ঢাকা, ০২ মে শুক্রবার, ২০২৫ || ১৯ বৈশাখ ১৪৩২
good-food
৯৩২

জাতীয় উন্নয়নে জাতীয় পার্টির ভূমিকা প্রশ্নবিদ্ধ

লাইফ টিভি 24

প্রকাশিত: ১৯:৪১ ১০ সেপ্টেম্বর ২০১৯  

জাতীয় পার্টি (জাপা) প্রয়াত সাবেক প্রেসিডেন্ট হুসেইন মোহাম্মদ এরশাদের নামের সাথে অঙ্গাঙ্গিভাবে জড়িত। হোসাইন মোহাম্মদ এরশাদ ক্ষমতা গ্রহণের পরবর্তীতে জাতীয় পার্টি গঠন করে দেশবাসীর কাছে চমক সৃষ্টি করেছিলেন। হুসেইন মুহাম্মদ এরশাদকে জাতীয় পার্টির একমাত্র কর্ণধার হিসেবে বিবেচনা করা হয়ে থাকে।

তিনি জীবিত অবস্থায় বলেছিলেন তিনি হচ্ছেন জাতীয় পার্টি (জাপা) একমাত্র মালিক, আজীবনের চেয়ারম্যান। সেই পার্টি নিয়ে শুরু হয়েছে স্বার্থ,ক্ষমতার দ্বন্দ্ব একদিকে তার আপন ছোট ভাই জিএম কাদের, অন্যদিকে স্ত্রী ও দীর্ঘদিনের রাজনৈতিক সঙ্গী রওশন এরশাদ উভয় দলের চেয়ারম্যান পদের দাবিদার। উভয়ের সাথে আছে দলের কেন্দ্রীয় পর্যায়ের নেতা, নেতৃবৃন্দ।

এরশাদ প্রেসিডেন্ট থাকাকালে দেশের উন্নয়ন ও অগ্রগতিতে যথেষ্ট ভূমিকা রেখেছেন। অনেক রাজনৈতিক বোদ্ধারা বলে থাকেন, এরশাদের শাসন ব্যবস্থা ভালো ছিল শুধুমাত্র যদি তিনি জোর করে ক্ষমতায় থাকার সিদ্ধান্তটি গ্রহণ না করতেন, তাহলে এরশাদ ও তার দলের অবস্থা এত ভয়ঙ্কর হতো না।

তাকে স্বৈরাচার খেতাব পেতে হতো না, যাই হোক, যেমন ভাবেই হোক না কেন এরশাদের জাতীয় পার্টি এখন সংসদের বিরোধী দল। সেই হিসেবে এদেশের মানুষের জন্য অনেক কিছুই করতে পারে দলটি কিন্তু জাতীয় পার্টি আছে জাতির সেবক ও উন্নয়নের পরিবর্তে নিজেদের পদ-পদবীর অস্তিত্ব রক্ষা, ভাঙ্গন ও গড়নের মহড়া নিয়ে।

এরশাদের মৃত্যুর দুই মাস পার না হতে হতেই শুরু হয়েছে ভাঙ্গনের বাস্তব মহড়া, দুই পক্ষই চাইছে দলের প্রধান পদ। সাধারণ মানুষের অধিকার নিয়ে তেমন কোনো কর্মসূচি দৃষ্টিগোচর হয় না। এক পক্ষকে দেখা যাচ্ছে ঝাড়ু হাতে অন্য পক্ষের বিরুদ্ধে রাজপথে অবস্থান নিতে।

এরশাদের দলের প্রভাবশালী নেতারা মিডিয়ার সামনে অবলীলায় বলে যাচ্ছেন দলে কোন ভাঙ্গন নেই কিন্তু বাস্তবতা দেশের মানুষ দেখছে, ভবিষ্যতে কী হবে সেদিকে তাকিয়ে রয়েছে।

দল ভেঙে দুই ভাগে বিভক্ত হবে। নাকি অসংখ্য দলে বিভক্ত হয়ে ইতিহাসে বিলীন হয়ে যাবে! অনেকের কথাবাত্রা আকার-ইঙ্গিতে মনে হচ্ছে বিরোধীদলের ভূমিকার নামে নিজেদের সুবিধা আদায়ে মত্ত থাকবে!

জাতীয় পার্টি তার কান্ডারী কে খুঁজে পাচ্ছেনা! কে দিবে নেতৃত্ব, কে হবে জাতীয় পার্টির এরশাদের পরবর্তী নেতা? নাকি আবার সংসদে এক ধরনের মালিশ বিরোধীদল হিসেবে কর্মকাণ্ড পরিচালিত করবে। জাতীয় উন্নয়ন ও অগ্রগতিতে পূর্বে জাতীয় পার্টির একটি ভূমিকা ছিল তা বর্তমানে প্রায় মলিন। জাতীয় পার্টি নিজেদের স্বার্থ সিদ্ধি রক্ষার পার্টি হয়ে দাঁড়িয়েছে।

অনেক রাজনৈতিক বিশ্লেষক মনে করেন, সরকারের সর্বোচ্চ মহল হস্তক্ষেপ করলেই জাতীয় পার্টির এই সমস্যা থেকে উত্তরণ ঘটানো যাবে। তাছাড়া জাতীয় পার্টির বর্তমান নিজস্ব সাংগঠনিক ও পারস্পরিক অবস্থা মজবুত ও শক্তিশালী নয়। হুসেইন মোহাম্মদ এরশাদ জীবিত থাকা অবস্থায় জাতীয় পার্টির মধ্যে অভ্যন্তরীণ কোন্দল থাকলেও এরশাদের সিদ্ধান্ত ছিল একক, সে ছিল একক ক্ষমতার অধিকারী কিন্তু এরশাদ মৃত্যুর সাথে সাথেই জাতীয় পার্টির রূপের পরিবর্তন এসেছে!

এদেশের জনতা চেয়ে আছে, জাতীয় পার্টি ঐক্যের দিকে অগ্রসর হবে। নাকি কাঙ্খিত ভাঙ্গনে অস্তিত্ব রক্ষায় কঠিন হয়ে দাঁড়াবে!

লেখক- মো: সবুর মিয়া, বেসরকারি চাকরিজীবী।