ঢাকা, ০৪ নভেম্বর মঙ্গলবার, ২০২৫ || ১৯ কার্তিক ১৪৩২
good-food
৪৪

নাক ডাকা কমানোর সহজ কিছু টিপস

লাইফ টিভি 24

প্রকাশিত: ০৯:১৫ ৩ নভেম্বর ২০২৫  

দিনের ক্লান্তি দূর করার সবচেয়ে বড় উপায় হলো একটানা শান্ত ঘুম। তবে অনেকেরই ঘুমের এই প্রশান্তি নষ্ট করে দেয় এক অনিচ্ছাকৃত শব্দ, নাক ডাকা। এটি যতটা অনিচ্ছাকৃত, ততটাই বিরক্তিকর। এটি এক ধরনের শারীরিক সমস্যা। অনেকেই জানেন না, এটি শুধু আশপাশের মানুষের বিরক্তির কারণ নয়, নিজের স্বাস্থ্যের জন্যও ক্ষতিকর।

 

শ্বাস নেওয়ার সময় বাতাস যদি শ্বাসনালীর ভেতর দিয়ে সহজে না যেতে পারে, তখন গলার ভেতরের নরম টিস্যুগুলো কম্পিত হয়। এই কম্পন থেকেই তৈরি হয় নাক ডাকার শব্দ। স্লিপ ফাউন্ডেশনের মতে, এটি সাধারণ একটি সমস্যা হলেও নিয়মিত বা জোরে নাক ডাকা শরীরের ভেতরের বড় কোনো সমস্যার ইঙ্গিতও হতে পারে।

 

পুরুষদের মধ্যে নাক ডাকার প্রবণতা সাধারণত বেশি দেখা যায়। আবার গলা বা ঘাড়ে চর্বি জমে গেলে বাতাস চলাচলের পথ সরু হয়ে যায়, ফলে সমস্যা আরও বেড়ে যায়। অতিরিক্ত ওজন, নাক বন্ধ থাকা, অ্যালার্জি বা ভুল ঘুমের ভঙ্গিও নাক ডাকার কারণ হতে পারে।

 

তবে কিছু সহজ অভ্যাস পরিবর্তন করলেই এই সমস্যা অনেকটাই কমানো সম্ভব। চলুন জেনে নেয়া যাক-নাক ডাকা প্রতিরোধের সহজ ও কার্যকর কিছু উপায়।

 

পাশ ফিরে ঘুমান: চিৎ হয়ে ঘুমালে নাক ডাকার সম্ভাবনা অনেক বেড়ে যায়। কারণ এই অবস্থায় জিভ ও নরম টিস্যু গলার দিকে নেমে আসে এবং বাতাস চলাচলে বাধা সৃষ্টি করে। পাশ ফিরে শুলে এই সমস্যা অনেকটা কমে যায়। প্রয়োজনে পিঠের পিছনে ছোট বালিশ রাখতে পারেন, যাতে ঘুমের মধ্যে আবার চিৎ হয়ে না যান। এই অবস্থায় বাতাসের প্রবাহ সহজ হয় এবং নাক ডাকা অনেকটাই কমে আসে।

যাদের নাক বন্ধ বা অ্যালার্জির সমস্যা রয়েছে, তাদের নাক ডাকার প্রবণতা বেশি।

 

নাক পরিষ্কার রাখুন: যাদের নাক বন্ধ বা অ্যালার্জির সমস্যা রয়েছে, তাদের নাক ডাকার প্রবণতা বেশি। রাতে ঘুমানোর আগে লবণ পানির দ্রবণ দিয়ে নাক ধুয়ে নিতে পারেন। এতে শ্বাসনালী পরিষ্কার থাকে এবং সহজে শ্বাস নিতে সুবিধা হয়। হালকা গরম পানিতে গোসল করাও উপকারী হতে পারে। নাকের ভেতরের অংশ পরিষ্কার রাখলে বাতাস সহজে চলাচল করতে পারে, ফলে নাক ডাকা কমে।

 

ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখুন: অতিরিক্ত ওজন শুধু দেখতেও নয়, ঘুমের জন্যও সমস্যা তৈরি করে। গলার চারপাশে চর্বি জমে গেলে শ্বাসনালী সরু হয়ে যায়, ফলে বাতাস চলাচল বাধাপ্রাপ্ত হয় এবং নাক ডাকা শুরু হয়। তাই নিয়মিত ব্যায়াম ও সঠিক খাদ্যাভ্যাস বজায় রেখে ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখুন। এতে শুধু নাক ডাকা নয়, সামগ্রিকভাবে ঘুমের মানও উন্নত হবে।

 

ভারী খাবার এড়িয়ে চলুন: ঘুমানোর আগে ভারী বা অতিরিক্ত মসলাদার খাবার খেলে হজমে সমস্যা হয় এবং পাকস্থলীর অ্যাসিড গলায় উঠে এসে প্রদাহ সৃষ্টি করতে পারে। ফলে ঘুমের সময় শ্বাস নিতে কষ্ট হয় এবং নাক ডাকার প্রবণতা বেড়ে যায়। বিশেষজ্ঞরা বলেন, ঘুমানোর অন্তত দুই থেকে তিন ঘণ্টা আগে রাতের খাবার শেষ করা উচিত। দুগ্ধজাত খাবার বা সয়া দুধও অনেকের ক্ষেত্রে শ্বাসনালী বন্ধ করে দিতে পারে, তাই ঘুমানোর আগে এসব এড়িয়ে চলা ভালো।

 

বেশি করে পানি খান: শরীরে পানির ঘাটতি হলেও নাক ডাকার সমস্যা হতে পারে। তাই নিজেকে সবসময় হাইড্রেটেড রাখতে বেশি করে পানি পান করুন।  

 

ভেষজ তেল ব্যবহার করুন: প্রাকৃতিক উপায়েও নাক ডাকা কমানো সম্ভব। যেমন- পিপারমিন্ট অয়েল, টি ট্রি অয়েল বা ইউক্যালিপটাস অয়েল ব্যবহার করে দেখতে পারেন। এক বাটি গরম পানিতে কয়েক ফোঁটা তেল দিয়ে বাষ্প নিলে শ্বাসনালী পরিষ্কার হয়, যা নাক ডাকা কমাতে সাহায্য করে।

 

যদিও অনেকের কাছে নাক ডাকা তেমন গুরুত্বের বিষয় মনে হয় না, কিন্তু এটি দীর্ঘমেয়াদে ঘুমের মান নষ্ট করে এবং শারীরিক জটিলতার কারণ হতে পারে। তাই সমস্যা বারবার দেখা দিলে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত। কারণ নিয়মিত নাক ডাকা অনেক সময় ঘুমজনিত ব্যাধি বা স্লিপ অ্যাপনিয়ার ইঙ্গিতও হতে পারে।

লাইফস্টাইল বিভাগের পাঠকপ্রিয় খবর