ঢাকা, ২০ এপ্রিল শনিবার, ২০২৪ || ৭ বৈশাখ ১৪৩১
good-food
৯৬৫

এরশাদের সম্পত্তি কত, কে কী পাচ্ছেন?

লাইফ টিভি 24

প্রকাশিত: ২২:১৮ ১৪ জুলাই ২০১৯  

সাবেক রাষ্ট্রপতি, জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান জাতীয় সংসদে বিরোধীদলীয় নেতা হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ মারা গেছেন। এর পর অনেকের মনেই প্রশ্ন উঠছেঠিক কী পরিমাণ সম্পত্তি রেখে গেছেন তিনি। তার রেখে যাওয়া সম্পত্তি পাচ্ছেনই বা কারা?

এরশাদ একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রার্থী হওয়ার সময় নির্বাচন কমিশনে হলফনামা দেন। সেই তথ্য অনুযায়ী, নগদ, বিভিন্ন ব্যাংকে সঞ্চয়ী হিসাবে জমানো টাকা, এফডিআর ডিপিএস মিলিয়েই তার সম্পদের পরিমাণ কোটি ৯৫ লাখ ২৩ হাজার ৪৪ টাকা। এর বাইরে গাড়ি, ফ্ল্যাট, জমি, শেয়ারসহ অন্যান্য স্থাবর সম্পদের মূল্য মিলিয়ে আরও প্রায় অর্ধশত কোটি টাকার সম্পদের মালিক ছিলেন তিনি।

এরশাদ হলফনামায় স্ত্রী রওশনের হাতে নগদ টাকার পরিমাণ উল্লেখ করেন ২৬ কোটি ২০ লাখ ২৯ হাজার ৯৩৩ টাকা। এর বাইরে স্ত্রীর নামে দুটি ব্যাংক হিসাব থাকার কথা জানান তিনি। যার একটি হিসাবে ৪৭ লাখ ৯৮ হাজার ২২ টাকা এবং অপর হিসাবে ২৬ লাখ ৯১ হাজার ৬৯১ টাকা রয়েছে।

এছাড়া এরশাদ তাতে নিজের হাতে নগদের পরিমাণ ২৮ লাখ ৫৩ হাজার ৯৯৮ টাকা এবং ব্যাংকে সঞ্চয়ী হিসাবে ৩৭ লাখ ৬৯ হাজার ৪৬ লাখ টাকা থাকার কথা উল্ল্যেখ করেন। তিনি ইউনিয়ন ব্যাংকে ৫৬ লাখ ১৯ হাজার ৬৮৯ টাকা এবং ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংকে কোটি ৭৫ লাখ ৮৪ হাজার ৯৪৬ টাকার ঋণ থাকার কথাও বলেন।

পল্লীবন্ধুর এসব স্থাবর-অস্থাবর সম্পদ গত এপ্রিলে নিজের গড়া ট্রাস্টে দান করার কথা জানান। ওই সময় জাপার প্রেসিডিয়াম সদস্য এস এম ফয়সাল চিশতি বলেন, ছেলে এরিখ এরশাদ, একান্ত সচিব মেজর (অব.) খালেদ আক্তার, চাচাতো ভাই মুকুল ব্যক্তিগত কর্মকর্তা মোহাম্মদ জাহাঙ্গীরকে ট্রাস্টের ট্রাস্টি করেন এরশাদ। তবে ট্রাস্টে রাখেননি স্ত্রী রওশন এরশাদ ভাই জি এম কাদেরকে।

কিন্তু সেসময় ট্রাস্টি বোর্ডে দান করা সম্পত্তির বিবরণ দেননি এরশাদ। এর আগে জানুয়ারিতেই তিনি নিজের সম্পদের একটি অংশ পরিবারের সদস্যদের মধ্যে বিলিবণ্টন করে দেন। গুলশান- নম্বরের বাড়িটি রওশনকে দিয়ে দেন তিনি। আর বারিধারার 'প্রেসিডেন্ট পার্ক' নামের বাড়িটি ছেলে এরিখ এরশাদের নামে দিয়ে গেছেন। পালিত ছেলে আরমানকে গুলশানের একটি ফ্ল্যাট দিয়ে গেছেন। রংপুরে থাকা কোল্ড স্টোরেজ ছাড়াও সেখানকার সব সম্পত্তি ভাই জি এম কাদের এক ভাতিজাকে দিয়ে গেছেন।

রাজধানীর কাকরাইলে জাতীয় পার্টির প্রধান কার্যালয়টি এবং রংপুর অফিস দলকে দান করে গেছেন এরশাদ। তবে গুলশান-বনানী এলাকায় মার্কেটের দোকানগুলো কে বা কারা পেয়েছেন কিংবা এগুলো বণ্টন করা হয়েছে কি না, সেই বিষয়ে কোনো তথ্য মেলেনি।

জাপা সূত্র জানায়, জীবদ্দশাতেই নিজের সম্পদ বিলিবণ্টনের কাজ শেষ করেন এরশাদ। যাতে তার অবর্তমানে কোনো বিরোধ সৃষ্টি না হয়। স্থাবর-অস্থাবর সম্পদের পাশাপাশি দল কীভাবে চলবে সেটাও ঠিক করে দিয়ে গেছেন তিনি।

গত জানুয়ারিতে এরশাদ ভাই জি এম কাদেরকে উত্তরসূরি ঘোষণা করেন এবং বিরোধীদলীয় উপনেতা মনোনীত করেন। কিন্তু ২২ মার্চ জি এম কাদেরকে দলের কো-চেয়ারম্যান পদ থেকে অপসারণ করেন। পরের দিন তাকে উপনেতার পদ থেকেও সরিয়ে দেন। ধারণা করা হয়েছিল, স্ত্রী রওশন হতে যাচ্ছেন সাবেক রাষ্ট্রপতি এরশাদের উত্তরসূরি। তবে গত এপ্রিল জি এম কাদেরকে পুনর্বহাল করেন কো-চেয়ারম্যান পদে। পরের দিন ঘোষণা দেন, ছোট ভাই হবেন তার রাজনৈতিক উত্তরাধিকারী।

ঢাকার সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে (সিএমএইচ) ১০ দিন লাইফ সাপোর্টে থাকার পর রোববার সকাল পৌনে ৮টায় এরশাদকে মৃত ঘোষণা করেন চিকিৎসকরা। তার বয়স হয়েছিল ৮৯ বছর।