ঢাকা, ১৯ এপ্রিল শুক্রবার, ২০২৪ || ৬ বৈশাখ ১৪৩১
good-food
৪৭৩

আগারওয়ালের ডাবল সেঞ্চুরিতে ব্যাকফুটে বাংলাদেশ

লাইফ টিভি 24

প্রকাশিত: ১৯:২০ ১৫ নভেম্বর ২০১৯  

ওপেনার মায়াঙ্ক আগারওয়ালের ডাবল সেঞ্চুরিতে ইন্দোরে সিরিজের প্রথম টেস্টের দ্বিতীয় দিন শেষে ভারতের বিপক্ষে ব্যাকফুটে চলে গেছে বাংলাদেশ। আগাওয়ালের ২৪৩ রানের সুবাদে দ্বিতীয় দিন শেষে ৬ উইকেটে ৪৯৩ রান করেছে ভারত। ফলে ৪ উইকেট হাতে নিয়ে ৩৪৩ রানে এগিয়ে টিম ইন্ডিয়া। প্রথম ইনিংসে বাংলাদেশ ১৫০ রানে অলআউট হয়েছিল।
ইন্দোরের হলকার স্টেডিয়ামে প্রথম দিনই বাংলাদেশকে অলআউট করে দেয় ভারত। এরপর নিজেদের ইনিংস শুরু করে দিন শেষে ১ উইকেটে ৮৬ রান করেছিল টিম ইন্ডিয়া। ওপেনার রোহিত শর্মা ৬ রানে ফিরলেও আরেক ওপেনার আগারওয়াল ৩৭ ও চেতেশ্বর পূজারা ৪৩ রানে অপরাজিত থেকে দিন শেষ করেন।
দ্বিতীয় দিনের ১০ম ও ১১তম বলে বাংলাদেশের পেসার আবু জায়েদের বলে পরপর দুটি বাউন্ডারি মেরে টেস্ট ক্যারিয়ারের ২৩তম হাফসেঞ্চুরি পূর্ণ করেন পূজারা। হাফসেঞ্চুরির পর পূজারাকে থামিয়ে দেন জায়েদ। অফস্টাম্প দিয়ে বের হয়ে যাওয়া বলে ব্যাট ছুইয়ে চতুর্থ স্লিপে দ্বাদশ খেলোয়াড় সাইফ হাসানকে ক্যাচ দেন পূজারা। ৯ চারে ৭২ বলে ৫৪ রান করেন তিনি। আগারওয়ালের সঙ্গে দ্বিতীয় উইকেটে ৯১ রান যোগ করেছিলেন পূজারা।
এরপর ক্রিজে আসেন ভারতের অধিনায়ক বিরাট কোহলি। পূজারাকে ফেরানোর পরের ওভারে তার বিপক্ষে বল করার সুযোগ পান জায়েদ। নিজের প্রথম ডেলিভারিতেই ভারতীয় অধিনায়ককে পরাস্ত করেন তিনি। কোহলির বিপক্ষে লেগ বিফোরের আবেদন করে বাংলাদেশ। কিন্তু তাতে সাড়া দেননি অনফিল্ড আম্পায়ার। তবে রিভিউ নিতে ভুল করেননি বাংলাদেশ অধিনায়ক মোমিনুল হক। ভারতের সেরা ব্যাটসম্যানকে ফেরাতে ঝুঁকি নেন তিনি। পরে সেই রিভিউতেই আউট হতে হয় কোহলিকে। ২ বল খেলে শুন্য হাতে প্যাভিলিয়নে ফিরেন তিনি।
১১৯ রানে তৃতীয় ব্যাটসম্যান হিসেবে কোহলির বিদায়ে কিছুটা চাপ অনুভব করে ভারত। কিন্তু ভারতকে সেই চাপ থেকে মুক্ত করেন আগারওয়াল ও আজিঙ্কা রাহানে। বাংলাদেশ বোলারদের বিপক্ষে নিজেদের সেরাটা দিয়ে রানের চাকা ঘুরাতে থাকেন তারা। প্রথম সেশনে আর কোনো উইকেট পড়তে দেননি আগারওয়াল-রাহানে। ফলে ওই সেশনেই লিড নিয়ে ৩ উইকেটে ১৮৮ রান তুলে মধ্যাহ্ন-বিরতিতে যায় ভারত। সেঞ্চুরির পথ তৈরি করে বিরতিতে যাওয়া আগারওয়াল ৯১ রানে অপরাজিত থাকেন।
বিরতি থেকে ফিরে টেস্ট ক্যারিয়ারের তৃতীয় সেঞ্চুরির স্বাদ নেন তিনি। নিজের অষ্টম টেস্টে তৃতীয়বারের মতো তিন অংকে পা দেন তিনি। ১৮৩ বলে সেঞ্চুরি পূর্ণ করেন ভারতের এ ডানহাতি ওপেনার।
