ঢাকা, ১৫ মে বৃহস্পতিবার, ২০২৫ || ১ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২
good-food
৮২২

পোলিং এজেন্ট পাচ্ছে না বিএনপি ও ঐক্যফ্রন্ট

লাইফ টিভি 24

প্রকাশিত: ১৪:০৬ ২৯ ডিসেম্বর ২০১৮  

সংগৃহীত

সংগৃহীত

ঐক্যফ্রন্ট ও বিএনপি প্রার্থীদের অনেকেই ভোটকেন্দ্রের জন্য ‘পোলিং এজেন্ট’ পাচ্ছেন না। মামলা ও পুলিশের ধরপাকড়ের ভয়ে এজেন্ট হতে রাজি হচ্ছেন না দলীয় নেতাকর্মীরা।

শরীয়তপুরের তিনটি এবং পটুয়াখালীর একটি আসনের ১১৮ কেন্দ্রে বিএনপির প্রার্থীরা কোনো পোলিং এজেন্ট দেবেন না। এমনটাই জানা গেছে দলীয় বিশেষসূত্রে।

তবে কয়েক আসনের প্রার্থী কৌশলগত কারণে এজেন্টদের বিষয়ে কাউকে কিছু বলছেন না।


নির্বাচনী প্রচারণা শুরুর পর থেকেই বিএনপির নেতা-কর্মীরা অনেকটাই মাঠছাড়া। যাঁরা বাইরে আছেন, তাঁদের ভয় হলো, এজেন্ট হলে ভোটের পর মামলা বা গ্রেপ্তারের ঝুঁকি রয়েছে। তাই নতুন করে ঝামেলায় জড়াতে চান না তাঁরা।

ঢাকায় জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের সংবাদ সম্মেলনে ড. কামাল হোসেনের লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, ধানের শীষের প্রার্থীদের এজেন্টশূন্য করতে পরিকল্পিতভাবে গ্রেপ্তার অভিযান চালাচ্ছে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী।

গত বৃহস্পতিবার থেকে পুলিশ চিরুনি অভিযান শুরু করেছে।

এর আগে বিএনপির পক্ষ থেকে দাবি করা হয়েছে, তফসিল ঘোষণার পর থেকে তাদের দলের ১০ হাজার ৩২৯ কর্মীকে পুলিশ গ্রেপ্তার করেছে।

মামলা ও গ্রেপ্তারের ভয়ে পোলিং এজেন্ট হতে না চাওয়ার অভিযোগের ব্যাপারে জানতে চাইলে নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ের সচিব হেলালুদ্দীন আহমদ শুক্রবার সাংবাদিকদের বলেন, ‘এ ধরনের কোনো অভিযোগ আমরা পাইনি।’

পুলিশ আগে থেকেই এজেন্টদের তালিকা কীভাবে নিল প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, এজেন্টের তালিকা পুলিশের হাতে যাওয়ার কোনো কারণ নেই। নির্বাচন কর্মকর্তা এ তালিকা পুলিশকে দেননি। এটা পুলিশের কাজও নয়।

তবে ঢাকা মহানগর পুলিশ কমিশনার আছাদুজ্জামান মিয়া কাকরাইলে একটি কেন্দ্র পরিদর্শন করতে গিয়ে বলেন, প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী ও তাঁদের এজেন্টদের বিশেষ নিরাপত্তা দেয়া হবে। মানুষ যেন নির্বিঘ্নে পছন্দের প্রার্থীকে ভোট দিতে পারেন।

এদিকে চট্টগ্রামের ১৬টি আসনে বিএনপি এবং ২০-দলীয় জোটের প্রায় সব প্রার্থী নির্বাচনী এজেন্টের তালিকা তৈরি করে ফেলেছেন। কিন্তু এজেন্টদের ব্যাপারে গোপনীয়তা রক্ষা করছেন তাঁরা। এজেন্টরা ভোটকেন্দ্রে ঢোকার আগ মুহূর্ত পর্যন্ত প্রার্থীদের উদ্বেগ কাটছে না বলে একাধিক প্রার্থী জানিয়েছেন।

