ঢাকা, ২৯ মার্চ শুক্রবার, ২০২৪ || ১৫ চৈত্র ১৪৩০
good-food
২৫৬

গোলাপি জ্বরে কাঁপছে কলকাতা

লাইফ টিভি 24

প্রকাশিত: ২০:৩০ ২০ নভেম্বর ২০১৯  

নৈশালোকে নেশা ধরানো টেস্ট। শুভ্র বসনে বর্ণিল ক্রিকেট বাংলাদেশের জন্য যেমন, তেমন ভারতের জন্য প্রথম অভিজ্ঞতা। এখানে তাই মুমিনুল হক ও বিরাট কোহলি একই কাতারে। শুক্রবার ক্রিকেটের নন্দনকানন ইডেনে শুরু হবে সেই রোমাঞ্চের ম্যাচ। যার শিহরণ ইতোমধ্যে স্পর্শ করেছে স্বাগতিক ও সফরকারীদের। সেই উত্তেজনা নিয়ে মঙ্গলবার দু’দল এসে পৌঁছেছে ‘সিটি অব জয়’-এ। 
সৌরভ গাঙ্গুলীর শহরে উড়ছে উত্তেজনার রেণু। দিবারাত্রির টেস্ট নিয়ে কলকাতাজুড়ে উন্মাদনা। গোলাপি রঙে সাজুগুজু করছে শহর। সবকিছুতে পিঙ্ক রঙের ছোঁয়া। গোলাপি বেলুন-মাসকট। বাংলাদেশ ও ভারতীয় দল শহরের আতিথ্য গ্রহণ করার পর গোলাপি জ্বর আরও বেড়েছে। 
এ রঙে রাঙানো কলকাতা টেস্টে বাংলাদেশ খেলতে নামবে ইন্দোরের দুঃস্বপ্ন মুছে দিয়ে। প্রথম টেস্টে ইনিংস ও ১৩০ রানে হারের যন্ত্রণা পোড়াচ্ছে মুমিনুলদের। সেটি ঈষৎ লাঘব হবে মমতার শহরে মায়াবী ক্রিকেট খেললে। কিন্তু যা খবর তাতে মনে হয়, অতিথিদের জন্য কাজটা খুবই কঠিন। বোদ্ধাদের অভিমত, ইডেনে দিবা-রাত্রির টেস্টে প্রথমে ব্যাট করা দল বেশি সমস্যায় পড়বে। বলের সিম যেন লাল বলের মতো হয়, নিশ্চিত করা হয় এটি। 
দ্বিতীয়ত, বল যেন নরম না হয়, শক্ত থাকে, এটিও নিশ্চিত করতে বলা হয়েছে ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিসিআই) তরফ থেকে। সিম ও সুইং ছাড়া অতিরিক্ত বাউন্স থাকবে গোলাপি এসজি বলে। এ বলেই রোববার ইন্দোরের হলকা স্টেডিয়ামে ফ্লাডলাইটে অনুশীলন করেছেন মোহাম্মদ শামিরা।
ভারতের এক সাবেক টেস্ট ক্রিকেটার বলেছেন, প্রথমে ব্যাট করা দলের বেশি সমস্যায় পড়ার কথা। আফগানিস্তানের কোচ এবং দক্ষিণ আফ্রিকার সাবেক অলরাউন্ডার ল্যান্স ক্লুজনার গোলাপি বলে খেলার অসুবিধার কথা জানিয়েছেন। ২০১৭ সালের ডিসেম্বরে পোর্ট এলিজাবেথে এ ধরনের বলে চারদিনের টেস্ট ম্যাচ খেলেছিল দক্ষিণ আফ্রিকা ও জিম্বাবুয়ে। ক্লুজনার তখন জিম্বাবুয়ে দলের ব্যাটিং কোচ ছিলেন। 
সেই ম্যাচের স্মৃতিচারণ করে তিনি বলেন, ব্যাট করাটা ছিল কঠিন। দেখাটা আরও বেশি। বেশিরভাগ সন্ধ্যায় শিশিরভেজা উইকেটে টিকে থাকা দুরূহ হয়ে উঠেছিল। চারদিনের টেস্ট শেষ হয়েছিল দু’দিনের কিছু বেশি সময়ে। ক্লুজনারের সংযোজন, নৈশালোকে গোলাপি বল খেলাটা ব্যাটসম্যানদের জন্য কঠিনতম কাজ। সেই কাজটাই মুশফিক, মাহমুদউল্লাদের করতে হবে ইডেনে।
এদিকে ইন্দোরে হোটেল ছাড়ার আগে পেসার আল-আমিন জানান, রোমাঞ্চ নিয়ে দ্বিতীয় টেস্টের ভেন্যুতে যাচ্ছেন তারা। তিনি বলেন, আমরা সবাই উন্মুখ। সামনে গোলাপি বলে ঐতিহাসিক টেস্ট। কলকাতায় দু’দিন সুযোগ পাব। সবকিছু মিলে অতীতে যা ঘটে গেছে, সেগুলো নিয়ে চিন্তা করলে সামনে এগোনো কঠিন। আমরা চিন্তা করছি, দলগতভাবে কীভাবে ভালো খেলা যায়, কীভাবে প্রতিরোধ গড়ে তোলা যায়। সেই চেষ্টাই থাকবে কলকাতা টেস্টে।
টাইগার পেসার যোগ করেন, ভালো জায়গায় বল করতে হবে। হ্যাঁ, একটু ব্যবধান আছে। লাল বলের চেয়ে সিম একটু শক্ত। শাইন করা যায় খুব সহজে। সেক্ষেত্রে সবকিছু মিলিয়ে ভালো হবে মনে হয়। বলটা খুব ভালো। এখন বল ভালো, সবকিছু ভালো, কন্ডিশনও যদি ভালো থাকে, আমরা যারা পেসার খেলব তাদের দায়িত্ব কিন্তু অনেক। কারণ, ভালো জায়গায় বল করতে হবে। না হলে ওদের সমস্যায় ফেলা যাবে না। ওদের সব ব্যাটসম্যানই টপ ক্লাস ব্যাটসম্যান। র‌্যাংকিংয়ে সেরা দশে ওদের দু-তিনজন ব্যাটসম্যান আছে। গোলাপি বলে বোলারদের জন্য তাই একটা পরীক্ষা বলে আমার মনে হয়।
নতুন বলের সুইং বোঝার দিকেই মনোযোগ বাংলাদেশের। কলকাতা গিয়ে পানিতে বল ভিজিয়ে অনুশীলন করতে পারে সফরকারীরা। আল-আমিন বলেন, আমরা যারা পেস বোলার আছি, এখনও বল ভিজিয়ে অনুশীলন করিনি। নতুন বলে কীভাবে সুইং পাওয়া যায় ও বলটা ব্যবহার করা যায়, সেগুলো নিয়ে কাজ করছি। হয়তো কলকাতায় গিয়ে যদি টিম ম্যানেজমেন্টের পরিকল্পনা থাকে বা আমরাও দেখি সন্ধ্যার পর অনুশীলনে বল ভিজে যায়, তখন আমরা ওভাবে মানিয়ে নেয়ার চেষ্টা করব।

খেলাধুলা বিভাগের পাঠকপ্রিয় খবর