ঢাকা, ১৯ এপ্রিল শুক্রবার, ২০২৪ || ৬ বৈশাখ ১৪৩১
good-food
৩৯৪

রাতে রাস্তায় ‘ভূতের’ টহল!

লাইফ টিভি 24

প্রকাশিত: ১৩:২৮ ১৪ এপ্রিল ২০২০  

ইন্দোনেশিয়ার কেপু গ্রামে ইদানিং দেখা দিয়েছে ভূতের উৎপাত। রাতে রহস্যময় এই সাদা ভূতেরা লাফিয়ে এসে পথচারীদের চমকে দিয়ে ধীরে ধীরে মিলিয়ে যাচ্ছে চাঁদের আলোয়।

 

করোনাভাইরাসের বিস্তার ঠেকাতে মানুষকে ভয় দেখিয়ে হলেও ঘরে রাখতে রাস্তায় একদল ‘ভূতের’  টহলের এ অভিনব ব্যবস্থা নিয়েছে জাভা দ্বীপের এ গ্রামটি।

 

আসলে মানুষকেই সাদা কাপড়ে মুড়ে ভূত সাজিয়ে রাস্তায় বের করা হয়েছে। বহু বছরের পুরোনো কুসংস্কার গ্রামবাসীদের ঘরে রাখবে এমন বিশ্বাস থেকেই এ উদ্যোগ।

 

গ্রামের একটি যুবদলের প্রধান আনজার পানকানিংত্যাস বলেন, “সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখতে আমরা ভিন্ন কিছু একটা করতে চেয়ে এমন পথ বেছে নিয়েছি; ভয়ের পরিবেশ তৈরি করতে চেয়েছি। কারণ, ‘পোকং’ ভূতুড়ে এবং ভয়ংকর।”

 

ইন্দোনেশিয়ার প্রচলিত লোককাহিনী অনুযায়ী, সাদা কাপড়ে মোড়ানো ভূতকে ‘পোকং’ বলা হয়। এর মুখাবয়বও পাউডারের মতো সাদা, কোটরে ঢুকানো ঘোলাটে চোখ। মরে গেলে মানুষের আত্মা এরকম ভূতের বেশ ধরে আসে এবং বিশেষ করে পূর্ণিমার রাতে ঘুরে বেড়ায় বলেই সেখানকার লোকজনের বিশ্বাস।

 

এ বিশ্বাসকে কাজে লাগিয়েই এ মাসের শুরু দিক থেকে পুলিশের সহায়তায় কেপু গ্রামের একদল তরুণ মুখে পাউডার লাগিয়ে, চোখে কালি মেখে, সাদা কাপড় পরে ‘পোকং’ সেজে বিনাকারণে ঘরের বাইরে বেরোনো মানুষজনকে ভয় দেখিয়ে ঘরে ঢুকাচ্ছে।


যদিও প্রথম দিকে এতে কাজ হয়নি। উল্টো ভূতকেই ধাওয়া করে প্রায় ধরে ফেলার উপক্রম হয়েছিল। কিন্তু এরপর আয়োজকরা কৌশল বদলান। গ্রামের সেচ্ছ্বাসেবকরা ‘পোকং’ সেজে আচমকা উপস্থিত হয়ে লোকজনদের ভড়কে দিতে শুরু করে।

 

ইন্দোনেশিয়ার প্রেসিডেন্ট জোকো উইদোদো করোনাভাইরাস সংক্রমণ ঠেকাতে দেশে লকডাউনের পদক্ষেপ নিতে চাননি।এর পরিবর্তে তিনি দেশের মানুষকে সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখা এবং পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন থেকে স্বাস্থ্য সুরক্ষার আহ্বান জানিয়েছেন।

 

কিন্তু কেপু গ্রাম প্রধানের কথায়, সেখানকার বাসিন্দারা এখনো কোভিড-১৯ এর মতো রোগের ব্যাপারে সচেতন না। তারা স্বাভাবিক জীবন-যাপন করতে চায়। তাই তাদেরকে সামাজিক দূরত্ব বা ঘরে থাকার নির্দেশ মানানো কঠিন।

 

আর এ কারণেই এশিয়ার দেশগুলোতে করোনাভাইরাসের বিস্তার বাড়তে থাকার এই সময়ে কেপুর মতো কিছু গ্রামের কর্তৃপক্ষ নিজেরাই নিজেদের মতো করে পদক্ষেপ নিচ্ছে।

 

ইন্দোনেশিয়ায় এখন পর্যন্ত ৪ হাজার ২১৪ জন করোনাভাইরাস আক্রান্ত হয়েছে এবং মারা গেছে ৩৭৩ জন। এ সংখ্যা আরো বাড়ারই আশঙ্কা করা হচ্ছে।