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরীর ব্যক্তিগত সহকারী মোহাম্মদ সেলিম বলেন, চট্টগ্রাম-১১ (পতেঙ্গা-বন্দর) আসনে নির্বাচনী এজেন্টের তালিকা তৈরি হয়েছে। কিন্তু ভোটকেন্দ্রে না যাওয়া পর্যন্ত তাঁদের উদ্বেগ কাটছে না।
চট্টগ্রাম-১৬ (বাঁশখালী) আসনে বিএনপির প্রার্থী জাফরুল ইসলাম চৌধুরী বলেন, ‘বাঁশখালীর জনমত সব সময় ধানের শীষের পক্ষে। সাধারণ মানুষ আমাদের সঙ্গে আছে। পোলিং এজেন্টও প্রস্তুত আছে। কিন্তু কৌশলগত কারণে তাঁদের নাম প্রকাশ করতে পারছি না। পুলিশ আমাদের এজেন্ট ধরে নিয়ে যাবে কি না, এই চিন্তায় অস্থির আছি।

বিএনপি নেতারা বলছেন, বরিশালের ২১ আসনের মধ্যে ১৫টিতেই বিএনপি ও ঐক্যফ্রন্টের প্রার্থীরা সংকটে আছেন। পুলিশের ‘গায়েবি’ মামলা ও গ্রেপ্তারের পর এবার আওয়ামী লীগের কর্মীরা ভোটের দিন কেন্দ্রে না যাওয়ার জন্য হুমকি দিচ্ছেন।

দলীয় সূত্র বলছে, বৃহস্পতিবার গভীর রাতে বরিশাল-১ আসনের বিএনপির প্রার্থী জহির উদ্দিন স্বপনের বাড়ি থেকে ১৯ নেতা-কর্মীকে আটক করে পুলিশ। এজেন্ট হওয়ার জন্য তাঁদের প্রস্তুত করা হচ্ছিল বলে জানা গেছে।
রাজশাহীর ৬টি আসনের মধ্যে রাজশাহী-৬ আসনে বিএনপির কোনো প্রার্থী নেই। রাজশাহী-৫ আসনে বিএনপির এজেন্ট হওয়ার জন্য কোনো কর্মী পাওয়া যাচ্ছে না বলে জানিয়েছেন ওই আসনের বিএনপির প্রার্থী নজরুল ইসলাম মণ্ডল।

ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় পুলিশি হয়রানি ও গ্রেপ্তারের ভয়ে বিএনপির পক্ষে নির্বাচনী এজেন্ট হতে চাইছেন না দলের নেতা-কর্মীরা।
 ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৩ আসনে ঐক্যফ্রন্টের প্রার্থী খালেদ হোসেন মাহবুব বলেন, নির্বাচনী এজেন্ট ঠিক করা দূরে থাক, ফরমও ঠিকমতো বিতরণ করা যাচ্ছে না।
ভোলা-২ আসনে বিএনপির প্রার্থী হাফিজ ইব্রাহিম ও ভোলা-৩ হাফিজ উদ্দিন আহমদ অবরুদ্ধ হয়ে আছেন। তাঁদের অভিযোগ, নেতা-কর্মীরা পালিয়ে বেড়াচ্ছেন।

বগুড়া-১ আসনে ধানের শীষের প্রার্থী কাজী রফিকুল ইসলাম অভিযোগ করেছেন, তাঁর এজেন্টদের মধ্যে ৮০ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। বগুড়া-২ আসনে নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্নার ২৪ জন সম্ভাব্য এজেন্টের নামে মামলা হয়েছে।

একই অবস্থা রাজধানীতে। ঢাকা-১৯ নির্বাচনী এলাকায় বিএনপি কোনো এজেন্টই দিতে পারছে না। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকার বড় অংশ ঢাকা-৮ নির্বাচনী এলাকা ও ঢাকা মহানগরের ২১ নম্বর ওয়ার্ডের অন্তর্ভুক্ত। এখানে ধানের শীষের পোলিং এজেন্ট ঠিক করতে পারেনি দলটি।
জানতে চাইলে সুশাসনের জন্য নাগরিকের (সুজন) সাধারণ সম্পাদক বদিউল আলম মজুমদার বলেন, এটা নতুন কিছু নয়। যেভাবে হয়রানি ও গ্রেপ্তার করা হচ্ছে, তাতে কারও পক্ষে ঘরে থাকা সম্ভব নয়। এটা গণতন্ত্রের জন্য সুখকর নয়।

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

ভোটের সব খবর বিভাগের পাঠকপ্রিয় খবর