ঢাকা, ২৭ অক্টোবর সোমবার, ২০২৫ || ১২ কার্তিক ১৪৩২
good-food
৩৮

বাংলাদেশ থেকে ১ লাখ কর্মী নেবে জাপান

লাইফ টিভি 24

প্রকাশিত: ১৭:২২ ২৭ অক্টোবর ২০২৫  

বাংলাদেশ থেকে ১ লাখ দক্ষ কর্মী নেবে জাপান। এ ছাড়া দেশটিতে আরও ৪ লাখের বেশি দক্ষ নার্সের প্রয়োজন হবে। দক্ষ কর্মী নিয়োগের বিষয়ে জাপানের একটি কোম্পানির সঙ্গে চুক্তি স্বাক্ষর করেছে বাংলাদেশ। রবিবার বিকালে রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় কর্মী নিয়োগ বিষয়ে জাপানের ২৩ সদস্যের একটি প্রতিনিধিদল প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন।

 

এ সময় প্রবাসী কল্যাণ ও কর্মসংস্থান উপদেষ্টা আসিফ নজরুল এবং প্রধান উপদেষ্টার এসডিজি–বিষয়ক মুখ্য সমন্বয়ক লামিয়া মোরশেদ উপস্থিত ছিলেন। প্রধান উপদেষ্টার দপ্তরের প্রেস উইং থেকে উপপ্রেস সচিব মোহাম্মদ আবুল কালাম আজাদ মজুমদার প্রেরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, ন্যাশনাল বিজনেস সাপোর্ট কম্বাইন্ড কোঅপারেটিভস (এনবিসিসি) সম্প্রতি দক্ষ বাংলাদেশি কর্মী নিয়োগের সুবিধার্থে বাংলাদেশের সঙ্গে একটি সমঝোতা স্মারক (এমওআই) স্বাক্ষর করেছে।

 

এনবিসিসি ৬৫টিরও বেশি কোম্পানির একটি জাপানি ব্যবসায়িক ফেডারেশন, যারা জনশক্তি নিয়োগ কার্যক্রমে যুক্ত।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, এনবিসিসির স্বাক্ষরিত চুক্তির লক্ষ্য হলো জাপানে বাংলাদেশিদের প্রশিক্ষণ, সার্টিফিকেশন ও কর্মসংস্থানের জন্য একটি কাঠামো প্রতিষ্ঠা করা। এই উদ্যোগের মাধ্যমে আগামী পাঁচ বছরে টেকনিক্যাল ইন্টার্ন ট্রেনিং প্রোগ্রাম (টিআইটিপি) এবং স্পেসিফাইড স্কিলড ওয়ার্কার্স (এসএসডব্লিউও) কর্মসূচির আওতায় ১ লাখের বেশি কর্মী নিয়োগ করা হবে।

 

এনবিসিসি প্রতিনিধিদলের সদস্যরা জানান, স্বাক্ষরিত সমঝোতা স্মারকের আওতায় প্রথম ধাপে আগামী বছর ২ হাজার দক্ষ কর্মী নিয়োগের বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। পরবর্তীতে ২০২৭ সালে ৬ হাজার এবং ২০২৮ সালে ১৮ হাজার কর্মী নিয়োগ করা হবে।

 

এর মধ্যে নির্মাণ খাত, সেবা খাত, এভিয়েশন, গার্মেন্টস ও কৃষি খাতে সবচেয়ে বেশি কর্মীর প্রয়োজন হবে। এ ছাড়া ভবিষ্যতে গাড়িচালক, অটোমোবাইল ও রিসাইক্লিং খাতে দক্ষ কর্মীর চাহিদা আরও বাড়বে বলেও তারা জানান।

 

বাংলাদেশ থেকে কর্মী নিয়োগের লক্ষ্যে খুলনা ও গাজীপুরের কাপাসিয়ায় দুটি প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে সম্ভাব্য কর্মীদের প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে। বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, এনবিসিসি প্রতিনিধিদলের সদস্যরা ইতিমধ্যে প্রশিক্ষণ কেন্দ্র দুটি পরিদর্শন করেছেন।

রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় কর্মী নিয়োগ বিষয়ে জাপানের একটি প্রতিনিধিদল প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন।

এদিকে, কর্মীদের প্রশিক্ষণের বিষয়ে কোনো ঘাটতি রয়েছে কি না- তা জানতে চান প্রধান উপদেষ্টা।

 

প্রতিনিধিদলটির প্রধান ও এনবিসিসি চেয়ারম্যান মিকিও কেসাগায়ামা বলেন, “আমি গত মার্চ মাসে ট্রেনিং সেন্টার দুটি পরিদর্শন করেছিলাম। এবার এসে অবাক হয়েছি—মাত্র সাত মাসের মধ্যে অনেক অগ্রগতি হয়েছে। প্রশিক্ষণ নিয়ে আমরা খুবই সন্তুষ্ট। আমরা আশাবাদী, আগামী বছরই ২ হাজার দক্ষ কর্মী নিয়োগ দিতে পারব।” তবে প্রশিক্ষকদের ভাষাগত দক্ষতায় উন্নতি করা গেলে আরও ভালো হবে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।

 

এ সময় প্রধান উপদেষ্টা বলেন, “ভাষাগত দক্ষতা অর্জনই বড় চ্যালেঞ্জ। এজন্য ভার্চুয়াল ক্লাস নেওয়া যেতে পারে। জাপান থেকে শিক্ষকরা অনলাইনে ক্লাস নেবেন। পাশাপাশি জাপান থেকে প্রশিক্ষকদের বাংলাদেশে এনে প্রশিক্ষণ দেওয়া যায় কি না, সেটিও বিবেচনা করা যেতে পারে।”

 

বাংলাদেশের নারীদের পারদর্শিতা ও কঠোর পরিশ্রমের কথা উল্লেখ করে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, “কেয়ারগিভিং সেক্টরে বাংলাদেশের নারীরা অনন্য। তারা অত্যন্ত যত্নশীল। ভাষাগত দক্ষতা ও অন্যান্য প্রশিক্ষণ পেলে বাংলাদেশের মেয়েরা জাপানের কেয়ারগিভিং সেক্টরে অনন্য ভূমিকা রাখবে।”

 

তিনি আরও বলেন, “প্রাথমিকভাবে কিছুটা কঠিন মনে হলেও বাংলাদেশের মেয়েদের একবার শিখিয়ে দিলে তারা নিজেরাই অন্যদের শেখাতে পারবে। একবার যাওয়া শুরু হলে অন্যরাও উৎসাহ পাবে।”

 

এনবিসিসি প্রতিনিধিরা জানান, আগামী কয়েক বছরে জাপানে ৪ লাখের বেশি দক্ষ নার্সের প্রয়োজন হবে। তারা বাংলাদেশ থেকে আরও বেশি নার্স নিয়োগের বিষয়টি বিবেচনা করবেন।

 

বৈঠকে উপদেষ্টা আসিফ নজরুল বলেন, “সরকার জাপানে কর্মী নিয়োগে অগ্রগতি নিয়মিত পর্যালোচনা করছে। এ বিষয়ে একটি সুনির্দিষ্ট রোডম্যাপ তৈরি করা হবে।”তিনি জানান, মন্ত্রণালয় থেকে জাপানে কর্মী নিয়োগসংক্রান্ত সমস্যা নিরসনে একটি নির্দিষ্ট সেল গঠন করা হয়েছে।

বাংলাদেশ বিভাগের পাঠকপ্রিয় খবর