ঢাকা, ১০ ডিসেম্বর বুধবার, ২০২৫ || ২৫ অগ্রাহায়ণ ১৪৩২
good-food

৮ ঘণ্টা ঘুম কতটা দরকারি?

লাইফ টিভি 24

প্রকাশিত: ১৯:৩২ ৯ ডিসেম্বর ২০২৫  

ব্যস্ত জীবনে পর্যাপ্ত ঘুম যেন স্বপ্নের মতোই। বিশেষ করে শীতের ছুটির মৌসুমে কাজ, উৎসব প্রস্তুতি ও দৈনন্দিন চাপের মাঝে অনেকেই ঠিকমতো বিশ্রাম পান না।

সাধারণ ধারণা হলো- ভালো স্বাস্থ্যের জন্য প্রতিদিন সাত থেকে নয় ঘণ্টা ঘুম জরুরি। গবেষণাও বলে, এর কম ঘুম হলে স্থূলতা, উচ্চ রক্তচাপ, হৃদ্‌রোগসহ নানা জটিলতার ঝুঁকি বাড়ে।

কিন্তু হার্ভার্ড মেডিকেল স্কুলের সহকারী অধ্যাপক ও সেন্টার ফর স্লিপ অ্যান্ড কগনিশনের পরিচালক ড. টনি কানিংহ্যামের মতে, শুধু ঘুমের ঘণ্টা নয়, ঘুমের গুণগত মান আরও গুরুত্বপূর্ণ।

ঘুমের মান নির্ধারণ করে দুটি বিষয়

শরীরে ঘুম নিয়ন্ত্রণ করে দুই প্রক্রিয়া—স্লিপ প্রেসার এবং সার্কাডিয়ান রিদম

• স্লিপ প্রেসার তৈরি হয় দীর্ঘ সময় জেগে থাকার ফলে। যত বেশি সময় আপনি জেগে থাকবেন, তত বেশি ঘুম পাবে। যেন ক্ষুধা বাড়ার মতোই স্বাভাবিক একটি প্রক্রিয়া।

• সার্কাডিয়ান রিদম হলো শরীরের অভ্যন্তরীণ ঘড়ি, যা কিনা কখন ঘুম পাবেন আর কখন সতেজ থাকবেন, তা নিয়ন্ত্রণ করে।

এই দুই প্রক্রিয়া যখন তাল মিলিয়ে কাজ করে, তখনই ঘুম হয় গভীর ও প্রশান্ত। তাই অনিয়মিত ঘুমের সময় বা হঠাৎ জেগে থাকা- সবই ঘুমের মান কমিয়ে দিতে পারে।

কখন ঘুমোতে যাবেন?

ঘুমাতে যাওয়ার সময়টি নির্ভর করবে আপনার ঘুম পাওয়ার অনুভূতির উপর, শুধু ক্লান্তির উপর নয়। বিছানায় শুয়ে ২০–৩০ মিনিটেরও বেশি সময় ধরে এপাশ ওপাশ করে যদি ঘুম না আসে, তাহলে বুঝতে হবে স্লিপ প্রেসার যথেষ্ট হয়নি। সেক্ষেত্রে হালকা, শান্ত কাজ- যেমন উষ্ণ পানি দিয়ে গোসল, মেডিটেশন বা কম আলোয় পড়া কাজে দেয়।

সবার ঘুমের চাহিদা এক নয়

ড. কানিংহ্যাম বলছেন, “সবাইকে যে আট ঘণ্টাই ঘুমাতে হবে- এমন কোনো নিয়ম নেই।” কারও কারও শারীরিক গঠন অনুযায়ী ৫–৬ ঘণ্টাই যথেষ্ট, আবার কেউ ৯–১১ ঘণ্টা না ঘুমালে সতেজ বোধ করেন না।

নিজের আদর্শ ঘুমের সময় খুঁজে নেওয়ার সহজ পদ্ধতি

যদি কয়েকদিন একটু ফাঁকা সময় পাওয়া যায়—ছুটিতে বা বাড়িতে থাকাকালীন—তাহলে চেষ্টা করুন একটি ছোট পরীক্ষা:

•     একটি নির্দিষ্ট সময়ে ঘুমাতে যান, যে সময় নিশ্চিত ঘুম পাবে।

•     অ্যালার্ম ছাড়া ঘুম ভাঙতে দিন।

•     ঘরে অন্ধকার রাখুন, ঘড়ি বা আলো যেন সময় বুঝতে না দেয়।

প্রথম কয়েকদিন আপনার শরীর ঘুমের ঘাটতি পূরণ করতে বেশি ঘুমাতে পারে। কিন্তু তিন-চার দিন পর দেখবেন, প্রতিদিন প্রায় একই সময়ে আপনার ঘুম ভাঙছে। সেটাই আপনার প্রাকৃতিক ঘুমের সময়।