ঢাকা, ২০ এপ্রিল শনিবার, ২০২৪ || ৭ বৈশাখ ১৪৩১
good-food
৭৪৩

প্রিয়া সাহাকে বহিষ্কার

লাইফ টিভি 24

প্রকাশিত: ২৩:০২ ২২ জুলাই ২০১৯  

প্রিয়া সাহাকে সংগঠন থেকে সাময়িক বহিষ্কার করেছে হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদ।

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের কাছে বাংলাদেশে ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের ওপর নির্যাতনের অভিযোগ জানানোর পর তাকে নিয়ে ব্যাপক সমালোচনা হয়। এরই পরিপ্রেক্ষিতে সোমবার সন্ধ্যায় সংগঠনের স্থায়ী কমিটির জরুরি বৈঠকে এই সিদ্ধান্ত হয়। এ কথা জানিয়েছেন পরিষদের সাধারণ সম্পাদক রানা দাশগুপ্ত।

 

তিনি বলেন, সংগঠনের অন্যতম সাংগঠনিক সম্পাদক প্রিয়া সাহাকে সংগঠনের শৃঙ্খলাবিরোধী কাজের জন্য সাময়িকভাবে বহিষ্কার করে সকল সাংগঠনিক দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দেয়া হয়েছে।

 

ওয়াশিংটনে ‘ধর্মীয় স্বাধীনতায় অগ্রগতিনিয়ে এক সম্মেলনে অংশ নিতে যাওয়া প্রিয়া সাহা গত ১৭ জুলাই যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের সাহায্য চেয়ে বলেছিলেন, বাংলাদেশে ধর্মীয় সংখ্যালঘুরা মৌলবাদীদের নিপীড়নের শিকার হচ্ছেন। প্রায় ৩ কোটি ৭০ লাখ হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রিস্টান নিখোঁজ হয়েছেন।

 

তার ওই কথা প্রচার হওয়ার পর দেশে তুমুল আলোচনা শুরু হয়। মিথ্যাচারের মাধ্যমে সরকারের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণের জন্য তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার কথা বলেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী, এটা রাষ্ট্রদ্রোহের শামিল বলে মন্তব্য করেন আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।

 

কিন্তু পরে সুর নরম করে ওবায়দুল কাদের বলেন, প্রিয়া সাহার ব্যাখ্যা শোনার আগে তারা কোনো ব্যবস্থায় যাচ্ছেন না।

 

রানা দাস গুপ্ত জানান, সভাপতিমণ্ডলীর অন্যতম সদস্য নিমচন্দ্র ভৌমিকের সভাপতিত্বে সংগঠনের বৈঠক হয়েছে। অসুস্থতার জন্য তিনি উপস্থিত ছিলেন না। সভায় অন্যদের মধ্যে ছিলেন কাজল দেবনাথ, মিলন দত্ত, জে এল ভৌমিক, অ্যাডভোকেট সুব্রত চৌধুরী, বাসুদেব ধর, নির্মল রোজারিও, দীপেন চ্যাটার্জি, মঞ্জু ধর, মণিন্দ্র কুমার নাথ, অ্যাডভোকেট তাপস পাল ও অ্যাডভোকেট শ্যামল রায়।

 

প্রিয়া সাহাকে নিয়ে পরিষদের সিদ্ধান্ত এবং সার্বিক বিষয়ে বুধবার সংবাদ সম্মেলন করা হবে বলে জানিয়েছেন রানা দাশগুপ্ত।

 

তিনি বলেন, প্রিয়া সাহার বক্তব্য নিয়ে সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক হিসেবে  আমি, আমাদের প্রেসিডিয়াম সদস্যরা বিভিন্নভাবে ক্রিয়া-প্রতিক্রিয়া জানিয়েছি। আসলে এর মধ্য দিয়ে সাংগঠনিকভাবে না হলেও ব্যক্তিগতভাবে আমাদের অবস্থান ব্যক্ত করার চেষ্টা করেছি। সংবাদ সম্মেলন করে আনু্ষ্ঠানিকভাবে আমাদের বক্তব্য তুলে ধরব।

রানা দাশগুপ্ত এর আগে জানিয়েছিলেন, ওই সম্মেলনে তাদের প্রতিনিধি হয়ে প্রিয়া সাহা যাননি। তিনি যা বলেছেন, তাও সাংগঠনিক বক্তব্য নয়।

 

ঢাকায় যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত আর্ল মিলার জানিয়েছিলেন, তাদের দূতাবাস বাংলাদেশ থেকে পাঁচজন প্রতিনিধি এবং দুজন রোহিঙ্গা শরণার্থীকে ওয়াশিংটনের ওই সম্মেলনে পাঠিয়েছিল।

 

শারি নামে বাংলাদেশের দলিত সম্প্রদায় নিয়ে একটি বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থার পরিচালক প্রিয়া সাহা ঢাকা থেকে প্রকাশিত ‘দলিত কণ্ঠ নামক একটি পত্রিকার প্রকাশক ও সম্পাদক।

পিরোজপুরের মেয়ে প্রিয়া সাহার স্বামী মলয় কুমার সাহা দুর্নীতি দমন কমিশনের কর্মকর্তা। তাদের দুই মেয়ে যুক্তরাষ্ট্রে পড়াশোনা করেন।

সমালোচনার মুখে নিজের বক্তব্যের ব্যাখ্যায় প্রিয়া সাহা বলেছেন, ধর্মীয় মৌলবাদের বিরুদ্ধে অভিন্ন অবস্থানে থাকা বাংলাদেশ ও যুক্তরাষ্ট্র সরকার যাতে ‘একসঙ্গে কাজ করতে পারে- সেজন্যই তিনি হোয়াইট হাউজে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের সহযোগিতা চেয়েছেন, রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে অভিযোগ করা তার উদ্দেশ্য ছিল না।