচল বন্ধ থাকবে।

 

৩. শপিংমল/মার্কেটসহ সব দোকানপাট বন্ধ থাকবে।

 

৪. সব পর্যটনকেন্দ্র, রিসোর্ট, কমিউনিটি সেন্টার ও বিনোদন কেন্দ্র বন্ধ থাকবে।

 

৫. সকল প্রকার শিল্প-কলকারখানা বন্ধ থাকবে।

 

৬. জনসমাবেশ হয় এ ধরনের সামাজিক (বিবাহ, বিবাহোত্তর অনুষ্ঠান, জন্মদিন, পিকনিক, পার্টি ইত্যাদি), রাজনৈতিক ও ধর্মীয় আচার-অনুষ্ঠান বন্ধ থাকবে।


৭. বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট আদালতসমূহের বিষয়ে প্রয়োজনীয় নির্দেশনা জারি করবে।


৮. ব্যাংকিং সেবা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে বাংলাদেশ ব্যাংক প্রয়োজনীয় নির্দেশনা জারি করবে।


৯. সরকারি কর্মচারীরা নিজ নিজ কর্মস্থলে অবস্থান করবেন এবং দাপ্তরিক কাজসমূহ ভার্চুয়ালি (ই-নথি, ই-টেন্ডারিং, ই-মেইল, এমএমএস, হোয়াটসঅ্যাপ-সহ অন্যান্য মাধ্যমে) কাজ সম্পাদন করবেন।


১০ আইনশৃঙ্খলা এবং জরুরি পরিষেবা, যেমন- কৃষিপণ্য ও উপকরণ (সার, বীজ, কীটনাশক, কৃষি যন্ত্রপাতি ইত্যাদি), খাদ্যশস্য ও খাদ্যদ্রব্য পরিবহন, ত্রাণ বিতরণ, স্বাস্থ্যসেবা, কোভিড-১৯ টিকা প্রদান, রাজস্ব আদায় সম্পর্কিত কার্যাবলি, বিদ্যুৎ, পানি, গ্যাস-জ্বালানি, ফায়ার সার্ভিস, টেলিফোন ও ইন্টারনেট (সরকারি-বেসরকারি), গণমাধ্যম (প্রিন্ট ও ইলেক্ট্রনিক মিডিয়া), বেসরকারি নিরাপত্তাব্যবস্থা, ডাক সেবা, ব্যাংক, ফার্মেসি ও ফার্মাসিউটিক্যালসহ অনান্য জরুরি/অত্যাবশ্যকীয় পণ্য ও সেবর সঙ্গে সংশ্লিষ্ট অফিসসমূহের কর্মচারী ও যানবাহন প্রাতিষ্ঠানিক পরিচয়পত্র প্রদর্শন সাপেক্ষে যাতায়াত করতে পারবে।


১১. বিভাগীয়, জেলা, উপজেলা পর্যায়ে হিসাব সংরক্ষণ কর্মকর্তার কার্যালয় খোলা রাখার বিষয়ে অর্থ বিভাগ প্রয়োজনীয় নির্দেশনা প্রদান করবে।


১২. জরুরি পণ্য পরিবহনে নিয়োজিত ট্রাক/লরি/কাভার্ড ভ্যান/নৌযান/পণ্যবাহী রেল/ফেরি এ নিষেধাজ্ঞার আওতাবহির্ভূত থাকবে।


১৩. বন্দরগুলো (বিমান, সমুদ্র, নৌ ও স্থল) এবং তৎসংশ্লিষ্ট অফিস এ নিষেধাজ্ঞার আওতাবহির্ভূত থাকবে।


১৪. কাঁচাবাজার এবং নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যাদি সকাল ৯টা থেকে বিকেল ৩টা পর্যন্ত স্বাস্থ্যবিধি মেনে ক্রয়-বিক্রয় করা যাবে। সংশ্লিষ্ট বাণিজ্য সংগঠন/বাজার কর্তৃপক্ষ/স্থানীয় প্রশাসন বিষয়টি নিশ্চিত করবে।


১৫. অতি জরুরি প্রয়োজন ব্যতীত (ওষুধ ও নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যাদি ক্রয়, চিকিৎসা সেবা, মৃতদেহ দাফন/সৎকার ইত্যাদি) কোনোভাবেই বাড়ির বাইরে বের হওয়া যাবে না। নির্দেশনা অমান্যকারীর বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।