অপরদিকে, ব্যট হাতে বেশ স্বাচ্ছেন্দ্যে ছিলেন রাহানেও। তাই তরতর করে বাড়ছিল ভারতের স্কোর। এতে দ্বিতীয় সেশনেও কোনো উইকেট হারায়নি ভারত। ফলে ৩ উইকেটে ৩০৩ রান তুলে চা-বিরতিতে যায় স্বাগতিকরা।
জমে যাওয়া আগারওয়াল-রাহানে জুটি ভাঙতে সর্বাত্মক চেষ্টা করেন বাংলাদেশ অধিনায়ক মোমিনুল। কিন্তু প্রায় ৫৪ ওভারে এ জুটিতে ভাঙন ধরাতে পারেনি কোনো বোলার। অবশেষে আবারো বাংলাদেশের ত্রানকর্তা হন জায়েদ। সেঞ্চুরির দিকে এগোতে থাকা রাহানেকে নিজের চতুর্থ শিকার বানান তিনি। ডিপ পয়েন্টে তাইজুল ইসলামকে ক্যাচ দিয়ে ৮৬ রানে আউট হওয়া রাহানে ১৭২ বলের ইনিংসে ৯টি চার মারেন। আগারওয়ালের সঙ্গে ১৯০ রানের বড় জুটি দলকে উপহার দেন তিনি।
রাহানে ফিরে যাবার পর আগারওয়ালকে দারুণ সঙ্গ দেন রবীন্দ্র জাদেজা। যথার্থ সঙ্গ পেয়ে মারমুখী হয়ে উঠেন আগারওয়াল। ওয়ানডে স্টাইলে খেলতে শুরু করেন তিনি। ধীরে ধীরে ক্যারিয়ারের দ্বিতীয় ডাবল সেঞ্চুরির দিকে এগোতে থাকেন ডানহাতি ব্যাটার। শেষ পর্যন্ত ৯৯তম ওভারে বাংলাদেশের স্পিনার মেহেদি হাসান মিরাজকে ছক্কা মেরে ডাবল সেঞ্চুরি পূর্ণ করেন তিনি।   গত মাসে নিজ মাঠে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে আগের ডাবল-সেঞ্চুরি করেন আগারওয়াল। যা ছিল ছিল তার টেস্ট ক্যারিয়ারের প্রথম সেঞ্চুরির ইনিংসও।
৩০৩ বলে ডাবল-সেঞ্চুরিতে পা দিয়ে নিজের ইনিংস বড় করতে থাকেন আগারওয়াল। প্রথমবারের মতো আড়াইশ রানের দিকে ছুটছিলেন তিনি। কিন্তু তার পথে বাঁধা হয়ে দাঁড়ান মিরাজ। যার বলে ছক্কা মেরে ডাবল-সেঞ্চুরি পূর্ণ করেছিলেন তাকে সুইপ করে মিড উইকেটে বাংলাদেশের সফল বোলার জায়েদকে ক্যাচ দিয়ে প্যাভিলিয়নে ফিরেন আগারওয়াল। ২৮ চার ও ৮ ছক্কায় ৩৩০ বলে ২৪৩ রান করেন তিনি। টেস্ট ক্যারিয়ারে এটিই তার সর্বোচ্চ ব্যক্তিগত ইনিংস। জাদেজার সঙ্গেও পঞ্চম উইকেটে শতরানের জুটি গড়েন আগারওয়াল, ১২৩ রানের।
দলীয় ৪৫৪ রানে আগারওয়াল ফিরে যাবার পর দিনের বাকী সময়ে ভারতের হাল ধরেন জাদেজা ও উইকেটরক্ষক ঋদ্ধিমান সাহা। কিন্তু দিনের খেলা শেষ হবার ১৯ বল আগে সাহাকে বিদায় দেন বাংলাদেশের আরেক পেসার এবাদত হোসেন। ১১ বলে ১২ রান করা সাহাকে বোল্ড করেন তিনি।
এরপর নাইটওয়াচম্যান হিসেবে ক্রিজে যান উমেশ যাদব। ব্যাট হাতে স্ট্রাইকে গিয়ে ভয়ংকর রুপ দেখান এ বোলার। বাংলাদেশের দুই পেসার জায়েদ ও এবাদতকে ৩টি ছক্কা মারেন তিনি। এছাড়া ১ চার ছিল তার উইলোতে। জায়েদকে ১টি করে চার-ছক্কা এবং এবাদতকে ২টি ছক্কা মারেন উমেশ। শেষ পর্যন্ত জাদেজা-উমেশ অবিচ্ছিন্ন থেকে দিন শেষ করেন। জাদেজা ১৪তম হাফসেঞ্চুরি তুলে ৬০ রানে এবং উমেশ ১০ বলে ২৫ রানে অপরাজিত আছেন। জাদেজা ৭৬ বলের ইনিংসে ৬ চার ও ২ ছক্কা হাঁকান। বাংলাদেশের জায়েদ ১০৮ রানে ৪, এবাদত-মিরাজ ১টি করে উইকেট নেন।

খেলাধুলা বিভাগের পাঠকপ্রিয় খবর