ঢাকা, ২১ ডিসেম্বর রোববার, ২০২৫ || ৭ পৌষ ১৪৩২
good-food
২২

পত্রিকা অফিসে হামলা জাতির জন্য লজ্জার: সালাহউদ্দিন আহমদ

লাইফ টিভি 24

প্রকাশিত: ২০:৫১ ২১ ডিসেম্বর ২০২৫  

সংবাদপত্রের কার্যালয়ে হামলা ও অগ্নিসংযোগের ঘটনাকে জাতির জন্য অত্যন্ত লজ্জাজনক বলে অভিহিত করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ।

রবিবার রাজধানীর হোটেল রেডিসন ব্লুতে আয়োজিত এক মতবিনিময় সভায় তিনি এসব কথা বলেন। 

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের ঐতিহাসিক স্বদেশ প্রত্যাবর্তন উপলক্ষে দেশের শীর্ষস্থানীয় সংবাদপত্রের সম্পাদক, অনলাইন নিউজ পোর্টালের সম্পাদক, রেডিও-টেলিভিশনের বার্তা প্রধান এবং গণমাধ্যম ব্যক্তিত্বদের সঙ্গে এই মতবিনিময় সভার আয়োজন করে বিএনপি।

এসময় গণমাধ্যম ব্যক্তিত্বদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন দেশকাল নিউজ ডটকমের সম্পাদক ইলিয়াছ উদ্দিন পলাশ, মানবজমিনের প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী, নয়া দিগন্তের সম্পাদক সালাহউদ্দিন মুহাম্মদ বাবর, আমার দেশের নির্বাহী সম্পাদক সৈয়দ আবদাল আহমদ, কালের কণ্ঠের সম্পাদক হাসান হাফিজ, যুগান্তরের সম্পাদক আব্দুল হাই শিকদার, ইনকিলাবের সম্পাদক এ এম এম বাহাউদ্দীন এবং বণিক বার্তার সম্পাদক দেওয়ান হানিফ মাহমুদসহ অনেকে।

এতে বক্তব্য রাখেন প্রবীণ সাংবাদিক শফিক রেহমান, ডেইলি স্টারের সম্পাদক মাহফুজ আনাম, প্রথম আলোর সম্পাদক মতিউর রহমান, গণমাধ্যম সংস্কার কমিশনের প্রধান কামাল আহমেদ প্রমুখ।

সভায় সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন, “প্রথম আলো ও ডেইলি স্টার জ্বালিয়ে দেওয়া হয়েছে, পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। এই দৃশ্য সারাবিশ্ব দেখেছে। এটি আমাদের জন্য লজ্জার। শুধু দুঃখ প্রকাশ বা ক্ষমা চেয়ে এই কলঙ্ক মোছা সম্ভব নয়।”

হামলা প্রতিরোধে সরকারের নির্লিপ্ততার সমালোচনা করে তিনি বলেন, “হামলার বিষয়ে ইন্টেলিজেন্স রিপোর্ট ছিল বলে আমরা জেনেছি। কিন্তু সেটা আমলে নেওয়া হলো না কেন? আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে জানানোর পরও তারা এক-দুই ঘণ্টা পর সাড়া দিয়েছে। কাদের হাতে আমরা এই রাষ্ট্রব্যবস্থা দেব? যারা নিরপেক্ষ নির্বাচনের দায়িত্ব নিয়েছেন, তাদের ভূমিকা আজ প্রশ্নবিদ্ধ।”

বিএনপি নেতা বলেন, “কিছুদিন ধরে গণমাধ্যমকে টার্গেট করে হামলা করতে দেখছি। আমরা চেয়েছিলাম ডেমোক্রেসি (গণতন্ত্র), কিন্তু তা কেন ‘মবক্রেসি’ (মবতন্ত্র) হয়ে যাবে? মবক্রেসির এই লালন বন্ধ করতে হবে। আমি সরকারের দুর্বলতাকেই ইঙ্গিত করছি; এসব কঠোর হস্তে দমন করতে হবে।”

গণতন্ত্রকে প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দেওয়ার ওপর জোর দিয়ে সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন, “দেশের মানুষ পূর্ণ গণতন্ত্র চায়। সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে এমনভাবে গড়ে তুলতে হবে যাতে সেগুলো গণতন্ত্রের রক্ষাকবচ হিসেবে কাজ করে। রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্ব যদি জনগণ আমাদের দেয়, তবে গণমাধ্যমের জন্য আমাদের সর্বোচ্চ সহযোগিতা থাকবে।”

সাংবাদিকদের উদ্দেশে তিনি বলেন, “আপনারা সবসময় দেশের স্বার্থে বাংলাদেশের পক্ষেই থাকবেন।”

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের প্রত্যাবর্তন প্রসঙ্গে এই জ্যেষ্ঠ নেতা  বলেন, “জনগণ আশা করছে তারেক রহমানের ফেরার মধ্য দিয়ে বাংলাদেশের গণতন্ত্রের খুঁটি শক্তিশালী হবে। ১৮ বছরের দীর্ঘ নির্বাসিত জীবন শেষে তার এই প্রত্যাবর্তনকে আমরা গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারে কাজে লাগাতে চাই।”

সভায় বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেন, “ফ্যাসিবাদী শাসনামলে আমরা অন্ধকার সময় পার করেছি। এখনো আমাদের ভাবিয়ে তোলার মতো ঘটনা ঘটছে। একজন তরুণ নেতার (ওসমান হাদি) মৃত্যু আমরা মেনে নিতে পারছি না। মতপ্রকাশের কারণে জীবন দিতে হবে—এটি কাম্য নয়।”

সভায় অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আব্দুল মঈন খান, মেজর (অব.) হাফিজ উদ্দিন আহমদ, মিডিয়া সেলের আহ্বায়ক মওদুদ আহমেদ পাভেল প্রমুখ।