১৬. টিকা কার্ড প্রদর্শন সাপেক্ষে টিকা গ্রহণের জন্য যাতায়াত করা যাবে।


১৭. খাবারের দোকান, হোটেল-রেস্তোরাঁ সকাল ৮টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত খাবার বিক্রয় (অনলাইন/টেকওয়ে) করতে পারবে।


১৮. আন্তর্জাতিক ফ্লাইট চালু থাকবে এবং বিদেশগামী যাত্রীরা তাদের আন্তর্জাতিক ভ্রমণের টিকিট/প্রমাণক প্রদর্শন করে গাড়ি ব্যবহারপূর্বক যাতায়াত করতে পারবেন।


১৯. স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণ করে মসজিদে নামাজের বিষয়ে ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয় নির্দেশনা দেবে।


২০. ‘আর্মি ইন এইড টু সিভিল পাওয়ার’ বিধানের আওতায় মাঠ পর্যায়ে কার্যকর টহল নিশ্চিত করার জন্য সশস্ত্র বাহিনী বিভাগ প্রয়োজনীয় সংখ্যক সেনা মোতায়েন করবে। জেলা ম্যাজিস্ট্রেট স্থানীয় সেনা কমান্ডারের সঙ্গে যোগাযোগ করে বিষয়টি নিশ্চিত করবেন।


২১. জেলা ম্যাজিস্ট্রেট জেলা পর্যায়ে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের নিয়ে সমন্বয় সভা করে সেনাবাহিনী, বিজিবি/কোস্টগার্ড, পুলিশ, র্যাব ও আনসার নিয়োগ ও টহলের অধিক্ষেত্র, পদ্ধতি ও সময় নির্ধারণ করবেন। সেসঙ্গে স্থানীয়ভাবে বিশেষ কোনো কার্যক্রমের প্রয়োজন হলে সে বিষয়ে পদক্ষেপ নেবেন। সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়/বিভাগ এ বিষয়ে মাঠ পর্যায়ে প্রয়োজনীয় নির্দেশনা প্রদান করবে।


২২. জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় মাঠ পর্যায়ে প্রয়োজনীয় সংখাক নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট নিয়োগের বিষয়টি নিশ্চিত করবে।


২৩. সংক্রামক রোগ (প্রতিরোধ, নিয়ন্ত্রণ ও নির্মূল) আইন, ২০১৮-এর আওতায় স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালক ব্যবস্থা নিতে জেলা প্রশাসন ও পুলিশ বাহিনীকে আইনানুগ কার্যক্রম গ্রহণের প্রয়োজনীয় ক্ষমতা প্রদান করবেন।


এছাড়াও বাংলাদেশ রেলওয়ে থেকে কিছু নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। সেখানে দেখা গেছে, জরুরি কাজে রেলওয়ের কিছু ট্রেন চলাচল ও অফিস খোলা থাকবে বলে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। 


নির্দেশনাগুলো হলো -


১. সকল রেলওয়ে কন্ট্রোল অফিস সার্বক্ষণিক খোলা থাকবে।


২. সকল কর্মকর্তা/কর্মচারী স্ব-স্ব হেড কোয়ার্টারে অবস্থান করবেন।


৩. সরকারের নির্দেশে যে কোনো সময় ট্রেন পরিচালনার প্রস্তুতি থাকতে হবে।


৪. নিরাপত্তার স্বার্থে রেলপথ এবং কোচগুলো রক্ষণাবেক্ষণের কাজ চলমান থাকবে ও রেলওয়ে স্থাপনাগুলোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা যথারীতি অব্যাহত রাখতে হবে।


৫. কন্টেইনার, খাদ্যসহ জরুরি পণ্যবাহী ট্রেন চলাচল অব্যাহত থাকবে।


৬. প্রান্তিক কৃষকের উৎপাদিত কৃষিপণ্য, সবজি ও অন্যানা জরুরি পার্সেল মালামাল পরিবহনের জন্য বিশেষ পণ্যবাহী ট্রেন চলাচল করবে।

করোনাভাইরাস বিভাগের পাঠকপ্রিয় খবর