ঢাকা, ১২ অক্টোবর রোববার, ২০২৫ || ২৬ আশ্বিন ১৪৩২
good-food

ইসরায়েলি সেনারা আমাদের কপালে লেজার তাক করেছিল: শহিদুল আলম

লাইফ টিভি 24

প্রকাশিত: ০১:৫৩ ১২ অক্টোবর ২০২৫  

ইসরায়েলের কারাগারে আটক থাকার সময় বিভিন্ন অস্ত্রের মুখে ভয় দেখিয়ে মানসিক নির্যাতন করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন আলোকচিত্রী ও দৃকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক শহিদুল আলম। শনিবার বিকেলে রাজধানীর দৃক পাঠ ভবনে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে ইসরায়েলি বাহিনীর হাতে আটক হওয়া থেকে শুরু করে মুক্তি পেয়ে দেশে ফেরার অভিজ্ঞতা তুলে ধরেন তিনি।

 

ইসরায়েলি বাহিনীর জাহাজে ওঠার বর্ণনা দিয়ে তিনি বলেন, “ওরা যখন আমাদের জাহাজে নামে, আমি গুনে ৩৯ পর্যন্ত পৌঁছাই। তবে অনুমান করি, মোট ৫০ জনের মতো ছিল। পুরুষরা ছিল পুরো কমব্যাট গিয়ারে সজ্জিত, আর কিছু নারীও ছিল যারা বেসামরিক পোশাকে থাকলেও সবার হাতে ছিল অস্ত্র।”

 

তিনি আরও বলেন, “পুরুষদের হাতে ছিল বিভিন্ন ধরনের মেশিনগান। কিছু স্নাইপার রাইফেল, লেজার বুলেট ও সাইলেন্সার লাগানো অস্ত্র। মাথায় ছিল নাইট ভিশন, হেলমেটে লাগানো ক্যামেরা (সম্ভবত গো-প্রো), বাইনোকুলার এবং অজানা গোলাপি রঙের টিউব বা গ্রেনেড জাতীয় বস্তু।”

 

বন্দী করার সময়কার ভয়ংকর অভিজ্ঞতার কথা জানাতে গিয়ে শহিদুল আলম বলেন, “হঠাৎ আমি আর খশিম লক্ষ্য করি আমাদের কপালের ওপর লেজারের আলো পড়েছে। লেজারের আলো কিন্তু একদম আমাদের কপালের ওপর তাক করা। আমরা তাড়াতাড়ি মোবাইল ফেলে দিলাম।”

 

তিনি বলেন, “ভয় দেখানোর জন্য এটা করে কি না, জানি না। তবে তাদের প্রত্যেকের হাতেই বন্দুক ছিল। এভাবে জাহাজে নেমে পুরোটা দখল করে তারা আমাদের ভয় দেখায়। এরপর আমাদের একে একে ভেতরে নিয়ে যায়।”

 

“কোনো কথা বলার সুযোগ ছিল না। একেবারে বন্দুক তাক করে দাঁড়িয়ে ছিল। আমাদের কীভাবে বসতে হবে, কী করতে হবে, সব বলে দিল। তখন আমাদের কাছে পরিষ্কার হয়ে যায় যে, গাজায় যাওয়ার আর সুযোগ নেই, আমরা সম্ভবত ইসরায়েলি জেলের দিকেই যাচ্ছি।”

 

হামাস সমর্থক দাবি করে আতঙ্ক তৈরির চেষ্টার কথাও বলেন তিনি। “আমাদের ৮ অক্টোবর অপহরণ করা হয়। আমরা যখন অন্য ফ্লোটিলার কারণে ৬ তারিখে পৌঁছানোর সিদ্ধান্ত নিয়ে দেরি করছিলাম, তখন থেকেই তারা বলে যাচ্ছিল যে আমরা হামাস সমর্থনকারী।” বন্দী থাকাকালে স্যানিটেশন ও পর্যাপ্ত পানির সংকটের কথাও তুলে ধরেন তিনি।

 

“মেঝেতেও শোয়ার জায়গা ছিল না। আমি যেখান থেকে কাজ করি, সেখানেই স্লিপিং ব্যাগ পেতে থাকতাম,” বলেন তিনি। “আমাদের জন্য কোনো শৌচাগার ছিল না, পানির ব্যবস্থাও ছিল না। এতগুলো মানুষকে সামাল দেওয়ার মতো অবস্থায় জাহাজটি ছিল না।”

 

এই সময়ে জোরালো ভূমিকা রাখায় প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের প্রশংসা করেন শহিদুল আলম। তিনি বলেন, “আমাদের প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূস যেভাবে সাড়া দিয়েছেন, শক্তিশালী ও জোরালো ভূমিকা রেখেছেন, সেটাও অসাধারণ। কারণ এই বাঘা বাঘা দেশগুলোর কোনো নেতা বা নেত্রী কিন্তু কিছুই বলেননি।”

বাংলাদেশ বিভাগের পাঠকপ্রিয় খবর