ঢাকা, ১৫ ডিসেম্বর সোমবার, ২০২৫ || ১ পৌষ ১৪৩২
good-food
২১

সেভেন সিস্টার্সকে বিচ্ছিন্ন করে দেব: হাসনাত

লাইফ টিভি 24

প্রকাশিত: ১৭:৪৭ ১৫ ডিসেম্বর ২০২৫  

যারা বাংলাদেশের সার্বভৌমত্বকে বিশ্বাস করে না, ভোটাধিকার বিশ্বাস করে না, মানবাধিকারকে বিশ্বাস করে না সেই ফ্যাসিবাদী শক্তিকে ভারত আশ্রয় দেওয়া অব্যাহত রাখলে, ভারতে যত সেপারিস্ট (বিচ্ছিন্নতাবাদী) আছে তাদের আশ্রয় প্রশ্রয় দিয়ে ভারত থেকে সেভেন সিস্টার্সকে আমরা বিচ্ছিন্ন করে দেব।

সোমবার কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার প্রাঙ্গণে সর্বদলীয় প্রতিরোধ সমাবেশে এই কথা বলেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) মুখ্য সমন্বয়ক (দক্ষিণাঞ্চল) হাসনাত আবদুল্লাহ। ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র ওসমান হাদিকে গুলি করে হত্যা চেষ্টার প্রতিবাদে এই সর্বদলীয় প্রতিরোধ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।

তিনি বলেন, “ভারত হাসিনাকে পৃষ্ঠপোষকতা দিচ্ছে। ভারত অস্ত্র দিয়ে, ট্রেনিং নিয়ে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে দাঁড় করিয়ে দিচ্ছে। ভারত এই বাংলাদেশকে একটি ফিলিস্তিন বানাতে চায়।”

নির্বাচন কমিশনের উদ্দেশ্যে হাসনাত বলেন, “নির্বাচন কমিশন বলেছে, হাদিকে গুলি নাকি একটি বিচ্ছিন্ন ঘটনা। আমরা স্পাইনলেন নির্বাচন কমিশনকে বলতে চাই, তোমার সঙ্গেও যেন এই বিচ্ছিন্ন ঘটনা ঘটে সেটির অপেক্ষায় থাকলাম।”

আওয়ামী লীগের পা চাটাদের ভারতে পাঠিয়ে দিতে হবে

হাসনাত আবদুল্লাহ বলেন, “শিক্ষক পরিচয়ে এক শ্রেণির শিক্ষক আছে। যারা টকশো তে হত্যার বৈধতা উৎপাদন করে যাচ্ছে। যারা নাট্যকর্মী পরিচয়ে নাটক সিনেমায় হত্যার বৈধতা উৎপাদন করছে। যে পা চাটা শিক্ষক রয়েছে তাদের বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বের করে দেওয়া হবে। নাটক সিনেমা থেকে আওয়ামী লীগ-মুজিবের পা চাটাদের বের করে ভারতে পাঠিয়ে দিতে হবে।”

তিনি বলেন, “টকশো তে কিছু বুদ্ধিজীবী আছে যারা আধিপত্যবাদকে বৈধতা দিচ্ছে। টক শোতে ফ্যাসিস্টদের মানবাধিকারকে বিশ্বাস করে তারা মজলুমদের মানবাধিকারকে বিশ্বাস করে না।”

সুবিধাবাদী রাজনৈতিক দলের নেতাদের প্রতি আহ্বান জানিয়ে হাসনাত বলেন, “আপনারা ক্ষমতার লোভে অন্ধ হয়েন না। আমার বুকে গুলি লাগে, তারপর এখান থেকে চলে গিয়ে সিট নিয়ে নেগোশিয়েশন করবেন। আরপিও সংশোধন হয়েছে। এর ফলে অন্য দলের মার্কায় নির্বাচন করতে পারবে না। অনেকে নিজের দলের প্রতীক বিলুপ্ত করে দিতে চায়। এগুলো দিয়ে জাতীয় ঐক্য হবে না। এইগুলো মেকি।”

জাতীয় নাগরিক পার্টির মুখ্য সমন্বয়ক বলেন, “দেশের প্রশ্নে, সার্বভৌমত্বের প্রশ্নে ১ আগস্ট, ৩ আগস্ট এই শহীদ মিনারে ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে দাঁড়িয়েছিলাম। নতুন রাষ্ট্র নির্মাণের দাবি তুলেছিলাম সেদিনের মতো আমাদের ঐক্যবদ্ধ হতে হবে।”

গত শুক্রবার দুপুরে রাজধানীর বিজনয়নগরে কালভার্ট রোডের ডিআর টাওয়ার এলাকায় সন্ত্রাসীদের ছোড়া গুলিতে আহত হওয়ার পর হাদির শারীরিক অবস্থা সংকটাপন্ন হয়। তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে জরুরি চিকিৎসা দেওয়া হয়।

ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে জরুরি অস্ত্রোপচার শেষে হাদিকে এভারকেয়ার হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। আজ তাকে এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে সিঙ্গাপুর পাঠানো হয়েছে।

ঘটনার সময় ওসমান হাদি ব্যাটারিচালিত অটোরিকশায় ছিলেন। তার রিকশা অনুসরণ করে মোটরসাইকেলে আসা দুইজন হাদিকে গুলি করে পালিয়ে যান। তাদের ধরতে ৫০ লাখ টাকা পুরষ্কার ঘোষণা করেছেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী।

হাদিকে গুলির ঘটনায় সন্দেহভাজন হিসেবে ফয়সাল করিম দাউদের নাম আসে। ফয়সাল করিম নিষিদ্ধ ছাত্রলীগের রাজনীতিতে জড়িত ছিলেন।

২০১৯ সালের ১১ মে ঘোষিত কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের পূর্ণাঙ্গ কমিটিতে তিনি সদস্য হয়েছিলেন। সন্দেহভাজন এই ব্যক্তি হাদির নির্বাচনি প্রচারেও নিয়োজিত ছিলেন বলে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তথ্য আসে।

গণমাধ্যমে খবর এসেছে, হাদিকে গুলির ঘটনায় জড়িতরা ময়মনসিংহ সীমান্ত দিয়ে ভারতে পালিয়েছেন।