ঢাকা, ২৮ মার্চ বৃহস্পতিবার, ২০২৪ || ১৪ চৈত্র ১৪৩০
good-food
৫৮৬

প্রণোদনার টাকা গরীবের পকেট কেটে আদায় করবেন না

লাইফ টিভি 24

প্রকাশিত: ০৯:২৮ ১ জুন ২০২০  

করোনাকালে বিশ্বের অনেক দেশে সরকারি ভর্তুকি দেয়া হচ্ছে। তাই প্রয়োজনে বাস সেক্টরে সরকারি ভর্তুকি দিন। তবুও গরীবের বাহন বাসের ভাড়া বাড়াবেন না। দয়া করে, বাসমালিকদের প্রণোদনার টাকা গরীবের পকেট কেটে আদায় করবেন না। করোনা সংকটকালে যাত্রীদের জিম্মি করে বাস ভাড়া বৃদ্ধি মানবাধিকার পরিপন্থী ও চরম বৈষম্যমূলক।
একই দেশে বড়লোকের বাহন বিমানের ভাড়া বাড়েনি। রেলের ভাড়াও বাড়েনি। অথচ বিমান ও রেল, এ দুটোই অর্ধেক যাত্রী বহন করছে। তাহলে বাস ভাড়া বাড়লো কেন? আর এদিকে প্রাইভেট কারের যাতায়াত খরচও বাড়েনি।
কিন্তু বেড়ে গেছে গরীবের বাহন বাসের ভাড়া। একই সেক্টরে রাষ্ট্রীয় পলিসিতে গরীব বড়লোকের জন্য দুরকম আইন হতে পারেনা। এটা সরাসরি রাষ্ট্রীয় বৈষম্য। আইনের দৃষ্টিতে সমতার নীতির পরিপন্থী।
অথচ আমাদের গরীবের প্রতিনিধি সরকারি মন্ত্রণালয়ের কোন সাহসই নাই বাসমালিকদের ভাড়া বৃদ্ধির সুপারিশ প্রত্যাখ্যান করার। মালিকদের যুক্তি, যাত্রী কম নিলে ভাড়া বাড়াতে হবে। ভালো কথা। তাহলে যাত্রী বেশী উঠালে, সরকারের উচিত যাত্রীদের স্বাস্থ্যঝুঁকির উপর সংশ্লিষ্ট বাসমালিকদের কাছ থেকে যাত্রী প্রতি ১ লক্ষ টাকা করে ক্ষতিপূরণ আদায়ের প্রজ্ঞাপন জারি করা। এখন প্রায় সবার মোবাইলেই ক্যামেরা আছে। অর্ধেকের বেশি যাত্রী উঠালেই তা ধারণ করে সোশ্যাল মিডিয়ায় দিয়ে দেয়া। এরপর সরকারের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ সংশ্লিষ্ট বাসমালিকের কাছ থেকে যাত্রী প্রতি ১ লক্ষ টাকা করে স্বাস্থ্যঝুঁকির ক্ষতিপূরণ আদায় করবে। সাথে সংশ্লিষ্ট বাস কোম্পানির পারমিটও বাতিল হবে। দুপক্ষই তাহলে সমান অধিকার পাক।
গণপরিবহন হওয়ার কথা জনগণের প্রতিষ্ঠান। অথচ আপনারা গণপরিবহনকে রাজনৈতিক ছত্রছায়া, পেশি-শক্তি, মানুষ পিষে মারা ও চাঁদাবাজির দানবে পরিণত করলেন। বেশির ভাগ বাসমালিকই প্রভাবশালী রাজনৈতিক নেতা। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারাও বেনামীতে এগুলোর মালিক। তাই তারা সবাই আইন-কানুন ও সব কিছুর ঊর্ধ্বে। তাই করোনার মহামারিতে তারা নিজেরাই বাস ভাড়া নির্ধারণ করে দেয়। আর প্রবল ক্ষমতাধর সরকার বাহাদুর শুধু বাসমালিকদের ভাড়া বৃদ্ধির সুপারিশটা বাস্তবায়ন করে।

ডক্টর তুহিন মালিক
আইনজ্ঞ ও সংবিধান বিশেষজ্ঞ

মুক্তমত বিভাগের পাঠকপ্রিয় খবর